10.5 C
Toronto
শুক্রবার, এপ্রিল ২৬, ২০২৪

যে গ্রামে বয়স ৫০ হলেই অন্ধ হয়ে যান পুরুষেরা

যে গ্রামে বয়স ৫০ হলেই অন্ধ হয়ে যান পুরুষেরা - the Bengali Times
ছবি সংগৃহীত

সবুজ-শ্যামলে ঘেরা এক পাহাড়ি গ্রাম প্যারান। অথচ প্রকৃতির সেই সৌন্দর্য উপভোগ করার অধিকার নেই তাদের! কারণ বয়স ৫০ হলেই পুরুষেরা হয়ে যান অন্ধ! দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরুর সেই পাহাড়ি গ্রামে এটাই নাকি নিয়তি।

ভারতীয় গণমাধ্যম সংবাদ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে জানা গেছে, প্যারান গ্রামে ৩৬০ জন মানুষের বসবাস। তাদের ৭৫ শতাংশই অন্ধ। এখানকার ৫০ বা তার বেশি বয়সী ৬০ জন পুরুষই অন্ধত্বের শিকার।

- Advertisement -

প্রত্যন্ত সেই পাহাড়ি গ্রামে প্রায় সবারই বয়স ৫০ হওয়ার আগেই দৃষ্টিশক্তি হানান। পরে ধীরে ধীরে স্থায়ী অন্ধত্বের শিকার হন। এ কারণে প্যারান গ্রামটিকে ‘অন্ধদের গ্রাম’ বা ‘দৃষ্টিহীনদের গ্রাম’ বলে ডাকে পেরুর লোকজন। কিন্তু এমন কেন? বেছে বেছে একটি গ্রামের পুরুষরা অন্ধ হয়ে যাচ্ছেন কীভাবে?

জানা গেছে, প্রায় ৩ হাজার ফুট উচ্চতায় অবস্থিত এ গ্রামের বেশির ভাগ মানুষই চোখের একটি জিনগত রোগে আক্রান্ত। বহুকালে আগে ৭টি পরিবার গড়ে তোলে এ গ্রামটিকে। আর তারাই নাকি সঙ্গে করে নিয়ে আসে অন্ধত্বের রোগও। ঠিক মতো চিকিৎসা পৌঁছায় না এই গ্রামে। সব রকম যোগাযোগ থেকে বিচ্ছিন্ন একটা দ্বীপের মতো পেরুর এই পাহাড়ি গ্রামের যন্ত্রণার জীবন যাত্রা ক্রমশ তলিয়ে যাচ্ছে অন্ধকারে।

চক্ষুবিজ্ঞানীরা বলছেন, এ রোগ জন্মগত। ‘রাতকানা’ রোগের জন্য প্রধানত দায়ী এ ‘রেটিনাইটিস পিগমেনটোসা’। এ রোগের কারণে চোখের ‘টানেল ভিশন’ নষ্ট হয়ে যায়। চোখের ভেতরে রেটিনা নামের যে গুরুত্বপূর্ণ পাতলা মেমব্রেন থাকে, তার প্রধান দুটি অংশ হলো রড ও কোণ। এ রড আর কোণ ‘ফটো রিসেপ্টর’র কাজ করে। এ রোগের ফলে রেটিনার রড কোষ ধীরে ধীরে তার কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। ফলে মানুষ অন্ধত্বের শিকার হয়।

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এ গ্রামে ছেলেসন্তান জন্মালে তার অন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা অনেকটাই বেশি। এক্স ক্রোমোজোমের সমস্যাই এ রোগের কারণ। যে মায়েদের এক্স ক্রোমোজোমের সমস্যা রয়েছে, তাদের ছেলে সন্তান জন্ম নিচ্ছে ভবিষ্যৎ অন্ধত্বের নিয়তি নিয়েই। এ রোগের কোনো চিকিৎসা নেই বলেও জানিয়ে দিয়েছেন চিকিৎসকরা। আর এ কারণেই এই গ্রামের বাসিন্দারা অন্য কোনো এলাকার মানুষের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্কে জড়ান না।

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles