0.6 C
Toronto
বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২৫, ২০২৪

ডাকাতি হওয়া বাসে দুই তরুণীর সর্বনাশ হতে দেখলেন সেলিম

ডাকাতি হওয়া বাসে দুই তরুণীর সর্বনাশ হতে দেখলেন সেলিম - the Bengali Times

রাতভর ডাকাতি হওয়া সোনার তরী পরিবহনের সব যাত্রীর চোখ বাঁধা থাকলেও সেলিম নামের এক যাত্রীর চোখ খোলা রেখেছিলো ডাকাত দলের সদস্যরা। পুরো রাস্তা তাকে দিয়ে হেল্পারি করানো হয়। এসময় নিজের চোখে ওই বাসে দুই তরুণীর সর্বনাশ হতে দেখেছেন তিনি। বাসের যাত্রীদের সঙ্গে সেই রাতে কি হয়েছিলো, সেই বর্ণনা তদন্ত সংশ্লিষ্টদের জানিয়েছেন সেলিম।

- Advertisement -

সোনার তরী বাসের মূল চালক পাভেল জানান, গত ১৪ জানুয়ারি বিকেল ৫টার দিকে ৩৫জন যাত্রি নিয়ে তিনি বগুড়া থেকে বাস ছাড়েন। এরপর শেরপুর থেকে আরো তিন যাত্রি নেন। বাসটি রাত ৮টার দিকে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গায় পৌঁছালে ৭ জন যাত্রি ওঠেন। পৌঁনে ১০টার দিকে বাসটি সাভারের নবীনগর পৌঁছালে আরো এক যাত্রি ওঠেন। এরমাঝে বিভিন্ন স্থানে তিনি যাত্রিদের নামানও।

সবশেষে ২০ থেকে ২২ জন যাত্রী নিয়ে তিনি সাভার পার হওয়ার পরপরই ডাকাতরা আক্রমন করে বসে। তারা বাসের নিয়ন্ত্রণ নেন এবং চোখমুখ বেঁধে পেছনের সিটে বসিয়ে রাখেন পাভেল ও তার সঙ্গে থাকা বাসের হেল্পারকে। অনেক মারধরের এক পর্যায়ে তিনি জ্ঞান হারান। কিন্তু ওই বাসে সেলিম নামে এক যাত্রির চোখমুখ বাঁধা ছাড়াই ছিলেন।

পাভেলের কাছ থেকে এমন তথ্য পেয়ে সেলিম নামের ওই যাত্রীর সন্ধান শুরু করে গোয়েন্দা পুলিশ। টানা দুই দিনের চেষ্টায় অবশেষে তার সন্ধান মেলে। ডাকাতির ঘটনা বর্ণনা দিয়ে তদন্ত সংশ্লিষ্টদের সেলিম জানান, গাবতলীর কাছাকাছি পৌঁছালেই ডাকাতরা বাস ঘুরিয়ে আবার সাভারের দিকে চলতে থাকে। এসময় ওই বাসে থাকা দুই তরুণীকে ধর্ষণ করা হয়। এদেরমধ্যে এক তরুণীর মা ও অন্যজনের ভাই সঙ্গে ছিলো। পরে তাদের চান্দুরায় নামিয়ে দেওয়া হয়। তারা ডাকাতি শেষে সাভার থেকে বাসটি ঘুরিয়ে আবারও টাঙ্গাইলের দিকে যায়। এরপর সেখান থেকে একটি তেল বোঝাই ট্রাক ছিনতাই করে।

নিজের চোখ না বাঁধার কারণ হিসেবে সেলিম জানান, অজ্ঞাত কারণে ডাকাতরা তাকে মুক্ত রেখেছিলো। তাকে দিয়ে হেল্পারের মত কাজ করিয়েছে। এ ঘটনার পর তাকে দফায় দফায় ঢাকা মহানগর ডিবি কার্যালয়ে ডেকে পাঠানো হয়েছে। তিনি সাবইকে সত্য ঘটনা বলেছেন এবং ডাকাতদের সনাক্ত করেছেন। ডিবি কার্যালয়ে ওই ডাকাতরা ধর্ষণের কথা স্বীকারও করেছে।

এ ধরনের ৭টি ঘটনার এ পর্যন্ত ৩৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। চাঞ্চল্যকর এমন বাস ডাকাতির পর ঢাকা মহাগর গোয়েন্দা পুলিশের সঙ্গে বৈঠকে বসেন ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমানসহ উর্দ্ধতনরা। সেখানে রেঞ্জের এসপি ও ওসিরাও উপস্থিত ছিলেন। এ ধরণের ঘটনা রোধে সেখানে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়। একই সঙ্গে ডাকাতির পর মামলা না নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেলে তাৎক্ষনিক শাস্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।পাশাপাশি ডাকাতি রোধে তথ্য আদান-প্রদানের কথাও বলা হয়েছে।

বাস ডাকাতির মামলার তদন্ত অগ্রগতি নিয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত-উপ পুলিশ কমিশনার শাহাদাত হোসেন বলেন, গত ১৪ জানুয়ারি সোনার তরী বাসটি (ঢাকা মেট্রো-ব-১১-১৫০৫) বগুড়া থেকে ছেড়ে আসার পর টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে ডাকাত দলের সদস্যরা বাসে ওঠেন। এরপর তারা বাসের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে যাত্রিদের মালামাল কেড়ে নেন। এক পর্যায়ে ওই বাসে থাকা ২ তরুণীকে ধর্ষণ করা হয় বলে গ্রেপ্তার ডাকাত দলের সদস্যরা জানিয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে ওই দুই তরুনীর সন্ধান করা হচ্ছে।

এরআগে, গত ১৪ জানুয়ারি থেকে ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সাভার থানায় দুটি এবং তুরাগ, উত্তরা পশ্চিম, টাঙ্গাইল সদর, মির্জাপুর ও আশুলিয়ায় একটি করে ৭টি ডাকাতি মামলা দায়ের হয়। সবগুলোই ছিলো বাস ডাকাতি। এরমধ্যে ডাকাতের কবলে পড়া টাঙ্গাইলের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. শফিকুল ইসলাম সজীবও ছিলেন। তিনি প্রাণে বেঁচে ফিরলেও চোখ বেঁধে রাতভর তাকে বেদম পেটায় ডাকাত দলের সদস্যরা। এ ঘটনার পর তিনি থানায় গিয়ে মামলা করতে না পেরে ফেইসবুকে একটি পোস্ট দেন। মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়ে যায়। এরপর আইজিপির নির্দেশে মামলার তদন্তে নামে ঢাকা মেহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।

সূত্র : বিডি২৪লাইভ

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles