বগুড়ার ধুনট উপজেলায় এক হাজার গ্রাহকের আমানতের প্রায় আড়াই কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে রুদ্র ফাউন্ডেশন নামের একটি অলাভজনক সংস্থার (এনজিও) বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান রঞ্জু সরকারসহ পরিচালনা পর্ষদের ছয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে ১১টি পৃথক মামলা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বগুড়া পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন জানান, প্রাথমিক তদন্তে গ্রাহকদের অর্থ আত্মসাতের বিষয়টির প্রমাণ পাওয়া গেছে। বিষয়টির তদন্তকাজ চলমান।
প্রতারণার শিকার ৯ জন গ্রাহক এ বিষয়ে গতকাল রবিবার ধুনট প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে রুদ্রবাড়িয়া-বিলপথিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বকুল আমিন লিখিত বক্তব্যে বলেন, উপজেলার রুদ্রবাড়িয়া গ্রামের মোজাফফর সরকারের ছেলে রঞ্জু সরকার বগুড়া পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (আরডিএ) একটি প্রজেক্টে চাকরি করতেন। সেখানকার প্রজেক্ট শেষ হওয়ায় তিনি গ্রামের বাড়ি ফিরে আসেন। ২০১৮ সালে তিনি এবং তাঁর বাবা মোজাফফর সরকার, স্ত্রী দৃষ্টি আক্তার, ভাই রুহুল আমিনসহ আরো কয়েকজন ব্যক্তি মিলে একটি এনজিও গড়ে তোলেন।
তাঁরা ওই এনজিওর নাম দেন রুদ্র ফাউন্ডেশন। অর্থ লগ্নিকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে এটি কাজ শুরু করে। শেরপুর উপজেলার বাসস্ট্যান্ডে শিরিন মহল নামের একটি বাসা ভাড়া নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয় বানানো হয়। সেখান থেকে তাঁরা শেরপুর ও ধুনট উপজেলায় গ্রাহক সংগ্রহের কার্যক্রম চালাতে থাকেন। এ সময় তাঁরা এলাকার মানুষকে অধিক লাভের প্রলোভন দেখিয়ে ফাউন্ডেশনে বিনিয়োগ করাতে থাকেন। প্রতিষ্ঠানটির প্রলোভনে প্রভাবিত হয়ে বকুল আমিন ১১ লাখ ৮৪ হাজার, জাফর ইকবাল পাঁচ লাখ, নূরনাহার বেগম দুই লাখ, মনির ইসলাম ১৫ লাখ ৭০ হাজার, রোজিনা খাতুন এক লাখ, মুন পাঁচ লাখ, রফিকুল ইসলাম ১৭ লাখ, আব্দুল হামিদ ১১ লাখ ও আব্দুস সালাম দুই লাখ ৩৪ হাজার টাকা বিনিয়োগ করেন।
সম্প্রতি ফাউন্ডেশনে গিয়ে টাকা ফেরত চাইলে তাঁদের নভেম্বরের ১০ তারিখে যেতে বলা হয়। কিন্তু নভেম্বরের আগেই দপ্তরটি বন্ধ করে ফাউন্ডেশনের লোকজন আত্মগোপনে চলে যান। তাঁরা এভাবে আরো এক হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে প্রায় আড়াই কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এ বিষয়ে রুদ্র ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান রঞ্জু সরকারের সঙ্গে বিভিন্ন মাধ্যমে চেষ্টা করা হলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
সূত্র : কালেরকন্ঠ