7.1 C
Toronto
বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ১৮, ২০২৪

এক দশকে ‘বহু সম্পদ’ বেড়েছে মুরাদের স্ত্রীর

এক দশকে ‘বহু সম্পদ’ বেড়েছে মুরাদের স্ত্রীর - the Bengali Times

সদ্য সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের স্ত্রী ডা. জাহানারা এহসানের ২০০৮ সালে কোনো সম্পদ ছিল না। কিন্তু ২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগেই রাজধানীতে একটি ছয়তলা বাড়ি, একটি ফ্ল্যাট ও ১৫০ ভরি স্বর্ণের মালিক হন তিনি। নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হলফনামা পর্যালোচনায় এ তথ্য পাওয়া যায়।

- Advertisement -

২০০৮ সালের নির্বাচনে মুরাদের হলফনামায় স্ত্রী ও নির্ভরশীলদের সম্পদের ঘরগুলো ছিল শূন্য। স্ত্রীর নামে সেই সময় কেবল ‘বিয়েতে উপহার’ হিসেবে পাওয়া ২৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কারের কথা লেখা ছিল। সেগুলোর দাম লেখা হয়েছিল ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা। ২০১৮ সালের হলফনামায় মুরাদ তার স্ত্রীর নামে ১৫০ ভরি গহনার তথ্য দিয়েছেন। উৎস দেখিয়েছেন ‘পৈতৃক ও বিয়ে সূত্রে’। ২০০৮ সালে জাহানারা এহসানের কোনো সঞ্চয় বা বিনিয়োগ ছিল না। ২০১৮ সালে হলফনামার ওই ঘরে ৪০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র থাকার তথ্য রয়েছে। প্রথম দফায় ৫ বছর এমপি থেকে এবং পরের ৫ বছর ব্যবসা-বাণিজ্য করে একটি বাড়ির মালিকও হতে পারেননি মুরাদ। তবে এই সময়ে তার স্ত্রীর নামে পুরানা পল্টনে ছয় তলা একটি বাড়ি হয়েছে। বেইলি হাইটসে (নওশান হাইটস কলোনি) একটি ফ্ল্যাটও হয়েছে তার।

এ ছাড়া মুরাদের ওপর ‘নির্ভরশীলদের’ একজন শান্তিনগরের কনকর্ড টুইন টাওয়ারে একটি ফ্ল্যাটের মালিক হয়েছেন। মুরাদের ভাষ্য- সবই দান থেকে পাওয়া।

২০০৮ ও ২০১৮ সালে দুই দফা নির্বাচন করার সময় ইসিতে জমা দেওয়া মুরাদের হলফনামায় দেখা যায়, ১০ বছরের ব্যবধানে তার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে। প্রথমবার সংসদ নির্বাচনের সময় চিকিৎসা পেশা থেকে তিনি বার্ষিক আয় দেখিয়েছিলেন ৩ লাখ ৯ হাজার ৬০০ টাকা। পুরোটাই চাকরি থেকে আসত। অন্য কোনো খাত থেকে কোনো আয় তার ছিল না। ১০ বছর পরে সেটি বেড়ে হয় ১৩ লাখ ৮৩ হাজার ২৯৩ টাকা, যার বেশিরভাগ আসে ব্যবসা থেকে। বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া থেকে ১ লাখ ২৩ হাজার ২৯৩ টাকা এবং কৃষি থেকে ৬০ হাজার টাকা আয় দেখানো হয়।

২০০৮ সালের হলফনামা বলছে, সেই সময় মুরাদ হাসানের হাতে ২ লাখ ২২ হাজার ২১৩ টাকা ছিল। সঞ্চয়পত্র বা স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগে ছিল ৫৪ হাজার ৯২১ টাকা। ১০ বছর পর নগদ টাকার কোনো হিসাব তিনি দেননি। তবে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ২১ লাখ ২৭ হাজার ৩৫ টাকা সঞ্চয়, শেয়ারে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা বিনিয়োগ, সঞ্চয়পত্র বা স্থায়ী আমানতে ১ লাখ ৩৭ হাজার ২৩১ টাকা বিনিয়োগ দেখিয়েছেন। আগেরবার মুরাদ কোনো গহনার মালিক ছিলেন না। তবে ২০১৮ সালের হলফনামায় তার নামে ২৫ ভরি সোনা থাকার তথ্য দেওয়া হয়েছে; দাম দেখানো হয়েছে আড়াই লাখ টাকা।

হলফনামার তথ্য বলছে, ২০০৮ সালে মুরাদের ৮ লাখ টাকা দামের একটি টয়োটা মাইক্রোবাস ছিল। ১০ বছর পর সেই গাড়ির সঙ্গে যোগ হয় ৭০ লাখ টাকার একটি নতুন কার। এর বাইরে ৩ লাখ টাকার পিস্তল ও শটগানেরও মালিক তিনি, যা ১০ বছর আগে ছিল না।

মুরাদের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, ২০০৮ সালের নির্বাচন করার সময় তিনি ছিলেন ১৫ লাখ ২০ হাজার টাকা মূল্যমানের ৭.৩০ শতাংশ অকৃষিজমির মালিক। কোনো কৃষিজমি, বাড়ি, ফ্ল্যাট বা প্লট তার সেই সময় ছিল না। ২০১৮ সালের হলফনামায় তিনি নিজের নামে সরিষাবাড়ির দৌলতপুরে ১০ বিঘা কৃষিজমি ও ১.২ বিঘা অকৃষিজমি দেখিয়েছেন, যা উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া। এ ছাড়া ঢাকার পূর্বাচলে ৫ কাঠা জমি থাকার তথ্যও দিয়েছেন, যার দাম ৩৫ লাখ ২৭ হাজার ৯৫০ টাকা।

আওয়ামী লীগের টিকিটে নবম সংসদ নির্বাচনে জামালপুর-৪ আসন থেকে প্রথমবার এমপি হন মুরাদ। পরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আসনটি জোটসঙ্গী জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেয়। একাদশ সংসদ নির্বাচনে আবারও নৌকার মনোনয়ন পান মুরাদ। ২০১৮ সালের ওই নির্বাচনে জিতে প্রথমে আওয়ামী লীগ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী এবং পরে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি। কিন্তু আড়াই বছরের মাথায় তাকে পদ হারাতে হয় নারীর প্রতি অবমাননাকর মন্তব্যের অডিও ফাঁস হওয়ার জেরে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে পদত্যাগ করার পর গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে কানাডার উদ্দেশে দেশত্যাগ করেন মুরাদ। কানাডায় তার কোনো সম্পদ আছে কিনা, হলফনামায় তা উল্লেখ নেই।

জাইমাকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য আজ মামলা করবে বিএনপি

বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য ডা. মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে আজ রবিবার মামলা করবে বিএনপি। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের মেয়ে জাইমা রহমানকে নিয়ে ‘অশ্রাব্য’ মন্তব্য করায় তার বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নিয়েছে দলটি। গতকাল রাতে বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শায়রুল কবির খান এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, রবিবার সকাল সাড়ে ১০টায় বিশেষ ট্রাইব্যুনালে মামলাটি করা হবে। জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নেতাদের নেতৃত্বে অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার মামলাটি করবেন। এ ছাড়া খুলনা ও রংপুর বিভাগ বাদে সব বিভাগেও বিশেষ ট্রাইব্যুনালে মামলা করা হবে।

সূত্র : আমাদের সময়

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles