13 C
Toronto
শুক্রবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৪

প্রথম দেখায় ধপাস করে প্রেমে পড়ে গেলাম : সায়ন্তিকা

প্রথম দেখায় ধপাস করে প্রেমে পড়ে গেলাম : সায়ন্তিকা - the Bengali Times
প্রথম দেখায় ধপাস করে প্রেমে পড়ে গেলাম সায়ন্তিকা

কলকাতার সুপারস্টার জিৎ। আজ (৩০ নভেম্বর) তার জন্মদিন। বিশেষ দিনে অনুরাগীদের ভালোবাসায় সিক্ত হচ্ছেন এই তারকা। তবে শুধু ভক্তই নন, শোবিজের অনেকেই তাকে ভালোবাসা জানিয়েছেন। কেননা, আজকের দিনটি শুধুই জিৎময়।

এই সুপারস্টারের জন্মদিন উপলক্ষে ভারতীয় একটি গণমাধ্যমে তারকা অভিনেত্রী সায়ন্তিকা ব্যানার্জির একটি লেখা প্রকাশ করা হয়েছে। যেখানে তিনি জিতের প্রতি তার ভালোবাসা, ভরসা ও কেমিস্ট্রির কথা জানিয়েছেন। তার সেই লেখাটি হুবহু তুলে ধরা হলো-

- Advertisement -

‘লাভ অ্যাট ফার্স্ট সাইট’-এর কথা অজস্রবার শুনেছি। ছোট থেকে হিন্দি ছবিতে দেখেওছি। নায়ককে দেখেই নাকি নায়িকা প্রেমে পড়ে যায়। কখনও আবার উল্টোটা। ভাবতাম, এই প্রথম দেখায় প্রেম-টেম শুধু ছবিতেই হয়। আমার মতো সাধারণ মেয়ের সঙ্গে কি এসব হতে পারে! আমি তো আর ‘কভি খুশি কভি গম’-এর কাজল নই যে শাহরুখ আমাকে দেখেই প্রেমে এক্কেবারে হাবুডুবু খাবে! কিন্তু জিৎদা এসে আমার যাবতীয় ভাবনা, অবিশ্বাসকে এক লহমায় তছনছ করে দিয়ে চলে গেল। প্রথম দর্শনেই ধপাস করে ওঁর প্রেমে পড়ে গেলাম!

সে বহু বছর আগের কথা। তখন আমি স্কুলে পড়ি। শুনেছিলাম কোনো এক নতুন নায়কের ছবি আসছে। নাম ‘সাথী’। মা-বাবাকে রাজি করিয়ে ছুট দিয়েছিলাম প্রেক্ষাগৃহে। সেই সময়ে ঝাঁ চকচকে মাল্টিপ্লেক্স ছিল না। ছিল না কাউন্টার থেকে ভেসে আসা ক্যারামেল পপকর্ণের মিষ্টি গন্ধ। কাঠের শক্ত চেয়ারে বসে আলো-আঁধারি হলের পর্দায় প্রথম দেখেছিলাম জিৎদাকে। সেই যে দেখলাম, প্রেমে পড়ে গেলাম। ‘লাভ অ্যাট ফার্স্ট সাইট’। সেই প্রেম রয়েই গেল। তখনও কি জানতাম এই মানুষটার সঙ্গেই একদিন ছবি করব? তার নায়িকা হব?

কাট টু-২০১২। ‘আওয়ারা’ ছবিতে আমি জিৎদার নায়িকা। মানে সুপারস্টার জিতের নায়িকা। তার আগেও বেশ কিছু ছবি করেছিলাম। ক্যামেরার সঙ্গে আলাপটা মোটামুটি হয়েই গিয়েছিল। কিন্তু প্রিয় নায়কের বিপরীতে কাজ করব ভেবেই ভয়ে-আনন্দে হাত-পা যেন অবশ হয়ে যাচ্ছিল।

এই ছবির প্রস্তাব আমার কাছে হঠাৎ করেই এসেছিল! আচমকা একদিন মহেন্দ্র সোনি আর শ্রীকান্ত মোহতা ফোন করে বললেন, তারা একটি ছবির বিষয়ে আমার সঙ্গে কথা বলতে চান। আমিও সাত-পাঁচ চিন্তা না করে হায়দরাবাদের বিমানে উড়ে গেলাম। সেখানেই রবি স্যার (রবি কিনাগি, ছবির পরিচালক) আমার পরীক্ষা নেন।

কিছুক্ষণের মধ্যেই জানতে পারি, আমি জিৎদার নায়িকা! তখন যে ঠিক কতটা খুশি হয়েছিলাম, সেটা এখনও লিখে বুঝিয়ে উঠতে পারব না। পরে জেনেছিলাম, জিৎদাই নাকি আমাকে এই ছবিতে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিল। এই ছবি আমায় নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগ দিয়েছে। ওঁর কাছে আমি সারাজীবন কৃতজ্ঞ থাকব।

হায়দরাবাদ, মালয়েশিয়া, লাদাখ—নানান জায়গায় ঘুরে ঘুরে শুট করেছিলাম আমরা। আমার যখন শট থাকত না, জিৎদাকে দেখতাম। বাধ্য ছাত্রীর মতো শেখার চেষ্টা করতাম। ভুল হলে জিৎদা কোনোদিন বকাবকি করেনি। ওঁ খুব শান্তভাবে ভুলটা ধরিয়ে দিত। এ রকম ঠাণ্ডা মাথার মানুষ আমি খুব কম দেখেছি। এখনও যখন ছোটপর্দায় ‘আওয়ারা’ চলে বা কোথাও ছবির গানগুলো শুনি, সে দিনগুলোর কথা ছবির মতো চোখের সামনে ভেসে ওঠে।

জিৎদার সঙ্গে আমার সম্পর্ক শুধু পেশাদারি নয়। ও আমার খুব কাছের একজন বন্ধু। ওকে আমি শ্রদ্ধা করি। ভালোবাসি। মাঝেমধ্যে বলেও ফেলি, ‘জিৎদা আমি তোমাকে ভালোবাসি। আই লাভ ইউ। তোমায় যদি বিয়ে করতে পারতাম!’ জিৎদা আমার কথা শুনে হাসে। তার পর আমার পিঠে স্নেহের হাত রেখে বলে, ‘আই লাভ ইউ টু বাবু’। ওর মুখে এই কথা শুনে এখনও একজন ‘ফ্যানগার্ল’-এর মতোই আনন্দ পাই। অনেকেই ‘আওয়ারা’ দেখে আমার সঙ্গে জিৎদার রসায়নের প্রশংসা করেন। আমি বলি, জিৎদার প্রতি আমার মনে যে প্রেম আছে, সেই প্রেমই মনে হয় পর্দায় ফুটে উঠেছিল!

জিৎদার থেকে অনেকেই অনেক কিছু শিখতে পারেন। কিন্তু নারীকে কীভাবে সম্মান করা উচিত, সেটা বোধ হয় ওকে দেখলে সব থেকে ভালোভাবে শেখা যায়। পেশাগত জীবনের বাইরেও কোনো সমস্যায় পড়লে আমি জিৎদার কাছে ছুটে যাই। ওঁর থেকে পরামর্শ চাই। কারণ জিৎদা কখনও মন ভোলানো কথা বলে না। আমি যেটা শুনে আনন্দ পাব, ও সেটা বলবে না। বরং যেটা করলে আমার ভালো হবে, ও আমাকে সেটাই করতে বলবে। এ রকম নির্ঝঞ্ঝাট, সৎ, কাজপাগল মানুষ আমি জীবনে খুব কম দেখেছি। ওঁর জন্মদিনে আরও একবার বলব, এই মানুষটাকে আমি সত্যিই খুব ভালোবাসি।

জিৎদার জন্মদিনে ওকে নিয়ে লিখতে বসে কত কথাই মনে আসছে। সবটা ভালো করে লিখেও উঠতে পারছি না। আবেগের কাছে শব্দ কি আর ধোপে টেকে! আমার কাছে জিৎদা আর প্রেম সমার্থক। সেই কবে থেকে এই মানুষটাকে ভালোবাসছি। এখনও ভালবাসি, ভবিষ্যতেও ভালবাসব।

জিৎদা তুমি আক্ষরিক অর্থেই ‘নায়ক’। যে নায়ক পাশে থাকতে জানে, ভালোবাসতে জানে। জানে ঠিক-ভুলের যাচাই করতে। যা কিছু ভালো, সবই তুমি জয় করেছ। জন্মদিনে উপহার হিসেবে এই লেখা আর শ্রদ্ধা ছাড়া তোমাকে আর কি-ই বা দেব!

বর্তমানে বেশ ব্যস্ত সময় পার করছেন জিৎ। তার হাতে রয়েছে কয়েকটি সিনেমা। রিয়ালিটি শো ড্যান্স বাংলা ড্যান্সের বিচারকের আসনেও রয়েছেন তিনি। কিছুদিন আগেই হুগলি সেতুর ওপর আসন্ন ছবি ‘রাবণ’-এর শুটিং করেছেন এই অভিনেতা।

প্রসঙ্গত, গত মাসে ‘রাবণ’-এর ফার্স্ট লুক সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছিলেন জিৎ। পোস্টারে এক অপ্রত্যাশিত লুকে দেখা গেছে তাকে। লম্বা চুল, গালভর্তি দাড়ি, একটা চোখের মণির রং বাদামি এবং অন্যটি লাল। দৃঢ় চোখের চাউনি, ঠোঁটে কুটিল হাসিতে দেখা যায় এই অভিনেতাকে।

সূত্র: আনন্দবাজার

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles