
খাদ্য আমাদের জীবনের অপরিহার্য মৌলিক উপাদান। খাদ্য ছাড়া বেঁচে থাকা অসম্ভব। একইভাবে সঠিক খাদ্য উপাদান গ্রহণ না করলে দেখা দিতে পারে বিভিন্ন সমস্যা। শিশুদের খাদ্যের সঙ্গে যেমন কিশোরদের খাদ্যের পার্থক্য থাকে, তেমনি কিশোরদের খাদ্যাভ্যাসের সঙ্গেও পার্থক্য রয়েছে বয়স্কদের।
ডায়েট চার্ট করার জন্য শিশু (১-৩) বছর ও (৪-১২) বছর, কিশোর-কিশোরী (১৩-১৯) বছর, প্রাপ্তবয়স্ক (২০-৫৯) বছর ও সর্বশেষ বয়স্ক (৬০+) বছরের মানুষদের আলাদা আলাদা খাদ্য তালিকা হয়ে থাকে। শিশুদের ক্ষেত্রে ৬ মাস বয়সের পর থেকে তাদের নতুন খাবারের সঙ্গে যত বেশি পরিচয় করানো যায় তত ভালো। দুধ, চাল, ডাল, সবজি, ছোট মাছ, ফলের রস, হালকা নাশতা, সাদা ভাত, মুরগির ঝোল খাওয়ানো যেতে পারে। ৪ বছর থেকে বাচ্চারা মোটামুটি সব খাবারের সঙ্গে কমবেশি পরিচিতি লাভ করে।
তবে চেষ্টা করা উচিত যথাসম্ভব বাইরের খাবার না দেওয়া। এতে খাবারের রুচি নষ্ট হয়। কিশোর-কিশোরীদের যথেষ্ট পরিমাণ প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট এবং ফ্যাটসমৃদ্ধ খাবার দিতে হবে। প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং মিনারেল রাখতে হবে।
এটা শরীর গঠনের বয়স, সুতরাং সুষম খাদ্য তালিকা অনিবার্য।
বয়স কম থাকলে অনেকেই খাদ্যাভ্যাস নিয়ে ভাবতে চান না। লাঞ্চ ও ডিনারে অনেকে ফাস্টফুড পছন্দ করে। এগুলো শরীরের ক্ষতি করে। বয়স্কদের খাদ্যাভ্যাসে কিশোর-কিশোরীদের তুলনায় কম ফ্যাট, কার্বোহাইড্রেট ও প্রোটিন গ্রহণ করা ভালো।
এতে ওজন কমানোর পরিবর্তে শরীরে জরুরি পুষ্টির অভাবে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই শুরু থেকেই সঠিক খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত। বাইরের খাবার একেবারেই খাওয়া যাবে না এমন নয়, তবে সেটি যেন রুটিন হয়ে না দাঁড়ায়। এ ছাড়া ভালো খাবার মানেই শুধু ঝোল বা সিদ্ধ সবজি নয়। স্বাস্থ্যকর খাবারও সুস্বাদু হতে পারে, যেমন সালাদে অলিভ অয়েল বা পছন্দসই সালাদ ড্রেসিং যোগ করা। খাবারে গোলমরিচ গুঁড়া, লেবুর রস, ধনেপাতা, পার্সলে কুচি বা কারিপাতা যোগ করে স্বাদ বাড়িয়ে নেওয়া যায়। নিয়মিত একটি রুটিন মেনে চলা গুরুত্বপূর্ণ। সকালে নিয়মিত খাবার না খেলে সারা দিন শরীর ক্লান্ত লাগে এবং জাংক ফুড খাওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়। রাতে দুধ, কর্নফ্লেক্স, ব্রেড, ফল, বাদাম জাতীয় খাবার রাখা উচিত, যাতে সকালে আপনার বেশি ক্ষুধা পায়।
স্বাস্থ্যকর খাবার যেমন ছোলা, আখরোট, আমন্ড, ড্রাই ফ্রুটস রাখা যেতে পারে। দুই বেলা খাবারের মাঝের সময়টাতেও খাওয়া যেতে পারে এসব হালকা খাবার। বিকেলে স্ন্যাক্সের দিকে সচেতন থাকা উচিত। এ ছাড়া প্রতিটি বয়সের একটি নির্দিষ্ট পুষ্টি চাহিদা থাকে। পুষ্টির প্রশ্নে কোনো কম্প্রোমাইজ করা ঠিক নয়। বয়সের সঙ্গে শরীরের চাহিদা এবং প্রয়োজন বুঝে খাওয়ার অভ্যাস বদলাতে হবে। অনেক সময় দেখা যায়, বয়স বাড়ার সঙ্গে শরীরের প্রতি অবহেলা আসে, যা সমস্যার কারণ হয়। শরীরের প্রতি নজর না দিলে শরীরও ভালোভাবে কাজ করবে না। বয়স বাড়ার সঙ্গে হরমোনাল পরিবর্তন ঘটে। যা শরীর ও মনে নানা ধরনের পরিবর্তন আনতে পারে। যেমন— ওজন বাড়া, শরীর ভারী হওয়া, অস্টিওপোরোসিস বা মাসল লস। যদিও সবার এই সমস্যাগুলো হয় না, তবু সতর্ক থাকা উচিত। এই সতর্কতার একটি অংশ হলো সঠিক খাদ্যাভ্যাস মেনে চলা।
অতিরিক্ত তেল, ঝাল ও মসলাযুক্ত খাবার না খাওয়া। এবং বাইরের খাবার এবং জাংক ফুড পরিহার করা। বিভিন্ন ধরনের দানাশস্য খান, মটর, ছোলা, রাজমা জাতীয় ডাল ডায়েটে রাখুন। দিনে এক বা দুটি ফল খান, তবে এক দিনে বেশি ফল না খাওয়াই ভালো।