12.2 C
Toronto
বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ১৮, ২০২৪

যেসব কঠোর নিয়ম মানতে বাধ্য কিমের স্ত্রী রি-সল

যেসব কঠোর নিয়ম মানতে বাধ্য কিমের স্ত্রী রি-সল - the Bengali Times
ছবি সংগৃহীত

উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উনের নাম কম-বেশি সবারই জানা আছে। কিন্তু দেশটির ফার্স্ট লেডি রি সল-জু সম্পর্কে আমাদের ততটা জানা নেই। আর এটাই স্বাভাবিক। কারণ, অন্য সবার মতোই রি-সলকেও মেনে চলতে হয় কিমের কঠোর অনুশাসন। তবুও বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমের অনুসন্ধানে কিমের স্ত্রী রি-সলের জীবন সম্পর্কে কিছুটা জানা যায়।

২০১২ সাল থেকেই উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উনের পাশে এক নারীকে মাঝেমধ্যে দেখা যেতে শুরু করেছিল। তারপরই জানা যায় তিনি রি সল-জু। কিম জং উনের স্ত্রী। অর্থাৎ উত্তর কোরিয়ার ফার্স্ট লেডি। তিন সন্তানের মা রি। বিয়ের আগে তিনি একজন সংগীতশিল্পী ছিলেন। কিন্তু কিম জংকে বিয়ের পর থেকেই সব কিছু পাল্টে যায়। কড়া শাসনের ছকে দিন কাটাতে হয় তাকে।

- Advertisement -

১. বিয়ে করতে বাধ্য হন রি

২০০৯ সালে একপ্রকার জোর করেই কিম জং উনের সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয়েছিল তার! উত্তর কোরিয়ার প্রাক্তন শাসক কিম জং ইল (কিম জং উনের বাবা)-এর নির্দেশেই রি-কে বিয়ে করেন কিম। জানা যায়, ২০০৮ সালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। তখনই ছেলেকে এমন নির্দেশ দিয়েছিলেন। উত্তর কোরিয়ার শাসকের নির্দেশ অমান্য করার স্পর্ধা ছিল না কারও।

২. বিয়ের পর নাম বদলাতে বাধ্য হন রি

বিয়ের পর স্বামীর পদবি গ্রহণ করার রীতি রয়েছে সে দেশে। কিন্তু রি-র জীবনে অন্য কিছু ঘটেছিল। তাকে নিজের নামও বদলে ফেলতে হয়েছে। স্বামীর কিম জং-এর ইচ্ছাতেই এমনটা করতে হয়েছিল তাকে। শুধু তাই নয়, তার সম্পর্কে কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয় না। তার জন্মস্থান, বয়স, ছেলেবেলা, বাড়ি— সব তথ্যই গোপন রাখা রয়েছে।

৩. নিজের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে পারেন না

রি সল-জু কোনো সাধারণ পরিবারের মেয়ে নন। এক শিক্ষিত এবং ধনী পরিবারে জন্ম তার। বাবা কলেজের শিক্ষক এবং মা একটি হাসপাতালের স্ত্রী রোগ বিভাগের প্রধান। তার এক কাকার মাধ্যমেই উত্তর কোরিয়ার রাজ পরিবারের সঙ্গে পরিচয় তার। কাকা সেনা উপদেষ্টা ছিলেন। বিয়ের পর জীবন অনেকটাই পাল্টে যায় রি-র। নিজের ইচ্ছাতে এখন আর কিছুই তিনি করতে পারেন না। নিজের পরিবারের সঙ্গে দেখা করারও অনুমতি নেই।

৪. চুলের কাটার স্টাইল, পোশাক ও খাবার কিছুই নিজে পছন্দে করতে পারেন না

কী পরবেন, কী খাবেন, কী ভাবেই বা সাজবেন— সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকারও নেই রি-র। বিয়ের পর প্রথম প্রথম আধুনিক পোশাক পরতে দেখা যেত তাকে। কিন্তু এখন আর সেসব পরতে পারেন না তিনি। রি কী পোশাক পরবেন, সেটাও ঠিক করে দেন কিম। এখন জিন্স পরাতেও নিষেধাজ্ঞা।

৫. প্রকাশ্যে আসতে পারেন না রি

ইচ্ছে হলেও প্রকাশ্যে আসতে পারেন না। রি-কে কখনও প্রকাশ্যে একা দেখা যায় না। স্বামী কিমের অনুমতি মিললে তবেই তিনি বাড়ি থেকে বের হতে পারেন। তা-ও স্বামীর সঙ্গেই। তাই রি-কে যখনই দেখা যায়, পাশে তার স্বামী কিমও থাকেন। এমনকি তার সন্তানদেরও প্রকাশ্যে আসার অনুমতি নেই।

৬. জনসম্মুখে আসা নিষিদ্ধ

অন্যান্য দেশের ফার্স্ট লেডি-রা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যান। বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকেন। এ রকম কোনও কিছুতেই যুক্ত থাকার উপায় নেই রি-র। কিম জং-এর সবুজ সংকেত না মিললে নিজের ছবি তুলতে পারেন না তিনি। কোথাও বেড়াতে যাওয়ার কথা কল্পনাতেও আনতে পারেন না।

৭. উত্তর কোরিয়ার বাইরে যেতে পারেন না রি

বিয়ের আগে দেশ-বিদেশে গিয়েছেন রি। চিনে তার পড়াশোনা এবং প্রতিবেশী দেশ দক্ষিণ কোরিয়ায়ও গিয়েছেন। কিন্তু বিয়ের পর সে সব পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। দেশের বাইরে বেরোনোর অনুমতি নেই।

৮. গর্ভধারণের বিষয়টিও গোপন রাখতে হয়েছে তাকে

বিয়ের পরই তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে যান। সেই সময়টা আরও ভয়ানক হয়ে উঠেছিল। নিজের ঘরের বাইরে তখন পা রাখতে পারতেন না নিজের ইচ্ছায়। সে সময় তাকে একেবারেই দেখা যেত না।

৯. ছেলে সন্তান না হওয়া পর্যন্ত রি-কে সন্তানধারণে বাধ্য করা হয়

২০০৯ সালে তাঁদের বিয়ে হয়। ২০১০ সালে প্রথম সন্তানের জন্ম। প্রথম সন্তান মেয়ে। দ্বিতীয় সন্তানও মেয়ে। তৃতীয় সন্তান ছেলে। যত দিন না তাদের ছেলে হয়েছে, রি-কে বাধ্য করা হয়েছে সন্তানধারণ করতে।

সূত্র: আনন্দবাজার

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles