5.8 C
Toronto
শনিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৪

কানাডায় ইমিগ্রান্ট হয়ে আসার পর

কানাডায় ইমিগ্রান্ট হয়ে আসার পর - the Bengali Times
ফাইল ছবি

কানাডায় ইমিগ্রান্ট হয়ে আসার পর সেটেলড্ হওয়ার জন্য আমাকে মোটামুটি যে চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করতে হয়েছিল তার মধ্যে গাড়ির ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া ছিল অন্যতম। বলতে গেলে আমার জন্য সবচাইতে কঠিন কাজ ছিল এটি। জি ওয়ান (লিখিত অংশ) একবারে পাশ করলেও জি-টু লাইসেন্সের জন্য রোড টেস্ট দিতে হয়েছিল তিনবার। আর গ্রাজুয়েট (জি)লাইসেন্সের জন্য রোড টেষ্ট দিয়েছিলাম ছয়বার। প্রতিবার ফেল করার পর একজামিনারকে জিজ্ঞাসা করতাম:

আমার সমস্যা কোথায়? তারা আমার ড্রাইভিং এ স্পেসিফিক সমস্যা বলার পর বলত, তুমি ড্রাইভিং এ কিছু ব্যাড হ্যাবিট রপ্ত করে ফেলেছো। এজন্য পাশ করোনা। ওগুলো আগে আনলারনড্ করো তারপর আসিও।
যাক ছয়বারের বার পাশ করেছিলাম। আমাদের হাইস্কুলের এক বিএসসি স্যার সাতবার পরীক্ষা দিয়া বিএসসি পাশ করেছিলেন। প্রতিবার ফেল করার পর শুধু সেই স্যারের কথা মনে পড়ত। অবশ্য তিনি বলতেন, তিনিই নাকি স্কুলের সব চাইতে ভালো বিএসসি টিচার।

- Advertisement -

যাইহোক, রোড টেস্টে পাশ করার জন্য ড্রাইভিং ইনস্টাক্টর এর সাথে ট্রেনিং শুরু করলাম। ইনস্ট্রাক্টরকে প্রতি ঘন্টায় পচিশ ডলার করে দিতে হত। কতগুলো লেশন নিয়েছিলাম এখন আর মনে পড়েনা। তবে রোড টেস্টের বুকিং মানিসহ সব মিলে আমার মোট খরচ হয়েছিল প্রায় তিন হাজার ডলার। আমার গ্রেড ওয়ান থেকে মাস্টারস ডিগ্রি পাশ করা পর্যন্ত মনে হয়না তিন হাজার খরচ করেছিলাম। কারন বরাবরই সরকারী স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছি। সরকারী প্রতিষ্ঠান গুলোতে বেতনাদি কম ছিল।

যাই হোক, আমার তিন হাজার ডলার খরচ করে লাইসেন্স প্রাপ্তি পরবর্তিতে পুষিয়ে গেছে। আমি আমার বউকে ট্রেনিং দিয়ে জিটু ও জি-ওয়ান পাইয়ে দিয়েছিলাম খুব সহজেই। ড্রাইভিং ইনস্টাকটরকে আর ডলার দিতে হয়নি। আমার বউ এক দুইবারেই রোড টেস্টে পাশ করেছিল। সাত বছর যাবত সে রীতিমত টরোন্টোতে গাড়ি চালাচ্ছে। গতকাল আমার সতের বছরের কন্যাও জিটু রোড একবারেই পাশ করল। আমিই ছিলাম তার ইনস্টাকটর। হয়ত ছোট কন্যাও আমার ইনস্ট্রাকশনে একদিন ড্রাইভিং লাইসেন্স পেয়ে যাবে অবশ্য যদি ততদিন বেঁচে থাকি।

আমি বহুবার রোড টেষ্ট দিয়ে পাশ করলেও আমার শিক্ষার্থীরা কিন্তুু সহজেই রোড টেস্টে পাশ করে যাচ্ছে। ছাত্র খারাপ ছিলাম কিন্তুু মাস্টার ভালো। শিক্ষক হিসেবে এ গর্ব অবশ্য নিজে নিজে করি। কিন্তুু শিক্ষার্থীরা কেউ আমাকে ক্রেডিট দিতে চায়না। তাঁরা বরং উল্টো বলে, আমি নাকি ভুলভাল শিখাই। তারা নাকি ইউটিউব ভিডিও দেখেই ড্রাইভিং শিখে ফেলেছে। আমি নাকি কেবল উছিলা মাত্র। বলেন তো দেখি, যাদের জন্য করি চুরি তারাই কয় চোর।

স্কারবোরো, কানাডা

- Advertisement -
পূর্ববর্তী খবর
পরবর্তী খবর

Related Articles

Latest Articles