2.9 C
Toronto
বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২৫, ২০২৪

আইভীর জন্য হাতজোড় করে ক্ষমা চাইলেন শামীম ওসমান

আইভীর জন্য হাতজোড় করে ক্ষমা চাইলেন শামীম ওসমান
শামীম ওসমান

মোশতাক আহমেদ শাওন: নগর ভবন ঘেরাও করে ময়লা আবর্জনা ফেলে নাসিক পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের বিক্ষোভ চলাকালে নেতাদেরকে মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী কর্তৃক চাকরি খাওয়ার হুমকির ঘটনায় সকলের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এমপি, জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক একেএম শামীম ওসমান।

বুধবার (১৫ মার্চ) সন্ধ্যায় কানাইনগর সোবহানিয়া উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের নবীনবরণ ও বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি ক্ষমা চেয়ে বলেন, সাংবাদিকরা পশ্ন করেন আপনাদের নৌকা মার্কার একজন মেয়রের কাছে পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা গিয়েছিলেন। সেখানে পুলিশ দিয়ে তাদের সরিয়ে দেওয়া হলো। তাদের বলা হলো ভাত খাইতে ভাত পাস না, ফোন কিনস কই থেইক্যা।

- Advertisement -

এটার উত্তর আমি দেব না, আমি উত্তর দেই, আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশে কোথাও কেউ ভাত না খেয়ে নেই শেখ হাসিনার আমলে। ইনকাম ট্যাক্সের ফাইলে টাকা নেই, এত বাড়ি কোথা থেকে হলো সে প্রশ্ন কে করবে।

আমরা জানি আমরা নৌকার জন্য ভোট চেয়েছিলাম। আমি নারায়ণগঞ্জের একজন সামান্য কর্মী। আমরা বঙ্গবন্ধুকে চিনেছি তার আদর্শকে চিনেছি। তুই তুকারি আল্লাহ পছন্দ করে না। আমাদের প্রশ্নবিদ্ধ করবেন না।

যাদের বলা হয়েছে চাকরি খেয়ে দিবো, আমি তাদের সবার কাছে হাতজোড় করে ক্ষমা চাইছি। সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নকর্মীরাও মানুষ।

এ সময় তিনি আরও বলেন, পুলিশকে গালি দেন যারা তাদের পুলিশের পাহারায় থাকতে হয়। আমাদের ওসামানীয় সাম্রাজ্য বলা হয়। আমার দাদা এমপি ছিল, বাবা এমপি ছিল। আমরা তিন ভাই এমপি হয়েছি। আমরা সাম্রাজ্য কায়েম করেছি সত্যি। কারো জমি দখল করিনি। মানুষের মনে জায়গা করে সাম্রাজ্য গড়েছি।

আমার বাবা খেলাফত পাননি। তিনি দুইবার এমপি ছিলেন। আমাদের জন্য এক টাকাও রেখে যাননি। ৯০০ টাকার জন্য ফরম ফিলাপ করতে পারিনি। আমার বড় ভাই সেলিম ওসমান বাস চালাত। বায়তুল মোকাররমের সামনে মুরগি বিক্রি করেছেন কিন্তু মাথা নত করেননি।

আমার বাবা জমি দখল করেননি। স্বাধীনতার পর লুট করেননি। হিন্দুদের সম্পত্তি দখল করেননি। বাবা আমাদের জন্য টাকা রেখে যাননি। মানুষকে ভালোবাসতে শিখিয়ে গেছেন। সেটা নিয়েই বেঁচে আছি।

আমাকে বিভিন্নভাবে গালাগালি করা হয়। ৩০ বছর আগে হলে জবাব দিলে শহরে থাকতে হতো না। যারা গালাগালি করে আমার তাদের প্রতি মায়া লাগে। আমি দোয়া করি আল্লাহ যেন তাদের হেদায়েত করে।

শামীম ওসমান বলেন, ৯৬ সালে এমপি হওয়ার পর প্রথম আমি এ বক্তাবলী ও আলীরটেকের কথা বলেছিলাম। বলেছিলাম এ আলোর নিচের অন্ধকারকে আলো বানাবো। আজ সব এলাকা থেকে লোকজন এখান দিয়েই আসে। করোনা ও ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে কিছুটা সমস্যা চলছে। আল্লাহ যদি আবার শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় আনে, আজ যে বক্তাবলীকে উপশহর বলা হয়েছে এ বক্তাবলী ও আলীরটেককে নারায়ণগঞ্জের চেয়ে সুন্দর শহর বানাবো।

এজন্য আমার ভালো মানুষ দরকার। এক জায়গায় গেলাম প্রচারণা করলাম দেখা গেল সামনে মটরসাইকেলে একজন চলছে। আমি যাওয়ার পর দোকানে গিয়ে বলে, আমারে চিনস, দে এক প্যাকেট সিগারেট দে। এতে আমার পুরো অর্জন শেষ হয়ে যায়।

তাই আমার এসব মাস্তান দরকার নাই। ৪০ থেকে ৫০ হাজার খারাপ মানুষের সঙ্গে আমি একাই লড়তে পারবো। কারো দরকার নাই। কারণ আমি আল্লাহর উপর ভরসা করে রাজনীতি করি। সুতরাং আমার এসব দরকার নাই। আমি অচিরেই সবগুলো এলাকাতে যাব। তাই সকলকে বলছি সন্ত্রাস, ভূমিদস্যু, চাঁদাবাজ ও ইভটিজারদের রুখে দিতে হবে।

এ সময় জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বাবু চন্দন শীল, বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ এবং দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (১৪) মার্চ বিকেল ৩টায় নগর ভবন ঘেরাও করে পরিচ্ছতান্নকর্মীরা ঝাড়ু নিয়ে প্রতিবাদ স্বরুপ ময়লা আবর্জনা ফেলে প্রতিবাদ বিক্ষোভ করেন।

এ সময় বিদেশী দাতা সংস্থার একটি প্রতিনিধি দল গাড়িযোগে বের হতে গেলে তারা ওই দাতা সংস্থার গাড়ি আটকে দেওয়ার চেষ্টা করে। পরে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি আনিচুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশ এসে গাড়ি যেতে সহায়তা করে। ওই সময়ে হৈ চৈ শুনে অফিস কক্ষ থেকে নিচে নেমে আসেন আইভী। এসময় নগর ভবনে ময়লা রেখে প্রতিবাদ করায় উত্তেজিত হয়ে যান তিনি।

আইভী বলেন, আমার বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে চাও করো, মেয়রকে ঘেরাও করে রাখতে চাও করো। এই নগর ভবনে ময়লা ফেলার দুঃসাহস দেখালে কেন? আর খাইতে ভাত পাওনা, আন্দোলন করো, এত দামি মোবাইল পাইলা কই?

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনসহ কোনো সিটি করপোরেশনেই পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা চাকরিতে স্থায়ী না। সরকার কাউকেই স্থায়ী করে নাই, তোমাদের আমি রাখলেও রাখতে পারি, নাও রাখতে পারি।
এ সময় মেয়র আইভী আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সভাপতি শিমুল দাস, সাধারণ সম্পাদক কিশোর লালসহ সেখানে উপস্থিত মামুন চন্দ্র দাসকে চাকরি থেকে বহিষ্কারের হুমকি দেন।

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles