1.9 C
Toronto
শুক্রবার, মার্চ ২৯, ২০২৪

মৃত্যুতেই যেভাবে অমরত্ব পেল বন্দুক হামলায় নিহত ছোট্ট ‘প্রজাপতি’

মৃত্যুতেই যেভাবে অমরত্ব পেল বন্দুক হামলায় নিহত ছোট্ট ‘প্রজাপতি’
রোল্লি প্রজাপতি

২০২২ সালে পাঁচ ভাই বোনের সাথে দিল্লির একটি বস্তির একটি ঘরে শান্তিতেই ঘুমাচ্ছিল ছোট্ট মেয়ে রোল্লি প্রজাপতি। পাশের খুপরি ঘরেই রাতের খাবার খাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল তার মা-বাবা।

ঠিক তখনই একটা শব্দ, তীব্র চিৎকার। শুনে ওই ঘরে ছুটে গেলে প্রজাপতির বাবা-মা। তাদের সামনেই চিৎকার করতে করতে অজ্ঞান হয়ে গেল প্রজাপতি। হীম শীতল মৃত্যু এলো প্রজাপতি রাজ্যে। বাইরে থেকে ঘরের দেয়াল ভেদ করে আসা একটা বুলেট প্রজাপতিকে নিথর করে দিয়ে গেছে।

- Advertisement -

এরপর হাসপাতাল। ততক্ষণে মারা গেছে নিষ্পাপ প্রজাপতির স্নায়ুতন্ত্র (ব্রেন ডেড)। তবে এই ঘটনাটি কারা ঘটিয়েছে, কাদের গুলিতে মারা গেছে ক্ষুদে প্রজাপতি, সেই প্রশ্নের জবাব পুলিশ আজও দিতে পারেনি। জানিয়েছে, এখনও তদন্ত চলছে। এই চলমান তদন্তের মাঝেই আরও একটা দুর্দান্ত প্রজাপতি কাণ্ডও বহমান।
প্রজাপতি মরেই যেন পেয়েছে অমরত্ব। তার দান করা অঙ্গে এই বসুধার বুকে হাসছে, খেলছে নতুন জীবন। মৃত্যু দিয়েই যেন এক জীবনের সেতু বন্ধন রচনা করে গেল প্রজাপতি।

রোল্লি প্রজাপতিই হয়েছে অল ইন্ডিয়া ইন্সটিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সের সর্বকনিষ্ঠ অঙ্গদাতা। তার বাবা-মা প্রজাপতির অঙ্গ দান করেছেন ওই চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে।

প্রজাপতির দুটো কিডনিই দেওয়া হয়েছে দেব উপাধ্যায় নামের ১৪ বছর বয়সী এক শিশুকে। দেবের বাবা-মা ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসিকে জানিয়েছে, প্রজাপতির এই কিনডি তাদের জন্য নিয়ে এসেছে অলৌকিক কিছু।

দেবের বাবা-মা আরও জানিয়েছেন, তাদের সন্তানের জীবন বাঁচাতে এই কিডনির জন্য তারা চার বছর অপেক্ষায় ছিলেন। এখন প্রজাপতির কিডনিতে তার সন্তান পেয়েছে নতুন জীবন।

ছোট্ট প্রজাপতির লিভার দেওয়া হয়েছে এক ছয় বছরের শিশুকে। আর তার হার্টের ভাল্ব দেওয়া হয়েছে একটি এক বছরের এক শিশুকে। তার চোখের দুই কর্নিয়ায় পৃথিবী দেখছেন এক ৩৫ বছর বয়সী প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ, আরেক ৭১ বছরের বৃদ্ধ।

রোল্লি প্রজাপতির বাবা এই হরনারায়ণ প্রজাপতি অঙ্গদানের বিষয়ে বলেছেন, অনেক চিন্তা-ভাবনার পর তিনি ছোট্ট মেয়েটির অঙ্গদানের বিষয়ে সম্মতি দিয়েছিলেন। তার ভাষায়, ‘ভাবলাম যদি আমার মেয়ের অঙ্গ অন্য কারো জীবন বাঁচাতে পারে, তবে আমাদের সেটাই করা উচিত।’

প্রজাপতির বাবা এখন ভাবছেন, তার কন্যা এখন ওইসব মানুষের মাঝেই বেঁচে আছে, যারা তার (রোল্লি প্রজাপতি) অঙ্গে পেয়েছে নতুন জীবন। মেয়ের এমন বেঁচে থাকা দেখে তিনি বেজায় খুশি।

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles