12.2 C
Toronto
বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ১৮, ২০২৪

অতিরিক্ত চাপ নিয়ে কাজ করতে গিয়ে নার্সরা মনোবল হারিয়ে ফেলেছে

অতিরিক্ত চাপ নিয়ে কাজ করতে গিয়ে নার্সরা মনোবল হারিয়ে ফেলেছে
ছবিওএনএ

অন্টারিওতে যথেষ্ট সংখ্যায় আইসিইউ নার্স নেই এবং অনেকেই পেশা ছেড়েছেন। অভিজ্ঞ নার্সরা কিছুদিনের জন্য বিরতি নিচ্ছেন এবং অন্যরা মহামারির চাপ ও খুবই নাজুক কর্মপরিবেশের কারণে চাকরি ছেড়ে যাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন উমাইগবার নামে একজন নার্স। মহামারির পুরো সময়জুড়েই ইনটেন্সিভ কেয়ার ইউনিটের রেজিস্টার্ড নার্স হিসেবে কাজ করছেন বির্জিত উমাইগবা। সিটিভি নিউজ টরন্টোকে তিনি বলেন, মনোবল তলানিতে ঠেকেছে। লোকজন যারপরনাই হতাশ। জনবল স্বল্পতা ও অতিরিক্ত চাপ নিয়ে মহামারির মধ্যে কাজ করতে গিয়ে নার্সরা তাদের সব শক্তি নিঃশ্বেষ করে ফেলেছেন।

তার কথায়, অন্টারিওতে যথেষ্ট সংখ্যায় আইসিইউ নার্স নেই এবং অনেকেই পেশা ছেড়েছেন। অভিজ্ঞ নার্সরা কিছুদিনের জন্য বিরতি নিচ্ছেন এবং অন্যরা মহামারির চাপ ও খুবই নাজুক কর্মপরিবেশের কারণে চাকরি ছেড়ে যাচ্ছেন।

- Advertisement -

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জর্জিয়ান বে এরিয়ার একজন নার্স সিটিভি নিউজ টরন্টোকে বলেন, যে হাসপাতালে তিনি কাজ করেন সেটি বর্তমানে ব্যাপক জনবল সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। গত সপ্তাহে আমাদের আইসিইউতে মাত্র দুজন নার্স ছিলেন, যাদেরকে সারারাত দায়িত্ব পালন করতে হয়েছে। সুতরাং ল্যাবে যাওয়ার জন্য ইউনিট ছেড়ে যাওয়ার সুযোগ হয়নি তাদের। সাধারণ ইউনিটের অবস্থা আরও করুণ। রাতের শিফটে মাত্র একজন রেজিস্টার্ড নার্স থাকেন। বাকি নার্সদের ৮ থেকে ৯ জন রোগীকে দেখভাল করতে হয়। বসন্তের শুরুতেই আমাদের কলিগদের চাকরি ছেড়ে যেতে দেখছি এবং এ পর্যন্ত অন্তত ১৬ জন চাকরি ছেড়ে গেছেন। শূন্য পদে নিয়োগের প্রক্রিয়াটিও অনেক ধীর গতির।

স্ট্যাটিস্টিকস কানাডার সাম্প্রতিক উপাত্ত বলছে, ২০২১ সালের জানুয়ারিতে অন্যান্য যেকোনো খাতের তুলনায় স্বাস্থ্য সেবা ও সামাজিক সহায়তা খাতে শূন্য পদ ছিল অনেক বেশি।

২০২১ সালে মহামারির প্রথম ঢেউয়ের তুলনায় ২০২১ সালের এপ্রিলে স্বাস্থ্যকর্মীদের কর্মঘণ্টাও অনেকে বেড়েছে। উমাইগবা বলেন, আমাদের সামর্থ্যরে চেয়ে বেশি সময় কাজ করতে হচ্ছে। কারণ, তারা আমাদের রোগী। জীবন রক্ষাকারী মেশিন ও চিকিৎসায় এটা আপনাকে করতেই হয়।

কোনো ইউনিটে জনবল রোগীর সেবায় তার সরাসরি প্রভাব পড়ে বলে জানান উমাইগবা। তিনি বলেন, আপনি যদি চাপে থাকেন এবং ওই সময় রোগীর কাছে দৌড়াতে হয় তখন ভুল হওয়ার ঝুঁকি থাকে। আপনি একটা সময় পর্যন্ত কেবল একজন রোগীর পাশেই থাকবেন। কারণ, দুজন রোগীর অবস্থা একই সময়ে খারাপ হবে, এটা কেউই মনে করে না।

উমাইগবার কথারই প্রতিধ্বনি শোনা গেলো রেজিস্টার্ড নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন অব অন্টারিওর (আরএনএও) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডরিস গ্রিন্সপানের কথায়। তিনি বলেন, আমাদের নার্সদের একটানা দীর্ঘ সময় পর্যন্ত কাজ করতে হচ্ছে। সাপ্তাহিক কোনো ছুটি ও নিঃশ্বাস নেওয়ার সুযোগ নেই তাদের। এ কারণেই পেশা নিয়ে বিকল্প চিন্তা করছেন তারা।

পেশা ছাড়তে হিড়িক লাগার বিষয়টি উঠে এসেছে অ্যাসোসিয়েশনের সাম্প্রতিক এক জরিপে। ২৯ জানুয়ারি থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অন্টারিওর ২ হাজার ১০০ রেজিস্টার্ড নার্স, নার্স প্র্যাক্টিশনার (এনপি) ও নার্সিং শিক্ষার্থীদের ওপর জরিপটি চালানো হয়। জরিপে অংশ নেওয়া ৯৫ শতাংশ নার্স অতিরিক্ত কাজের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন। আর ২৬ থেকে ৩৫ বছর বয়সী অন্তত ১৩ শতাংশ নার্স মহামারি পরবর্তী পরিস্থিতিতে নতুন পেশা খুঁজে নেবেন বলে জানিয়েছেন।

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles