12.9 C
Toronto
বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ১৮, ২০২৪

রসিকতা করতে করতে ঘুষ নেন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা

রসিকতা করতে করতে ঘুষ নেন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা
ছবি ভিডিও থেকে নেয়া

ময়মনসিংহের ত্রিশালের কানিহারী ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা নাছরীন সুলতানা তার অফিসে বসেই নিচ্ছেন ঘুষের টাকা। নেওয়ার সময় আবার করছেন রসিকতা। ঘুষদাতাকে হাসতে হাসতে বলছেন, ‘আমার চাকরি খাবেন নাকি?’ গত সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এমন একটি ভিডিও দেখে গতকাল মঙ্গলবার সকালে ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সামনে বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয়রা। সে সময় তারা নাছরীন সুলতানার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে তাকে অপসারণের দাবি জানিয়েছেন। তাদের দাবি, ওই কর্মকর্তা দীর্ঘদিন ধরে নামজারির জন্য ঘুষ নিয়ে আসছেন। টাকা ছাড়া তিনি কোনো কাজই করতে চান না, করেন খারাপ ব্যবহার।

নাছরীন সুলতানা তার অফিসে নামজারি করতে আসা এক ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা নিচ্ছেন আর ঘুষের জন্য দরকষাকষি করছেন ৩ মিনিট ১৩ সেকেন্ডের এমন একটি ভিডিও গত সোমবার ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, নাছরীন সুলতানা তার অফিসে নামজারি করতে আসা এক ব্যক্তির সঙ্গে টাকার বিনিময়ে কাজ করে দেওয়ার জন্য দরকষাকষি করছেন। একপর্যায়ে টাকা হাতে নিতে নিতে তাকে বলতে শোনা যায় ‘আপনি তো আমার চাকরি খাবেন। সামনাসামনি যা করছেন!’

- Advertisement -

এক হাতে টাকা নাড়তে নাড়তে ভূমি সহকারী কর্মকর্তা নাছরীন সুলতানা হাসিমুখে বলতে থাকেন ‘আমার চাকরিটা খাওয়ার জন্য আপনি লাগছেন! এই শোনেন, যেটা দেখাইছি ওইটা দিতে হবে, তাহলে আপনি কাজ পেয়ে যাবেন। ভাইঙ্গা ভাইঙ্গা টাকা দিলে এটা অয় না। তারপরও দিয়ে গেলেন! ওই ভাই সামনে ছিল, (পাশে বসে কথা বলতে থাকা এক ব্যক্তিকে দেখিয়ে) তাই আমি রাখলাম, নাইলে রাখতাম না। কিন্তু দেওয়া লাগব, ওইটা না দিলে আপনার নামজারি হবে না।’

ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর গতকাল সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, অফিস করছেন নাছরীন সুলতানা। আর অফিসের সামনে এলাকাবাসী তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছেন।

ভূমি অফিসের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা স্থানীয় সোহেল মিয়া, রুবেল বেপারি, বাবুল হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ওই কর্মকর্তা এখানে আসার পর ভূমি অফিসে টাকা ছাড়া কোনো কাজ হয় না। তিনি অনেক ক্ষমতাধর। তিনি কারও কথা শোনেন না। যা ইচ্ছা তাই করেন। মানুষের সঙ্গে খারাপ ব্যবহারও করেন। তার বিরুদ্ধে এলাকার হাজারো মানুষের অভিযোগ আছে। আমরা এর অপসারণ চাই।

এদিকে ভূমি অফিসের সামনে বিক্ষোভের মধ্যেই দুপুরের দিকে প্রশাসক এনামুল হক তাকে সাময়িক বরখাস্তের লিখিত আদেশ পাঠান। উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি হাসান আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জানান, বরখাস্তের আদেশের পর নাছরীন সুলতানা অফিস থেকে চলে গেছেন। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা চালু করে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বিভাগীয় মামলায় পরবর্তীকালে তার বিরুদ্ধে তদন্তের মাধ্যমে সাজা হবে।

অবশ্য মোবাইল ফোনে নাছরীন সুলতানা বলেন, ‘ভিডিওটি সুপার এডিট করা হয়েছে। আমি অন্যজনের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছিলাম সরকারি ফি বাবদ। কিন্তু একটি চক্র পুরো ভিডিওটি কেটে আমাকে হেনস্তা করেছে। আমি খারিজের সরকারি ফি ছাড়া কারও কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নিইনি।’

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles