2.9 C
Toronto
বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২৫, ২০২৪

রোজমেরি সালিভান

রোজমেরি সালিভান
ফাইল ছবি

কানাডীয় সাহিত্যে যে কয়েকজন জীবনীকারকে আমি বিশেষ গুরুত্বের সাথে দেখি তাঁদের মধ্যে রোজমেরি সালিভান অন্যতম। রোজমেরিকে আমি অধিক গুরুত্ব দেই এ কারণে যে, তিনি আমার অনেক প্রিয় কবি গুয়েন্ডলিন ম্যাকইয়ানের জীবনী রচনা করেছেন। অসামান্য সেই জীবনীটি পাঠের পর আমি এতটাই মুগ্ধ হয়ে যাই যে, রোজমেরির লেখা বাকি জীবনীগুলো আমি খুঁজতে থাকি এবং খুঁজতে খুঁজতে একসময় পেয়ে যাই মার্গারেট অ্যাটউডের জীবন নিয়ে লেখা নন্দিত গ্রন্থটিও।

রোজমেরির লেখা এই দুটি জীবনীই আমার ঘরে রয়েছে।

- Advertisement -

গত সোমবার টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে আমাকে যেতে হয়েছিল ক্যালগেরি থেকে আগত আমাদের কনিষ্ঠ বন্ধু অধ্যাপক রঞ্জন দত্তের সাথে দেখা করার জন্য। মজার বিষয় হলো, দেখা হওয়ার আগে রঞ্জন এবং আমার দুজনেরই এত বেশি চাপাচাপি ছিল যে আমাদের সিদ্ধান্ত হয়েছিল বিকেল সাড়ে তিনটা থেকে চারটা পর্যন্ত আমাদের একসাথে সময় কাটানো হবে। ইউঅফটির মাঙ্ক স্কুলের গেটে গিয়ে দাঁড়াতেই আমার নজরে পড়েছিল একটি লেখা যেখানে বলা ছিল “বুকস অন সেল” যেটি শেষ হবার তারিখ ছিল চব্বিশ অর্থাৎ গত সোমবারই। সাক্ষাতের কিছুক্ষণ পরেই দেখা গেল, যে কনফারেন্সে অতিথি হিসেবে রঞ্জন এসেছেন, সেটিতে বাকি সময়টুকুর জন্যে যুক্ত হওয়ার ব্যাপারে রঞ্জনের আগ্রহ কমতে শুরু করেছে। দু’জনে ঘুরে ঘুরে ছবি তুলতে লাগলাম কারণ এই ক্যাম্পাসে তিনি প্রথমবার এসেছেন। আমার যা যা দেখানোর ছিল, জানানোর ছিল সেগুলো তাঁকে দেখাতে থাকলাম, জানাতে থাকলাম। দুজনে একসাথে কফিও খেয়ে নিলাম এরকম করতে করতে।

একসময় রঞ্জন প্রস্তাব করলেন তাঁর থাকার জায়গা থেকে ব্যাগটি নিয়ে তিনি নামতে চান। আগেই জানতাম, সন্ধ্যাতেই তাঁকে হ্যামিল্টনে চলে যেতে হবে কারণ পরের দিন সকালেই সেখানে তাঁর একটি প্রেজেন্টেশন রয়েছে। মজার বিষয় হলো, ব্যাগ নিতে ফেরার পথেই আবার আমার চোখে পড়ল সেই লেখা “বুকস অন সেল”। স্বর্গের আপেল আমাকে এতোটাই নীতিচ্যুত করে ফেললো যে, আমি রঞ্জনকে অনুরোধই করে ফেললাম যে তিনি ব্যাগ আনতে আনতে আমি ওই ঘরটাতে একটু ঢুকে দেখতে চাই। তাঁর সম্মতি পেয়েই আমি বই বিক্রির ঘরের দিকে দৌড় মারলাম। হাতে তখন রয়েছে মাত্র ত্রিশ মিনিট। কিন্তু দশ মিনিটের ভেতরেই আমি পাগল হতে থাকলাম দেখে যে ওই ঘরে রয়েছে এমন অনেক প্রচুর বই যেগুলো আমার অনেক প্রিয়, আমার আগ্রহের। কিছু আমার সংগ্রহে আছে, কিছু নেইও। টেবিলের উপরে ছড়িয়ে থাকা অনেক বইয়ের ভেতরে দেখি জ্বলজ্বল করছে রোজমেরি সালিভানের সেই দুটি বই। বই দুটি কিনলাম এই মনে করে যে ক্যালগেরি থেকে আগত বন্ধু রঞ্জন এবং তার স্ত্রী চপলার জন্য এর চেয়ে ভালো কোনো উপহার টরন্টো থেকে বোধ করি আমার পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়।

সেই দুই বই এবং আরও অন্যান্য বই নিয়ে আমাদের যে সময় কাটানো সেটি চলতে থাকলো সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত। শেষ হলো নৈশ আহার দিয়ে। যে সাক্ষাতের সময় ছিল ৩০ মিনিট, আমাদের মতো খুদে পড়ুয়াদের আতিশয্যে সেটি বিস্তৃত হলো চার ঘন্টা ত্রিশ মিনিটে।
প্রিয় দম্পতি রঞ্জন-চপলার জন্যে অনেক অনেক ভালোবাসা।

ইস্টইয়র্ক, অন্টারিও, কানাডা

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles