2.1 C
Toronto
বৃহস্পতিবার, মার্চ ২৮, ২০২৪

কোটি টাকা আত্মসাৎ মামলায় কারাগারে সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা

কোটি টাকা আত্মসাৎ মামলায় কারাগারে সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা

নোয়াখালীতে ইলিশ ক্রয়ের ভুয়া ভাউচার দেখিয়ে ঋণের ১ কোটি ৯৭ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ফুলগাজী উপজেলার সোনালী ব্যাংকের সাবেক এওজি ক্যাশ-২ সহ ৫ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে ৭০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন দুদকের স্পেশাল জজ আদালত। একই সঙ্গে ৫জনকে বিভিন্ন ধারায় তিন কোটি ৭০ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

- Advertisement -

সোমবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে দুদকের নোয়াখালী স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক এএসএম মোরশেদ খান এ রায় ঘোষণা করেন। তবে এ সময় তিন আসামি ছাড়া বাকী দুই আসামি আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন। আদালত এ মামলার রায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের সাজা দেওয়ার পাশাপাশি তাদের স্ত্রী-সন্তানদের সম্পদের হিসাব ও আয়ের উৎস তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, নোয়াখালীর সদর উপজেলার সোনাপুর বিসিক শিল্প এলাকার মেসার্স ডলফিন ডলফিন সী ফুড ইন্ডাস্ট্রিজের স্বত্বাধিকারী ব্যবসায়ী নিজাম উদ্দিন ফারুক, সোনালী ব্যাংক নোয়াখালী শাখার সাবেক এ জিএম এ জে আবদুল্ল্যা আল মামুন, সোনালী ব্যাংক নোয়াখালী শাখার সাবেক সিনিয়র অফিসার জাকের উল্যাহ, ফেনী জেলার ফুলগাজী উপজেলার সোনালী ব্যাংকের সাবেক এওজি ক্যাশ-২ এমএ রহমান, সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের প্রধান কার্যালয়ের বরখাস্তকৃত ইঞ্জিনিয়ার সামছুদ্দোহা নাহাদ। ব্যবসায়ী নিজাম উদ্দিন ফারুক কবিরহাট উপজেলার নরোত্তমপুর ইউনিয়নের যাদবপুর গ্রামের আবদুল মতিনের ছেলে।

আরও পড়ুন :: সিলেটে পৌর-উপজেলা, ৪ ইউপিতে নৌকার মনোনয়ন পেলেন যারা

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সূত্রে জানা যায়, মামলা সূত্রে জানা গেছে, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে কোল্ড স্টোরেজে ইলিশ মাছ রেখে ব্যবসার জন্য ২০১২ সালের ১০ জুলাই দুই কোটি টাকা ঋণ অনুমোদন করেন। পরে মাছ না কিনে ভুয়া ভাউচারের মাধ্যমে ওই বছরের ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ১৪টি চেকে এক কোটি ৯৭ লাখ ১৬ হাজার ৭০০ টাকা উত্তোলন করা হয়। এর বিপরীতে ৫১ হাজার ৪৩৯ কেজি ইলিশ মাছ ক্রয় করে গুদামজাত করার কথা থাকলেও তা না করে সম্পূর্ণ টাকা আত্মসাৎ করা হয়।

এ ঘটনায় সোনালী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার মো. মোস্তফা কামাল ২০১৭ সালের ১৭ এপ্রিল সাতজনকে আসামি করে সুধারাম থানায় মামলা করেন। পরে দুদকের তৎকালীন সহকারী পরিচালক মো. মশিউর রহমান তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ২৩ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরে ২০১৭ সালের ২৩ অক্টোবর দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, নোয়াখালীর তৎকালীন সহকারী পরিচালক মো. মশিউর রহমান, বর্তমানে উপপরিচালক, গোয়েন্দা ইউনিট, প্রধান কার্যালয়,কর্তৃক তদন্ত শেষে কমিশনের অনুমোদন নিয়ে বিজ্ঞ আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়।

মামলায় আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট মোল্লা হাবিবুর রসুল মামুন, অ্যাডভোকেট সামছুদ্দিন আহমেদ ও অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান সিদ্দিকী। রায় ঘোষণার সময় আসামি জাকের উল্লাহ, এম এ রহমান, মো. সামছুদ্দোহা নাহাদ ও মো. মোশতাক আহমেদ সিদ্দিকী আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে দণ্ডপ্রাপ্ত তিনজনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তবে রায়ে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় সোনালী ব্যাংকের ডিজিএম মীর আবদুল লতিফ ও ব্যবস্থাপক মো. মোস্তাক আহমেদ সিদ্দিকীকে মামলা থেকে খালাস দিয়েছেন আদালত।

সিনিয়র অ্যাডভোকেট মোল্লা হাবিবুর রসুল মামুন বলেন, আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করবো। এ রায়ে আসামিপক্ষ ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। আশা করি সেখানে ন্যায়বিচার পাবো।

নোয়াখালী জেলা দুদকের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট আবুল কাশেম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, পলাতক আসামি নিজাম উদ্দিন ফারুককে ২৫ বছরের সাজা ও দুই কোটি দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে। এছাড়া চার ব্যাংক কর্মকর্তা দুর্নীতিতে জড়িত থাকার বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় তাদের প্রত্যেককে ২৫ বছর করে কারাদণ্ড ও এক কোটি ৬৮ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। তবে বিভিন্ন ধারায় সাজা যুগপৎ হওয়ায় সর্বোচ্চ সাজা ১০ বছর করে কার্যকর হবে।

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles