11.2 C
Toronto
মঙ্গলবার, এপ্রিল ২৩, ২০২৪

ইমামের ধর্ষণে ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা তরুণী, থানায় মামলা

ইমামের ধর্ষণে ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা তরুণী, থানায় মামলা

নেত্রকোণার বারহাট্টায় এক বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে মসজিদের ঈমামের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ধর্ষণের পর ওই তরুণী ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছেন বলে জানা গেছে। বারহাট্টা উপজেলার সিংধা ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।

- Advertisement -

অভিযুক্ত ইমামের নাম হাফেজ নুর আহম্মদ (৫৭)। তিনি ওই উপজেলার মল্লিকপুর গ্রামের মৃত মগল মিয়ার ছেলে। আর ওই ভুক্তভোগী প্রতিবন্ধী যুবতী একই গ্রামের।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, হাফেজ নুর আহম্মদ নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জের শানারপার এলাকায় বসবাস করেন। নিজ বাড়ি নেত্রকোনার বারহাট্টার মল্লিকপুরে তার মা বসবাস করেন। মাকে দেখতে মাঝে মধ্যে বাড়িতে আসেন তিনি। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বাড়িতে এসে পাশের বাড়ির এক বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী তরুণীকে বিভিন্ন কাজের বাহানায় ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করেন। একপর্যায়ে ওই যুবতী ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। এর আগেও এ ধরনের বেশ কয়েকটি অপকর্ম তিনি করেছেন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, হাফেজ নুর আহম্মদ চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে স্ত্রীকে রেখে একাই গ্রামের বাড়ি মল্লিকপুরে আসেন। এসময় নদী খননের বালু তুলে বিক্রি করেন। পরে পাড়ার মসজিদে রমজানে নামাজ পড়ান আর বেশ কিছুদিন এলাকায় থাকেন। সে সময় নানা কাজের জন্য পাশের বাড়ির বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ওই তরুণীকে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করেন নুর আহম্মদ। এ কথা কাউকে না বলতে হুমকিও দেন। এছাড়া ওই তরুণীকে নানা লোভ-লালসাও দেখান নুর আহম্মদ।

এতে ওই তরুণী ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে বিষয়টি নুর আহম্মদকে জানালে প্রতিবেশী কয়েকজনকে দিয়ে গর্ভের বাচ্চা নষ্ট করার পরামর্শ দেন। এমনকি ওই বাচ্চা তার নয় বলে বিষয়টি এড়িয়ে যান।

মল্লিকপুর গ্রামের বাসিন্দা সাবেক মেম্বার রিয়াজ উদ্দিন জানান, নুর আহম্মদ লম্পট টাইপের লোক। আগে একবার গ্রামের মসজিদে ইমাম থাকা অবস্থায় এক নারীর সঙ্গে এমন কাজ করে। সেই নারী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে এলাকাবাসী তাকে মারধর করে গ্রাম থেকে বের করে দেন। পরে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ চলে যান। সেখানে গিয়েও একই কাজ করেন। পরে কয়েক মাসের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় সেই মেয়েকে বিয়ে করে সেখানেই স্থায়ী হন। এরপর মালয়েশিয়া গিয়ে কিছুদিন থেকেছেন। আমিসহ অনেক মানুষকে অবৈধভাবে সে মালয়েশিয়া নিয়েছে। তারপর দেশে এসে আদম ব্যবসা শুরু করেছেন। তিনি ৬-৭টা নারী সংক্রান্ত কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত।

উপজেলার সিংধা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান মেম্বার লালন বখত মজুমদার বলেন, নুর আহম্মদ ইমামতি করলেও তার নারী কেলেঙ্কারির অনেক ঘটনা আছে। বর্তমানে বিদেশে লোক পাঠান, আদম ব্যবসাও করে। এই প্রতিবন্ধী তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনায় বিয়ে করার কথা বললেও সে নানা ছলচাতুরির আশ্রয় নিয়েছেন। এলাকায় কিছু লোকজনকে টাকাপয়সা দিয়ে প্রতিবন্ধী তরুণীর পরিবারকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। এ ঘটনায় তার কঠোর শাস্তি দাবি করেন তিনি।

ভূক্তভোগীর মা জানান, প্রথমে নুর আহম্মদকে আমি ঘটনা ফোনে জানাই। জানানোর পর এটি সমাধানে আমাকে আশ্বাসও দেন। কিন্তু কয়েক দিন যেতেই এলাকার কয়েকজন মানুষকে টাকাপয়সা দিয়ে ম্যানেজ করে আমাকে আর আমার মেয়েকে অপবাদ দিতে শুরু করেন। তারা বাচ্চা নষ্ট করার জন্য চাপ দেয়, ভয়ভীতি দেখায়। শেষে বাধ্য হয়ে আইনের আশ্রয় নিয়েছি। আমার ৭ সন্তানের মধ্যে ৫ জনই প্রতিবন্ধী। স্বামী মারা যাওয়ার পর এদের নিয়ে অনেক কষ্টে দিনযাপন করছি। এ ঘটনার বিচার চাই।

বারহাট্টা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ লুৎফুল হক বলেন, ডাক্তারি পরীক্ষায় ওই মেয়ে ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা প্রমাণিত হয়েছে। মামলা হওয়ার পর অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে অভিযান চালানো হয়েছে। তবে তাকে ধরা যায়নি, তিনি পালিয়েছেন। তাকে গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।

সূত্র : চ্যানেল২৪

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles