বঙ্গোপসাগরে ঝড়ের কবলে ডুবে যাওয়া ট্রলারের ৯ জন জেলের সন্ধান মেলেনি ২১ দিনেও। নিখোঁজদের পরিবারে চলছে স্বজনদের আহাজারি। পরিবার গুলোর খোঁজ নেয়নি জনপ্রতিনিধি কিংবা সরকারের কর্তাব্যক্তিরা।
প্রাকৃতিক দুর্যোগে বছরের পর বছর ধরে জেলেরা নিখোঁজ থাকলেও তাদের নাম আসে না মৃতদের তালিকায়। যে কারণে তাদের স্বজনরা পান না সরকারি সহায়তা।
ঝড়ের কবলে ভেসে যাওয়া ৯০ জেলে ভারতের বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে আটকে থাকলেও বাংলাদেশের হাইকমিশনের সহযোগিতার অভাবে ফিরিয়ে আনা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির নেতারা।
১৫ আগস্ট পাথরঘাটা বিএফডিসির খাল থেকে এফবি সিরাজ উদ্দিন ট্রলারটি নিয়ে ১১ জন জেলে গভীর সমুদ্রে মাছ শিকারে যান। কিন্তু ১৮ আগস্ট সাগরে নিম্নচাপে সৃষ্ট ঝড়ে ডুবে যায় ট্রলারটি। পরে উত্তাল সাগরে ভাসতে ভাসতে ভারতীয় কোস্টগার্ডের সহযোগিতায় ৫ জন জেলে ফিরে এলেও ২১ দিনেও ফিরে আসেননি বাকি ৬ জন জেলে।
পাথরঘাটা উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের লাকুরতলা গ্রামের নিখোঁজ জেলে ইব্রাহিমের কলেজ পড়ুয়া ছেলে মাসুম বিল্লাহ। বাবা ফিরে আসার অনিশ্চয়তায় নিজের লেখাপড়া ও সংসার চালানো নিয়ে পড়েছেন চরম বিপাকে। একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে ইব্রাহিমের স্ত্রী ও বৃদ্ধ মা-বাবার আহাজারি যেন থামছে না। তাদের অভিযোগ, এখনো কেউ খোঁজ নেননি তাদের।
ট্রলার মালিক সমিতি তথ্য অনুযায়ী, ওই ট্রলারের ৬ জন জেলে সহ বিভিন্ন ট্রলারের মোট ৯ জন জেলের সন্ধান মিলছে না। দরিদ্র জেলে পরিবার গুলোতে ৪-৫ জন সদস্য রয়েছেন। অনিশ্চিত ভবিষ্যতের শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন তারা, চাচ্ছেন সরকারের সহযোগিতা।
ঝড়ের কবলে ভেসে ভারতে চলে যাওয়া জেলেদের উদ্ধারে সম্প্রতি ভারত গিয়েছিলেন বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী।
তিনি বলেন, ভারতের বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা জেলেদের মধ্যে নিখোঁজ ওই ৯ জন জেলেকে পাওয়া যায়নি। এমনকি বছরের পর বছর নিখোঁজ থাকলেও মৃতদের তালিকায় নাম না আসায় স্বজনরা বঞ্চিত হচ্ছেন সরকারি সহায়তা থেকে।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ হাইকমিশনের সহযোগিতা না পাওয়ার কারণে আটকে পড়া জেলেদের দেশে ফিরিয়ে আনা বিলম্বিত হচ্ছে।
এ বিষয়ে পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুফল চন্দ্র গোলদার বলেন, সঠিক তথ্য পেলে মন্ত্রণালয়ে জানানো হবে। নিখোঁজ জেলেদের পরিবারে উপজেলা চেয়ারম্যানের মাধ্যমে সহায়তা দেওয়া হবে।
সূত্র : ঢাকাটাইমস