9.2 C
Toronto
বুধবার, এপ্রিল ২৪, ২০২৪

বাংলাদেশিরা যেভাবে ইউক্রেন থেকে ছাড়া পেলেন

বাংলাদেশিরা যেভাবে ইউক্রেন থেকে ছাড়া পেলেন - the Bengali Times

ইউক্রেন থেকে ২ জন বাংলাদেশিকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে পোল্যান্ডের বাংলাদেশ দূতাবাস। তারা মিকোলাইভ শহরের ডিটেনশন ক্যাম্পে আটকে ছিল। বর্তমানে তারা পোল্যান্ডে বাংলাদেশ দূতাবাসের শেল্টার সেন্টারে আছেন। এছাড়া বাকি ৫ বাংলাদেশিকেও উদ্ধারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পোল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সুলতানা লায়লা।

- Advertisement -

উদ্ধারকৃতদের একজনের নাম জহিরুল ইসলাম, অন্যজন নাম প্রকাশ করতে চাননি। ডিটেনশন সেন্টার থেকে ছাড়া পাওয়া এবং তারপর পোল্যান্ডে পৌঁছানোর দীর্ঘ যাত্রার কাহিনী বলেছেন তারা।

ইউক্রেনের মিকোলাইভের ক্যাম্পে কয়েকটি দেশের ৫৮ জন নাগরিক ছাড়াও জুরাভিস শহরে আরেকটি ডিটেনশন ক্যাম্পে আরও ৫ বাংলাদেশিসহ ১২০ জন আটকে আছেন। উদ্ধারকৃতদের থেকে জানা যায়, তাদের অধিকাংশ জর্জিয়া, আজারবাইজান, আফগানিস্তান, ফিলিস্তিন ও কিউবার নাগরিক। ইউক্রেন এসব আটকে থাকা বেসামরিক নাগরিকদের ‘মানবঢাল’ হিসেবে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগও উঠেছে।

পোল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সুলতানা লায়লা বলেন, ‘ই-মেল ও টেলিফোনে আমরা ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি। বলেছি, যুদ্ধ পরিস্থিতিতে আমাদের নাগরিকদের এভাবে আটকে রাখতে পারেন না। তাদের মুক্ত করে দেন, সব দায় দায়িত্ব আমরা নেব। যুদ্ধের সময় এই যোগাযোগ করা খুবই কঠিন। আমি বারবার তাদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছি। একটি ডিটেনশন ক্যাম্প থেকে ২ জন বাংলাদেশিকে বের করে আনতে সক্ষম হয়েছি। আরেকটি ক্যাম্প থেকে ৫ জনকে বের করে আনার চেষ্টা চলছে। আজ আবার ইউক্রেন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব। আশা করছি, তাদেরকেও বের করে আনতে সক্ষম হব।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাংলাদেশি ক্যাম্প থেকে বের হয়ে যেভাবে পোল্যান্ডে এসে পৌঁছান তার বিবরণ দিয়ে বলেন, ‘মিকোলাইভের ডিটেনশন ক্যাম্প থেকে পোল্যান্ড সীমান্তের দূরত্ব প্রায় ৮০০ কিলোমিটার। পোল্যান্ডে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করে চিঠি পাঠানো হয়েছিল। পরে সেই চিঠি ক্যাম্প কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে ইউক্রেনীয় ভাষায় অনুবাদ করে দিতে বলে। আমরা সেই চিঠি পোল্যান্ডের বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সিলর অনির্বাণ নিয়োগীকে পাঠালে তিনি অত্যন্ত দ্রুত গতিতে ইউক্রেনীয় ভাষায় অনুবাদ করে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠায়। পরে তারা ক্যাম্পে “নো অবজেকশন” পেপার দিলে আমরা ছাড়া পাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘বের হওয়ার পর দেখি সব তছনছ হয়ে গেছে। চারদিকে ধ্বংসস্তূপ। যুদ্ধবিধ্বস্ত ওই এলাকায় কোনো যান না চলায় আমরা সেখান থেকে প্রায় ২০-২৫ কিলোমিটার হেঁটে একটা শহরে যাই। পরে সেখান থেকে ট্যাক্সি ধরে পোল্যান্ডের কাছাকাছি লিভিভ শহরের একটা রেল স্টেশনে পৌঁছাই’।

সঙ্গে যোগ করে তিনি আরও বলেন, ‘সেখানে পৌঁছাতে ট্যাক্সিতে প্রায় ৩ ঘণ্টার মতো সময় লেগেছে। প্রতি ৫ কিলোমিটার পরপর ইউক্রেনীয় সেনাদের চেকপোস্ট ছিল। আমাদের কাছে ট্যাক্সি ভাড়া দেওয়ার মতো যথেষ্ট টাকা ছিল না। ভাড়ার অর্ধেকটা পরিশোধ করা হয়েছে দূতাবাসের মাধ্যমে। বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৬-৭ হাজারের মতো ভাড়া আসে। ইউক্রেনের ভেতরে থাকা অনারারি কাউন্সিলর মাববুব আলম সরাসরি ড্রাইভারের কাছে টাকা পাঠিয়েছেন।’

সীমান্ত পার হওয়ার পর রেডক্রসের একটি গাড়ি তাদের কাছের একটা শহরে নিয়ে যায় বলে জানান তারা। সেখানে পোলান্ডের এক দম্পতি ওয়ারশতে যাচ্ছিলেন। রেডক্রসের সদস্যরা সেই দম্পতির গাড়িটি ব্যবস্থা করে দিলে তারা দু’জন গতকাল রাতে ওয়ারশতে পৌছায়।

সূত্র : আমাদের সময়

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles