6.3 C
Toronto
বৃহস্পতিবার, মার্চ ২৮, ২০২৪

একজন শ্রমিক থেকে ইউটিউব তারকা হয়ে ওঠার গল্প

একজন শ্রমিক থেকে ইউটিউব তারকা হয়ে ওঠার গল্প - the Bengali Times
সব শ্রমিকের মতো দেশটির উড়িষ্যায় বসবাসরত ইসাক মুন্ডারেরও কাজ জুটছিল না

করোনার কারণে সেই সময় গোটা বিশ্বের সঙ্গে ভারতেও লকডাউন চলছিল। অন্য সব শ্রমিকের মতো দেশটির উড়িষ্যায় বসবাসরত ইসাক মুন্ডারেরও কাজ জুটছিল না। ওই সময়ে তিনি ইউটিউবে ভিডিও আপলোড শুরু করেন। বর্তমানে ইসাক একজন সোশ্যাল মিডিয়া তারকায় পরিণত হয়েছেন। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে একজন শ্রমিক থেকে ইসাকের ইউটিউব তারকা হয়ে ওঠার সেই গল্প।

২০২০ সালের মার্চ মাসে ইসাক মুন্ডা তার প্রথম ইউটিউব ভিডিও আপলোড করেছিলেন। ওই সময় জীবিকার তাগিতে তিনি মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন।

- Advertisement -

ইসাক জানান, লকডাউন চলাকালীন একদিন তার সন্তানরা ইউটিউবে কার্টুন দেখছিল। ওই সময় একটা বিজ্ঞাপনে বলা হচ্ছিল কীভাবে ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করে অর্থ উপার্জন করা যায়।

ইসাক সেই বিজ্ঞাপন দেখেই সিদ্ধান্ত নেন তিনিও চেষ্টা করবেন ইউটিউবের মাধ্যমে আয় করার। এরই জের ধরে তিনি সাধারণ খাবারের ভিডিও আপলোড শুরু করলেন।

প্রথম ভিডিওতে, খুব সাধারণভাবে দর্শকদের শুভেচ্ছা জানিয়ে ইসাক একটা খাবারের প্লেটে ভাত, ডাল, শাক, টমেটো এবং একটি মরিচ নিয়ে খেতে বসেন। ধীরে ধীরে খাবার খাওয়া শেষও করেন।

ইসাক জানান, প্রায় এক সপ্তাহের মধ্যে তার ভিডিও কেউ দেখেনি। এতে তিনি হতাশ হয়ে পড়েন।

এরপর ইসাক ইউটিউবে কি ধরনের ভিডিও আপলোড হয় সেগুলো দেখতে থাকেন। তারপর তিনি একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খোলেন এবং সেখানে ভিডিও আপলোড করতে থাকেন। ধীরে ধীরে ১০-১২ জন তার ভিডিও দেখতে থাকেন।

ইসাকের প্রথম ভাইরাল ভিডিও ছিল উড়িষ্যার জনপ্রিয় একটি খাবার বাসি পাখালা খাওয়া। কয়েকদিনের মধ্যে ইসহাকের চ্যানেলে ২০ হাজারেরও বেশি গ্রাহক সাবস্ক্রাইব করেন। যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, মঙ্গোলিয়াসহ বিভিন্ন দেশ থেকে মানুষ তার খাওয়ার চ্যানেলটি দেখতে থাকেন।

দুই বছর পর, ইসাকের চ্যানেলে গ্রাহকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮ লাখেরও বেশি। তার তৈরি ভিডিওগুলি ১০ কোটি বারেরও বেশি বার দেখা হয়েছে৷ ইসাক এখন গ্রামের বিভিন্ন রান্নার ভিডিও তার চ্যানেলে শেয়ার করেন।

গত বছর, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও ‘ইন্টারনেট সেনসেশন’ হয়ে ওঠার জন্য তার প্রশংসা করেছেন।

ইসাকের ইউটিউব চ্যানেলে লোকজনের খাওয়ার ভিডিও আপলোড করা হয়। সেখানে খাওয়ার পাশাপাশি মাঝে মধ্যে দর্শকদের সঙ্গে কথাও বলা হয়।

২০১০ সালের দিকে দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপানে এই ধরনের অনুষ্ঠান শুরু হয়। পরে তা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।

ইসাক বলেন, আমি ভেবেছিলাম দর্শকরা খাবারের মাধ্যমে আমাদের জীবন কেমন তা দেখতে আগ্রহী হবেন।

তিনি জানান, ইউটিউবই ছিল তার শিক্ষক । ইউটিউব দেখেই তিনি শিখেছেন কিভাবে ভিডিও শুট করবেন, এডিট করবেন। এর জন্য তিনি প্রথমে একটি স্মার্ট ফোন কিনেছিলেন। পুরো টাকা পরে তিনি কিস্তিতে পরিশোধ করেছেন।

প্রথম ভিডিওতে তিনি দুপুরের খাবার খেতে বসে হিন্দিতে বলেছেন, হ্যালো বন্ধুরা, আপনারা এই প্লেটে যা দেখছেন আমি তা খেতে যাচ্ছি ।

ধীরে ধীরে তার ভিডিওর পদ্ধতি পরিবর্তিত হয়েছে। প্রতিটি খাবারের দৃশ্যের পরিবর্তে তিনি বিশেষ অনুষ্ঠান যেমন-গ্রামের পার্টি ভিডিও করে আপলোড করছেন।

ঘরের তৈরি খাবার খাওয়া কিংবা গ্রামের পার্টির খাবার খাওয়ার এই দৃশ্য দর্শকরাও দারুণ পছন্দ করছেন।

ইসাক স্কুলের গণ্ডি পার করেননি, ইংরেজিও সামান্য জানেন। কিন্তু নিজের চ্যানেলের প্রচারের জন্য তিনি ইমেল এবং সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করতে শিখেছেন। ভিডিওতে সাবটাইটেল যোগ করতে তিনি গুগলের সাহায্যও নিচ্ছেন।

ইসাক এখন ভালো উপার্জন করছেন তারপরও পরিবারের সঙ্গে এখনও তিনি সাধারণ খাবারই খেতে পছন্দ করেন।

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles