14.5 C
Toronto
মঙ্গলবার, এপ্রিল ১৬, ২০২৪

পেট্রোবাংলার সাবেক পরিচালক ও ছেলের ব্যাংক হিসাব জব্দ

পেট্রোবাংলার সাবেক পরিচালক ও ছেলের ব্যাংক হিসাব জব্দ - the Bengali Times

পেট্রোবাংলার সাবেক পরিচালক ও কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (কেজিডিসিএল) সাবেক এমডি আইয়ুব খান চৌধুরী এবং তার ছেলে আশিকুল্লাহ চৌধুরীর ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করতে ব্যাংকগুলোতে চিঠি দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। সম্প্রতি এনবিআরের সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট থেকে দেশের সব তফসিলি ব্যাংকে এ চিঠি পাঠানো হয়।

- Advertisement -

এদিকে দুদক সচিব জানিয়েছেন চাকরিচ্যুত উপসহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে চলা তিনটি বিভাগীয় মামলা স্থগিত করা হয়েছে। বিবেচনায় রয়েছে চাকরি ফেরতের বিষয়টিও। যে বিধিমালায় শরীফকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে তা

বিতর্কিত আখ্যা দিয়ে বাতিলের দাবি জানিয়েছেন সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। গতকাল মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মা সম্বোধন করে আকেটিবার সুযোগ চেয়েছেন শরীফ।

সূত্র জানায়, কেজিডিসিএলের সাবেক এমডি আইয়ুব খান চৌধুরীর বিরুদ্ধে নিয়োগ দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। শরীফ উদ্দিনকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে ৩০ জানুয়ারি চট্টগ্রামের খুলশী থানায় জিডি করেন শরীফ। কেজিডিসিএলে নিয়োগ জালিয়াতি ও পদোন্নতির অভিযোগ সংশ্লিষ্ট একটি অনুসন্ধান দুদকে চলছে। ওই অভিযোগে বলা হয়, ২০২০ সালে ২২ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের একটি পত্রিকায় কর্ণফুলী গ্যাসের ৩৭ ভুয়া কর্মকর্তাকে রাতের আঁধারে পদোন্নতি দেওয়ার বিষয়ে প্রতিবেদন ছাপা হয়।

এতে উল্লেখ করা হয়, নিয়োগ পরীক্ষায় ওই কর্মকর্তারা ফেল করেন। তাদের অনেকের শিক্ষাগত যোগ্যতাও ছিল না। জালিয়াতি ধামাচাপা দিতে তাদের কোনো নথিপত্র সংরক্ষণ করা হয়নি। এদের কারো কারও সনদও জাল। কেউ কেউ পাসের আগে পাস দেখিয়ে সার্টিফিকেট জমা দিয়েছেন নিয়োগের সময়। নজিরবিহীন কা-ে নিয়োগ পাওয়া সেই ‘কর্মকর্তারা’ গত ১০ বছরে পদোন্নতিও বাগিয়ে নিয়েছেন। অভিযোগের তীর আইয়ুব খানসহ একটি সিন্ডিকেটের দিকে।

২০১৪ সালের ১ অক্টোবর কেজিডিসিএলের এমডি হিসেবে নিয়োগ পান আইয়ুব খান চৌধুরী। সেখানে তার দুই ছেলেকে নিয়োগ দিতে দুর্নীতির আশ্রয় নেওয়া হয়। বড় ছেলে আশিকুল্লাহ চৌধুরীকে নিয়োগ দিতে বোর্ডের সিদ্ধান্ত এড়িয়ে যান আইয়ুব খান। বোর্ডে সিদ্ধান্ত হয় বুয়েটের মাধ্যমে পরীক্ষা নেওয়ার। কিন্তু তা না করে পেট্রোবাংলার মাধ্যমে পরীক্ষা নেন তিনি। উপব্যবস্থাপক (কারিগরি) পদের জন্য পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতা বাধ্যতামূলক হলেও জব্দ করা আশিকুল্লাহর ব্যক্তিগত নথিতে অভিজ্ঞতার সনদ খুঁজে পায়নি দুদক। এমনকি দুদকের জিজ্ঞাসাবাদেও অভিজ্ঞতার সনদ দেখাতে ব্যর্থ হন তিনি। আইয়ুব তার ছোট ছেলে মহিউদ্দিন চৌধুরীকে কেজিডিসিতে নিয়োগ দিতেও নানা অনিয়মের আশ্রয় নেন। দুদকের অনুসন্ধানে দুই ছেলের পদোন্নতি নিশ্চিত করার জন্য একজনকে টার্মিনেট করা এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া ঝুলিয়ে রাখা ও জনবল কাঠামো লঙ্ঘন করার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া যায় আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া অবৈধ সংযোগ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

দুদক অ্যাসোসিয়েশনের বিবৃতি

গতকাল দুদক সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের (ডিইউএসএ) এক বিজ্ঞপ্তিতে বিতর্কিত ৫৪(২) ধারা প্রত্যাহারে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানানো হয়। এতে বলা হয়, এই বিধিমালার কারণে সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নির্ভয়ে কাজ করতে পারছেন না। তাদের মধ্যে হতাশা, ক্ষোভ ও অস্থিরতা বিরাজ করছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে কর্মপরিবেশ।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০ ফেব্রুয়ারি দুদকের সুষ্ঠু অনুসন্ধান-তদন্তের কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা এবং বিতর্কিত ৫৪(২) ধারার বিষয়ে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগে পেন্ডিং আবেদন কমিশন কর্তৃক প্রত্যাহারের বিষয়ে দুদকের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীর পক্ষ থেকে কমিশনের সচিবের মাধ্যমে আবেদন করা হয়।

প্রধানমন্ত্রীর কারণে গুম থেকে বেঁচে গেছি

দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে জিরো টলারেন্স নীতি রয়েছে তা বাস্তবায়ন করতে গিয়েই প্রভাবশালীদের রোষানলে পড়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন শরীফ উদ্দিন। গতকাল দুদকের প্রধান কার্যালয়ে একটি বিভাগীয় মামলায় হাজিরা দিতে গিয়ে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

প্রভাবশালীদের রোষানলের কথা জানিয়ে শরীফ বলেন, দুদকের সহকর্মী, মিডিয়া সহকর্মী ও মানুষের দোয়ার কারণে আমি গুম হতে রেহাই পেয়েছি। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ নজর। তিনি ন্যায়বিচারের প্রতীক। প্রধানমন্ত্রীর কারণে গুম হওয়া থেকে বেঁচে গেছি।

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনি আমার মা। মা, আমি অসহায়। পরিবার ও বাচ্চা নিয়ে খুব সমস্যায় আছি। দুই সপ্তাহ ধরে ঘুমাতে পারছি না। আমাকে সুযোগ দেওয়া হোক। কমিশনের যত অভিযোগ রয়েছে তার ব্যাখ্যা দিতে পারব। সব ডকুমেন্ট আমার কাছে রয়েছে। আমাকে সরাসরি অপসারণ করে দুদকে আসার পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমার কাছে খুব বিব্রতকর পরিস্থিতি যে দুদকের অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি হিসেবে হাজিরা দিতে এসেছি। দুঃখজনক হলেও সত্য, অপসারিত হওয়ার পরও বিভাগীয় মামলায় হাজিরা দিচ্ছি।

দুদক সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, শরীফ চাকরি ফেরত পেতে পুনর্বিবেচনার আবেদন করেছেন। এটি কমিশন সভায় উপস্থাপন করব। তারপর তারা যেভাবে চিন্তা করেন, সেভাবেই করবেন।

দুদক সচিব বলেন, দুদক চাকরি বিধিমালা অনুযায়ী কেউ যদি চাকরি থেকে অপসারিত হন, তবে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা চলতে পারে না। শরীফের বিরুদ্ধে তিনটি বিভাগীয় মামলা রয়েছে। কমিশনের সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক সেই মামলাগুলো স্থগিত করা হয়েছে। দুদক সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের চাকরি বিধিমালা সংস্কারসহ নানা দাবির বিষয়ে সচিব বলেন, দুদকের কাজ স্বাভাবিকভাবেই চলছে। কার্যক্রম শ্লথ হয়নি। থেমে যায়নি। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নির্ভয়ে কাজ করবেন। বিধিবিধানের আলোকে কাজ করলে কোনো সমস্যা হবে না।

সূত্র : আমাদের সময়

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles