7.3 C
Toronto
বুধবার, এপ্রিল ২৪, ২০২৪

বনেই কাটিয়ে দিলেন ৩০ বছর!

বনেই কাটিয়ে দিলেন ৩০ বছর! - the Bengali Times
ওহ গো সেং এর বনবাস

শহুরে সভ্যতা আর আধুনিক প্রযুক্তির দারুণ ব্যবহারের জন্য বিশ্ব দরবারে বেশ পরিচিত নাম সিঙ্গাপুর। ছোট্ট দেশটার উঁচু ভবন ঠেলে আকাশ দেখাই দায়, বন ভূমিও তো বিরল প্রায়। আর আধুনিক এই সময়ে সবাই তো প্রযুক্তির স্পর্শেই থাকতে চায়। মেশিন নিয়ন্ত্রিত জীবনে নিজের কাজটাকে করতে চায় আরো আরামদায়ক।

তবে সেই সিঙ্গাপুরেরই একজন হেঁটেছেন পুরো উল্টো পথে। ওহ গো সেং নামের এই ব্যক্তি ৩০ বছর ধরে থাকছেন বনে। তবুও তার চোখে কোনো ক্লান্তি নাই, কপালে নাই চিন্তার ভাঁজ। ৭৯ বছর বয়সেও তার চোখের দৃষ্টি বেশ প্রখর। ওই বয়সের অন্য আট-দশ জনের চেয়ে তিনি বেশ ভালো দেখতে পান।

- Advertisement -

জীবনের ৩০টা বছর তিনি এই শহর জীবন থেকে কীভাবে নিজেকে দূর রাখলেন, কীভাবে মেটে তার নিত্য দিনের প্রয়োজন? উঠছে তেমন কিছু প্রশ্ন। সেই প্রশ্নের উত্তরটা একটু কষ্টের! নগর জীবন এড়িয়ে বনবাস বেছে নেয়া গো সেং’কেও জীবনের তাগিদে সিঙ্গাপুরের শহুরে বাজারে আসতে হয়। এবারের বড়দিনে সবজি বিক্রি করতে গিয়ে তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে ধরাও খান। কারণ, তার কাছে সবজি বিক্রির কোনো লাইসেন্স ছিলো না। করোনার আগে তিনি ফুল বিক্রি করতেন।
‘সুনগেই থেঙ্গা’ নামক গ্রামেই তার জন্ম, সেখানেই বেড়ে ওঠা। তবে সিঙ্গাপুরকে উন্নত করতে গিয়ে তার সেই গ্রাম হারিয়ে যায় ঊঁচু ঊঁচু ভবনের ভিড়ে। গ্রামের সব বাসিন্দাদেরই সরকার নতুন অ্যাপার্টমেন্ট দেয়। তবে তার ভাগ্যে কোনো ভবন জোটেনি। তার ভাই একটা বাড়ি পেয়েছিলো, সেখানে গো সেং’কে থাকার নিমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। তবে সেই বাড়িতে তিনি ওঠেননি।

তারপর বাড়ির কাছে থাকা একটা জঙ্গলে রাত কাটাতে শুরু করে সেং। শুরু হয় তার নতুন জীবন। ধীরে ধীরে সেখানেই তিনি অভ্যস্ত হয়ে যান। নিজের খাবারও নিজেই উৎপাদন করতে থাকেন। তাঁবু খাটিয়ে বানিয়ে ফেলেন ছোট্ট একটা ঘর।

গো সেং বলেন, ‘এখানে তার কখনো একা লাগে না। বাগান করেই সময় কাটিয়ে দেন।’ তবে পরিবার পরিজনহীন নন এই বনবাসী। তার এক কন্যাও আছে, পাশের দেশ ইন্দোনেশিয়ার ছোট্ট দ্বীপ বাতামে। নৌকা পারাবার করতে গিয়েই তার বাতামের বাসিন্দা মাদামের সাথে পরিচয়, সেখানেই প্রণয়; তারপর বিয়ে। এই দম্পতির ১৭ বছরের এক মেয়েও আছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে স্ত্রী আর মেয়ের সাথে দেখা করেন গো সেং। তবে দিন শেষে ফিরে আসেন নিজের ঘর, সেই জঙ্গলে। তার এই বনবাস স্ত্রী সন্তানের কাছেও এক বড় বিস্ময়।

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles