2.7 C
Toronto
মঙ্গলবার, মার্চ ২৫, ২০২৫

সান্ত্বনা খুঁজে পাচ্ছেন না দুই দেশে কলঙ্কিত টিউলিপ

সান্ত্বনা খুঁজে পাচ্ছেন না দুই দেশে কলঙ্কিত টিউলিপ - the Bengali Times
টিউলিপ সিদ্দিক

দুর্নীতির একাধিক অভিযোগে সমালোচনার মুখে যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনীতিবিষয়ক মিনিস্টারের (ইকোনমিক সেক্রেটারি) পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন টিউলিপ সিদ্দিক। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি। এর আগে গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন তার খালা বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মা শেখ রেহানা।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক নিবন্ধে বলা হয়, রাজনীতির খেলায় দুই দেশেই কলঙ্কিত টিউলিপ সান্ত্বনা খুঁজে পাচ্ছেন না।

- Advertisement -

গার্ডিয়ানের ওই নিবন্ধে বলা হয়, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস সদ্য পদত্যাগ করা ব্রিটিশ ট্রেজারি মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনেছেন। ড. ইউনূস দুর্নীতির এ অভিযোগকে ‘সরাসরি ডাকাতি’ আখ্যা দিয়ে টিউলিপকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

অর্থপাচারের সঙ্গে টিউলিপের জড়িত থাকার অভিযোগ উঠার পর থেকেই পরিস্থিতি দ্রুত পাল্টে যায়। টিউলিপ যুক্তরাজ্যের সরকারি প্রতিনিধিদলের চীন সফর থেকে বিরত থাকেন এবং প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা লরি ম্যাগনাসের কাছে অভিযোগ তদন্তের দাবি জানিয়ে গত সপ্তাহে পদত্যাগ করেন। টিউলিপ তার বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতির অভিযোগ ‘সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন’ বলে দাবি করেন।

চলতি মাসে ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, টিউলিপকে তার খালা ও বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ এক ডেভেলপার লন্ডনে একটি দুই-বেডরুমের ফ্ল্যাট উপহার পেয়েছেন। তবে টিউলিপের দাবি, এই ফ্ল্যাটটি তিনি তার বাবা-মায়ের কাছ থেকে পেয়েছেন এবং ম্যাগনাসকে জানান, এই বাড়িটি যে একজন বাংলাদেশি ব্যবসায়ীর উপহার তা তিনি সম্প্রতি জানতে পেরেছেন।

সংকটে অর্থনীতি, বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি নামবে ৪.১ শতাংশেসংকটে অর্থনীতি, বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি নামবে ৪.১ শতাংশে
এর আগে ২০১৮ সাল পর্যন্ত টিউলিপ হ্যাম্পস্টেডের একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন, যা তার ছোট বোনের। ওই ফ্ল্যাটটিও শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ আরেক ব্যবসায়ী উপহার দিয়েছিলেন। টিউলিপ বর্তমানে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত এক ব্যবসায়ীর ভাড়া বাড়িতে বসবাস করছেন। ২০১৫ সালে সিদ্দিক প্রথম পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হন। নির্বাচনে জয়ের পর তিনি তার সমর্থকদের ধন্যবাদ জানান, বিশেষ করে ব্রিটিশ আওয়ামী লীগের বাংলাদেশি সদস্যদের সমর্থনের কথা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন।

গার্ডিয়ানের নিবন্ধে বলা হয়, ২০১৩ সালে ১২ বিলিয়ন ডলারের পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে চুক্তি অনুষ্ঠানে টিউলিপ সিদ্দিকের উপস্থিতি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। ছবিতে তাকে তার খালা শেখ হাসিনা ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা গেছে।

টিউলিপ দাবি করেন, এটি স্রেফ একটি পারিবারিক সফর এবং তিনি সেখানে গিয়েছিলেন পর্যটক হিসেবে। ম্যাগনাস তার ব্যাখ্যা মেনে নিয়েছেন। তবে এখন টিউলিপ বাংলাদেশের ওই চুক্তি নিয়ে দুর্নীতির তদন্তের মুখোমুখি।

এদিকে, লরি ম্যাগনাস লন্ডনে টিউলিপের বাড়িগুলোর বিষয়েও কোনো নিয়ম ভঙ্গের প্রমাণ পাননি এবং লেনদেনের বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেননি। তবে তিনি জানিয়েছেন, তার কাছে তথ্য ছিল কম এবং টিউলিপের পারিবারিক সম্পর্কের কারণে সৃষ্ট ভাবমূর্তি ঝুঁকি সম্পর্কে আরও সচেতন হতে পারতেন। তিনি এটাও উল্লেখ করেন, প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার টিউলিপের দায়িত্ব পালনের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করতে চাইলে করতে পারেন। একপর্যায়ে পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছায়, টিউলিপ পদত্যাগে বাধ্য হন।

নিবন্ধে বলা হয়, রাজনীতি একটি নির্মম ক্ষেত্র। টিউলিপ এমন দুটি জগতের অংশ হয়ে উঠেছিলেন, যেখানে আলাদা নিয়মে খেলা চলে। এখন তার পরিবারের সুনাম বাংলাদেশ এবং যুক্তরাজ্য—উভয় জায়গায়ই কলঙ্কিত। আর তিনি কোনো জায়গাতেই সান্ত্বনা খুঁজে পাচ্ছেন না। – গার্ডিয়ানের নিবন্ধ

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles