-0.9 C
Toronto
বৃহস্পতিবার, মার্চ ২৭, ২০২৫

আমার আর সংসারী হওয়ার ইচ্ছা নেই: শাবনূর

আমার আর সংসারী হওয়ার ইচ্ছা নেই: শাবনূর - the Bengali Times
ছবি সংগৃহীত

নব্বই দশকের বাংলা চলচ্চিত্রের তুমুল জনপ্রিয় নায়িকা শাবনূর। নিজের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে দর্শকদের উপহার দিয়েছেন অসংখ্য জনপ্রিয় ছবি। তবে তিন দশকের ক্যারিয়ার জীবনের শেষটা যেন অনেকটা রঙহীন তার। বেশ কয়েক বছর হলো অভিনয়ে খানিকটা বিরতি নিয়েছেন এই নায়িকা। হয়েছেন প্রবাসী। সন্তানকে নিয়ে বছরের বেশিরভাগ সময় অস্ট্রেলিয়াতেই থাকেন তিনি।

বাংলা সিনেমার ‘স্বপ্নের নায়িকা’ খ্যাত এই অভিনেত্রী আজ (১৭ ডিসেম্বর) জীবনের ৪৬ বছরে পা দিলেন। ৪৬ তম জন্মদিনেও শাবনূরকে স্মরণ করছেন তার অনুরাগীরা। সামাজিক মাধ্যমে প্রিয় নায়িকাকে নিয়ে ছবি, শুভেচ্ছা বার্তায় ভরিয়ে দিচ্ছেন ভক্তরা।

- Advertisement -

এরই মধ্যে জন্মদিন উপলক্ষ্যে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন শাবনূর। কিন্তু সেখানে স্বাভাবিকের তুলনায় এবার নিজের জীবন নিয়ে বেশিই আক্ষেপ করলেন নায়িকা। তবে কি ভালো নেই এই ঢালিউড কুইন?

ব্যক্তিগত জীবন বহু চড়াই-উতরাইয়ের ওপরেই কেটেছে শাবনূরের। আবেগাপ্লুত হয়ে শাবনূর বললেন, ‘দীর্ঘ দেড় যুগের ক্যারিয়ারে যত ঝড়ঝাপটা আমার ওপর এসেছে পৃথিবীর অন্য কোনো শিল্পীকে বোধহয় অতটা করতে হয়নি। প্রথম ছবি ‘চাঁদনী রাতে’র প্রযোজক আজিজ মোহাম্মদ ভাই, নায়ক সালমান শাহ, নায়ক রিয়াজ, ফেরদৌস, এক বিদেশি নাগরিককে আমার সঙ্গে জড়িয়ে মিথ্যে সম্পর্কের গুঞ্জন, সালমানের হত্যা/আত্মহত্যার জন্য অভিযুক্ত হওয়া, একাধিকবার এফডিসির বিভিন্ন সমিতি কর্তৃক ব্যান হওয়া, কী ফেস করতে হয়নি আমাকে! একইসঙ্গে পারিবারিক নানা টানাপোড়েনে অতিষ্ঠ ছিল আমার জীবন।’

মূলত বিচ্ছেদ তার জীবন অতিষ্ঠ হওয়ার কারণ ছিল বলে জানান শাবনূর। কিন্তু সে থেকেও নিজেকে সামলে নিয়েছেন নায়িকা। শাবনূরের কথায়, ‘অন্য যে কেউ হলে বোধ হয় পাগল হয়ে যেত, সমস্যা ভুলে থাকার জন্য মাদকের আশ্রয় নিত বা আত্মহত্যা করত। আমি কিন্তু সব নেগেটিভকে মনের জোরে পাশ কাটিয়ে জীবনটাকে পজিটিভবলি গড়ে তুলতে পেরেছি।’

সেই বিচ্ছেদ থেকেই সংসার জীবন নিয়ে তিক্ততা শাবনূরের। তীব্র ইচ্ছাশক্তি থেকে নিজেকে সামলে নিলেও সাংসারিক হওয়ার আর কোনো ইচ্ছে নেই বলে স্পষ্ট জানান নায়িকা। হতাশা প্রকাশ করে শাবনূর বলেন, ‘আমার আর সংসারী হওয়ার কোনো ইচ্ছা নেই। বিয়ের পর স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়া যে কোনো নারীর জন্য ভয়ংকর অভিজ্ঞতা, যে কারণেই বাধ্য হয়ে স্বামীকে ডিভোর্স দিতে হয়েছে।’

শাবনূর এও বলেন, ‘তবে আমার আর বিয়ের ইচ্ছা না থাকার কারণ হচ্ছে একমাত্র পুত্র আইজানকে প্রতিষ্ঠা করা। সত্যিকারের মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা।’

কাজে ফেরা প্রসঙ্গে শাবনূর বলেন, ‘গত বছর রঙ্গনা নামে এক ছবিতে অভিনয়ের কাজ শুরু করেছিলাম। নানা কারণে ছবিটির কাজ এখনো শেষ হয়নি। শিগগিরই কাজে ফেরার ইচ্ছা আছে।’

ঢাকাই সিনেমার একসময়ের তুমুল জনপ্রিয় নায়িকা শাবনূরের সংসার ভেঙে যায় ২০২০ সালে। এর সাত বছর আগে নায়ক অনিক মাহমুদ হৃদয়কে বিয়ে করে সুখী হতে চেয়েছিলেন শাবনূর। স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়া ২০২০ সালের ২৬ জানুয়ারি অনিককে তালাক দেন নায়িকা।

২০১১ সালের ৬ ডিসেম্বর অনিকের সঙ্গে শাবনূরের আংটি বদল হলেও ২০১২ সালের ২৮ ডিসেম্বর বিয়ে করেন তারা। ২০১৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর তাদের কোলজুড়ে আসে আইজান নিহান নামে এক পুত্রসন্তান।

তালাক নোটিশে শাবনূর বলেছিলেন, ‘আমার স্বামী অনিক মাহমুদ হৃদয় সন্তান এবং আমার যথাযথ যত্ন ও রক্ষণাবেক্ষণ করেন না। সে মাদকাসক্ত। অনেকবার মধ্যরাতে মদ্যপ অবস্থায় বাসায় এসে আমার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়েছে। আমাদের ছেলের জন্মের পর থেকে সে আমার কাছ থেকে দূরে সরে থাকছে এবং অন্য একটি মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে আলাদা বসবাস করছে।

একজন মুসলিম স্ত্রীর সঙ্গে তার স্বামী যে ব্যবহার করেন অনিক সেটা করছেন না, উল্টো নানাভাবে আমাকে নির্যাতন করে। এসব কারণে আমার জীবনে অশান্তি নেমে এসেছে। চেষ্টা করেও এসব থেকে তাকে ফেরাতে পারিনি। বরং আমার সন্তান এবং আমার ওপর নির্যাতন আরো বাড়তে থাকে। উপরোক্ত কারণগুলোর জন্য মনে হয়ে তার সঙ্গে আমার আর বসবাস করা সম্ভব নয় এবং আমি কখনো সুখী হতে পারব না।

তাই নিজের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ এবং সুন্দর জীবনের জন্য তার সঙ্গে সব সম্পর্ক ছেদ করতে চাই। মুসলিম আইন এবং শরিয়ত মোতাবেক আমি তাকে তালাক দিতে চাই। আজ থেকে সে আমার বৈধ স্বামী নয়, আমিও তার বৈধ স্ত্রী নই।’

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles