-0.5 C
Toronto
রবিবার, মার্চ ২৩, ২০২৫

মায়া রিভারা : তৃতীয় পর্ব

মায়া রিভারা : তৃতীয় পর্ব - the Bengali Times
মায়া রিভারা

নাস্তা শেষ করে আমরা গেলাম জ্ঞান অর্জন করতে। ৬ফুট ৩ ইঞ্চি লম্বা এবং ২৫০ পাউন্ড ওজনের একজন লোক আমাদের সবাইকে নিয়ে গেলো মিটিং রুমে। বিস্তারিত ভাবে বর্ণনা করলো আমাদের সব কিছু। মায়া রিভারার পুরো শহরটিতে এবং শহরের বাইরে দর্শনীয় জায়গাগুলোতে আমরা যদি কেউ যেতে আগ্রহী হই টিকেট কিনে নেবার জন্য। একেক জনের ২০০ ইউ এস ডলার করে টিকেট দূর যাত্রা ভ্রমনগুলোতে । আমরাও দুটো টিকেট কিনে ফেললাম।

মিটিং শেষে আবার রুমে আসলাম। আমরা এখন যাবো সমুদ্র সৈকতে। নিজেদের তৈরী করে নিলাম সেখানে যাবার মতো করে । কাঁধে বীচ ব্যাগ ঝুলিয়ে এবং মেয়ের গুছিয়ে দেয়া সব রকম প্রতিরোধ মুলক জিনিষ পত্র নিয়ে নীচে নেমে আসলাম। আমাদের রেজোট হোটেলটি মাক্সিকো উপসাগরের গা ঘেঁষে অবস্থিত। হোটেল বিল্ডিং থেকে আট দশ মিনিট হাঁটলেই অসাধারন সুন্দর সমুদ্র সৈকত। চলার পথে দেখলাম কিযে সুন্দর করে সাজানো গুছানো চলার পথটুকু। পথের সৌন্দয্য উপভোগ করতে করতে আমার ভালবাসার সমুদ্র সৈকতে এসে বসলাম।

- Advertisement -

বসে আছি সমুদ্র সৈকতে। ঝিরি ঝিরি বাতাস বয়ে যাচ্ছে। নারিকেল গাছ ও পাম্প ট্রি গায়ে গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে ছায়া বিলিয়ে যাচ্ছে। অসংখ্য আরাম করে শুয়ে বসে থাকার চেয়ার বিছানো আছে সারাটা সমুদ্র তীর জুড়ে। আমিও আরাম করে বসে দৃশ্য দেখছি সমুদ্রের এবং চারপাশের। সাগর থেকে ছুটে আসা সাদা ফেনিত ঢেউ একের পর এক ছুঁয়ে যাচ্ছে বালুচর। সাঁতারের কাপড় পড়া নর নারী তরুন তরুণী ঝাপাঝাপি করছে পানিতে। স্বল্প কাপড় পড়া মানুষের বিচরন সমুদ্র সৈকতে। মানুষের চলা ফেরা দেখে আমি অনেকটা সময় কাটিয়ে দিতে পারি। যার ফলে যেখানে মানুষের চলাফেরা আছে সেখানে আমি সঙ্গীহীন অবস্থায় থাকি যদি আমার কোন সমস্যা হয় না। দিব্যি সময় কাটিয়ে দেই বিনা দ্বিধাতে। মানুষদের দেখে মানুষের জীবন নিয়ে ভাবতে বসি। এ এক অদ্ভুত স্বভাব আমার।

সমুদ্র তীরে আসার আগে ভেবে ছিলাম চরম সূর্য তাপে পুড়ে ছারখার হয়ে যাবো। কিন্তু না আজকে সূর্যের তেমন তাপ নেই। খুব হালকা রোদ আর মন মাতানো হওয়া পাগল করে দিচ্ছে আমাকে। এসব জায়গাতে আসলে মনে হয় জীবন কত সুন্দর। মাঝে মাঝে মনে হয় আমরা মানুষগুলো কেনো প্রকৃতির মতো সুন্দর, উদার, নির্ভেজাল হতে পারি না?

কিন্তু একটা জিনিষ আশ্চয্য হয়ে লক্ষ করলাম এখানে কোন গাংচিলের বিচরন নেই। আমি এখন পর্যন্ত এমন কোন নদী, সাগর কিংবা খাল বিলের ধার দেখিনি যেখানে গাংচিলের চলাফেরা নেই । তাহলে এখানে নেই কেন? হয়তো এত মানুষের কোলাহল ওদের বিরক্তি সৃষ্টি করে। ছোটবেলা থেকে পাখি নিয়ে গবেষণার ব্যাপারটা আমার মাঝে কাজ করে। পাখিদের দেখার জন্য তাদের সম্পর্কে জানার জন্য কত সময় যে আমি কাটিয়েছি পাখির পেছনে ঘুরেঘুরে।

কি পাখি এটা? কি অসাধারন দেখতে কুচকুচে চকচকে কালো রঙ। এমনকি ঠোটটা পর্যন্ত কালো। মনে হোল এযেনো পাখিদের’ বিউটি কুইন’। এই পাখিতো আমি জীবনে কখনো দেখিনি। কি নাম পাখিটার? কাউকে জিজ্ঞাস করে নেবো। পাখিটার মাঝে কেমন যেনো একটা অহমিকা ভাব আছে। সুন্দর ছড়ানো লম্বা ল্যাজটা দুলিয়ে একা একা ঘুরে বেড়াচ্ছে। কাউকে নিয়ে ভাববার যেনো তার কোন সময় নেই। পাখিটি একা কেনো এত বড় একটা বালুচরে? এ ভাবনাটা আমাকে ভালো করে পেয়ে বসলো।

ম্যাল্টন, কানাডা

- Advertisement -
পূর্ববর্তী খবর
পরবর্তী খবর

Related Articles

Latest Articles