
‘সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে আমার প্রাণের সংগঠন। আমি এই পরিচয়ে শহীদ হব’— গতকাল সোমবার রাতেই নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এই স্ট্যাটাস দিয়েছিল চট্টগ্রাম কলেজের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের অনার্স তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ওয়াসিম আকরাম। ওই স্ট্যাটাসের সঙ্গে ছিল কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানো কয়েকটি ছবিও ছিল ওই স্ট্যাটাসে। ওই স্ট্যাটাস দেওয়ার পরদিনই আন্দোলনে অংশ নিতে গিয়ে সংঘর্ষে প্রাণ হারালেন ওয়াসিম।
নিহত ওয়াসিম আকরামের বাড়ি কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলার মেহেরনামা গ্রামের সবুর আলমের ছেলে। চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের আহ্বায়ক সায়ফুল আলম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ওয়াসিম ছিলেন ছাত্রদলের একজন সক্রিয় নেতা। চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন তিনি। কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেতাকমীর্দের নিয়ে মঙ্গলবার সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে রাজপথে নেমেছিলেন। এ সময় নগরীর মুরাদপুর এলাকায় ছাত্রলীগের হামলায় প্রাণ হারান ওয়াসিম।
মৃত্যুর আগে ফেসবুকে যা লিখেছিলেন গুলিতে নিহত আবু সাঈদমৃত্যুর আগে ফেসবুকে যা লিখেছিলেন গুলিতে নিহত আবু সাঈদ
ওয়াসিমের বন্ধুদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, নগরীর বহদ্দার হাট এলাকায় একটি বাসায় থাকতেন ওয়াসিম। দলীয় যে কোন কর্মসূচিতে সবসময় সক্রিয় থাকতেন। মঙ্গলবার দুপুর থেকেই কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নেন মুরাদপুর এলাকায়। সেখানে ছাত্রলীগের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষ হয় তাদের। গুলি, ককটেল ও ইট পাটকেল নিয়ে চলে হামলা পাল্টা হামলা। এক পর্যায়ে ওয়াসিমকে নাগালে পেয়ে যায় প্রতিপক্ষ। এসময় কয়েক দফা ছুরিকাঘাত করা হয় তাকে। আহত অবস্থায় বেধড়ক পেটানো হয় তাকে। সহপাঠীরা সেখান থেকে উদ্ধার করে তাকে নিয়ে যায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। হাসপাতালে পৌঁছার আগেই মারা যান তিনি।
নিহত ওয়াসিম আকরামের ফেসবুকে আজ মঙ্গলবার বিকাল তিনটার দিকে সর্বশেষ স্ট্যাটাসে সবাইকে ষোলশহর যাওয়ার আহ্বানও জানিয়েছিলেন।