13.9 C
Toronto
রবিবার, মে ৪, ২০২৫

গণহত্যা যাদুঘরের ১০ম বর্ষপূর্তি

গণহত্যা যাদুঘরের ১০ম বর্ষপূর্তি - the Bengali Times

খুলনায় গণহত্যা জাদুঘরের নতুন ভবনেই এবার উদযাপিত হলো গণহত্যা যাদুঘরের ১০ম বর্ষপূর্তি ।এই নতুন ভবন নির্মাণে অসাধ্য সাধন করলেন মুনতাসীর মামুন। একা একটি স্বপ্নকে লালন করে ছোট্ট সঙ্গী দল, সামান্য জনবল নিয়ে তা বাস্তবে পরিণত করে ছাড়লেন।এটি সদা কর্মঠ মুনতাসীর মামুনের পক্ষেই সম্ভব। তাও ঢাকা থেকে এত দূরে খুলনায়। যেখানে কোন বিমানবন্দর নেই,প্লেন নামে না। তবে স্বপ্নবাজ মামুন ভাইয়ের অভিধানে বাঁধা বলে কোন শব্দ নেই। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনে পাওয়া জমিতে ছিলো দুইতল বিশিষ্ট অসুস্থ একটি বাড়ি। সেটিকেই পরিস্কার পরিছন্ন করে ১০ বছর আগে শুরু করে ছিলেন মুক্তিযুদ্ধে এতবড়ো গণহত্যার হাজারো তথ্য প্রমাণ সহ সেই প্রথম গণহত্যা জাদুঘর। আজ মাত্র ১০ বছরেই এটি এশিয়ার জেনোসাইড মিউজিয়াম হিসেবে দ্বিতীয়। গত ১০ বছর যতবার দেশে এসে ধানমন্ডি বাসায় দেখা করতে গিয়েছি প্রায় দিনই পাইনি তাকে। গরমে শীতে বর্ষার দিনে যশোর প্লেনে গিয়ে সেখান থেকে বাইরোডে খুলনা গেছেন তিনি।। তার ছায়াসঙ্গী থাকতেন তরুণ ড.চৌধুরী শহীদ কাদের। আজ আকাশে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে নামী তরুণ স্থপতি আসিফ ভুঁইয়ার ডিজাইনে করা ছয়তলা আধুনিক গণহত্যা জাদুঘর।এতো শুধু মুনতাসীর মামুনের গর্ব নয়!

- Advertisement -

শুধু মুনতাসীর পরিবারের ও নয়! গোটা বাংলাদেশের বাঙালির গর্ব! এমন কি পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিদরও। আমাকে মামুন ভাই আমন্ত্রণ করায় হাজারো কাজের ঝামেলা ফেলে রেখে ১৬মে মধ্যরাতে প্রায় ৩০বছর পর এসে নামলাম খুলনা। প্রথমবার এসে ছিলাম যখন আমি বিটপীতে সিনিয়র আর্ট ডিরেক্ট হিসেবে কর্মরত। আমেরিকান মোবিল কোম্পানী আমরা বিট করে ছিনিয়ে এনে ছিলাম। কোটি-কোটি টাকার বাজেট। তারই সেলিব্রেশান পার্টি হবে ঠিক করা হলো তিন ভ্যানু খুলনা,চট্টগ্রাম, ঢাকা। শাকিলা জাফার,শুভ্র দেব আর এক ঝাঁক নারী মডেলসহ তখন খুলনা এসে ছিলাম প্রথম বার। এবার মধ্যরাতে রয়েলের মোড়ে নামতেই দেখি মামুন ভাই প্রেরিত বাবু মহাশয় বাহন নিয়ে অপেক্ষায় ছিলেন। নিয়ে গেলেন রূপসা স্ট্যান্ড রোডে খৃষ্টান সার্ভিস সোসাইটির সি এস এস আভা সেন্টারে। কিযে দারুণ দুই কিংবা তিন স্টার হোটেল হয়েও এক অন্য রকম মার্জিত পরিস্কার রুচিশীল,হয়তো খৃষ্টান সার্ভিস সোসাইটির বলেই এমন। বিশষ করে পেছনে কয়েক একর জমিতে গাছে ফুলে সমাধিতে ভরা বাগান।বিশাল খাঁচায় সুখেই রয়েছে অনেক হরিণ আর পায়রা,লাভবার্ড সহ অনেক ধরনের পাখি।

ঢাকা এমন পরিবেশ সাময়িক থাকার জন্যে কল্পনাতেই আসে না। পরে ভিডিও সহ CSS নিয়ে বিস্তারিত লিখবো। সকাল ১০টায় অনুষ্ঠান শুরু। খুলনার মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক অনুষ্ঠান উদ্বোধন করে বলেন -আমি ঘোষণা করছি সামনের রাস্তার নাম গণহত্যা জাদুঘর সড়ক হবে সহসা। ঢাকা থেকে এসেছেন বাংলাদেশ সরকারের সবচে সুন্দর ও স্বাস্থ সচেতন প্রতিমন্ত্রী মাননীয়া নাহিদ ইজহার খান,সংস্কূতিক বিষয়ক মন্ত্রনালয়।সদ্য মন্ত্রী হয়েই চষে বেড়াচ্ছেন বাংলাদেশে শহরগুলো।গত ১০ মে সঙ্গীতজ্ঞ কলিম শারাফীর শততম জন্মবার্ষিকী অনুষ্ঠানেও দারুণ ভাষণ দিয়ে ছিলেন তিনি। এমনিতে বাংলাদেশী মাননীয় মন্ত্রীদের পাশে দাম ড়িয়ে ছবি তোলার সাধ ইচ্ছে আমার কোনো কালেই নেই।নিজের ছবির প্রদর্শনীতেও তারা সাধারণ দর্শক হিসেবেই আসেন যদি কেউ ইচ্ছে করেন।এদেশে মন্ত্রীরা সময় ঠিক রাখতে পারেন না,ভোগান খুব।কানাডার ব্যাপার আলাদা মন্ত্রীদের বিশেষ অতিথি হিসেবে ডাকলে অন্য ঝামেলায় পড়তে হয়!

আধঘন্টা আগে এসে ঘুরেঘুরে ছবি সম্পর্কে জানতে চান। প্রদর্শনী শুরুর আগে অত প্যাঁচাল পাড়তে ইচ্ছে কার করে! দুপুরে গোটা হল ভর্তি দর্শকদের জাদুঘরের ডাইনিং হলে ফ্রী লাঞ্চের কুপন দেয়া হয়েছিলো। মুনতাসীর পরিবার ও গণ্যমাণ্য অতিথিদের খুলনা ক্লাবে দারুণ সব খাওয়ার বুফে লাঞ্চের ব্যবস্থা ছিলো।খাওয়া শেষে দই মিষ্টি পরিবেশন কালে দেখি প্রতিমন্ত্রী নাহিদ ইজহার খান কাছেই দাঁড়িয়ে আছেন। তরুণ ট্রাস্টি সম্পাদক ড. চৌধুরী শহীদ প্রতিমন্ত্রী নাহিদের সঙ্গে আমার পরিচয় করিয়ে যখন বল্লেন ছবি তুলবেন? কেন যেন হ্যাঁ বলে দাঁড়িয়ে পড়লাম! এমন মার্জিত সুন্দর শিক্ষিত মন্ত্রী বাংলাদেশে আর কই! তারপর তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। মামুন ভাই,আমাকে আপনার এই সাফল্যের দিনে আমন্ত্রণ করার জন্যে ধন্যবাদ। শুভ কামনা করি সরকারী সাহায্য বাড়লে এশিয়ার শ্রেষ্ঠ নমপেন গণহত্যা জাদুঘরকে খুলনা হয়তো ধরে ফেলবে।

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles