14.4 C
Toronto
শুক্রবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৪

ফুলপরীর ভিডিও ধারণ, হাইকোর্টে সেই মোবাইল জমা দেওয়ার নির্দেশ

ফুলপরীর ভিডিও ধারণ, হাইকোর্টে সেই মোবাইল জমা দেওয়ার নির্দেশ

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থী ফুলপরী খাতুনের আপত্তিকর ভিডিও যে মোবাইল ফোন দিয়ে ধারণ করা হয়েছিল, সেটি সংগ্রহ করে আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।

- Advertisement -

একই সঙ্গে ইবি শিক্ষার্থীদের ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নিরাপত্তা দিতে কুষ্টিয়া ও পাবনার পুলিশ সুপারদের (এসপি) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

রিটকারী আইনজীবী গাজী মো. মহসীন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এছাড়া এ বিষয়ে আদেশ দেওয়ার জন্য আগামী ৮ মার্চ পরবর্তী দিন ঠিক করেছেন আদালত।

এ সংক্রান্ত রিটের শুনানি নিয়ে বুধবার (১ মার্চ) হাইকোর্টের বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ফুলপরীর ভিডিও ধারণ করা হয়েছিল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের ছাত্রী হালিমা আক্তার ঊর্মির মোবাইল ফোন দিয়ে। সেটি সংগ্রহ করে ধারণ করা ভিডিও উদ্ধার করে তা আদালতে দাখিল করতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

আদালতে এদিন রিট আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন গাজী মো. মহসীন। তার সঙ্গে ছিলেন আজগর হোসাইন তুহিন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।

গতকাল মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ইবি ছাত্রী ফুলপরী খাতুনকে কক্ষে আটকে রেখে রাতভর মারধর ও শারীরিক নির্যাতন করে ভিডিও ধারণের ঘটনায় পৃথক দুটি প্রতিবেদন হাইকোর্টে উপস্থাপন করা হয়। প্রতিবেদনগুলোর একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্দেশে গঠিত তদন্ত কমিটির, অন্যটি করেছে উচ্চ আদালতের নির্দেশে গঠিত জেলা প্রশাসকের (ডিসি) কমিটি।

আদালতে প্রতিবেদন দুটি উপস্থাপন করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়। দুটি প্রতিবেদনেই ওই ছাত্রীকে পাশবিক ও অমানবিক নির্যাতনের সত্যতা পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি হল কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও প্রক্টরের উদাসীনতার কথাও উভয় প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে।

এরপর আদালত রিটকারী আইনজীবীকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত আইন ও বিধি সংগ্রহ করতে এবং ইবির কোনো আইনজীবী থাকলে তাকে বিষয়টি জানাতে বলেন। এছাড়া আইনের বিষয়ে রাষ্ট্র ও রিটকারীদের জানাতে বলা হয়। আর আদেশের জন্য বুধবার দিন রাখেন। মঙ্গলবার শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এরই ধারাবাহিকতায় আজ এই আদেশ দেন আদালত।

গত ১৫ ফেব্রুয়ারি আইন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. রেবা মণ্ডলকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কমিটি ১৮ ফেব্রুয়ারি তাদের কার্যক্রম শুরু করেন। ভুক্তভোগী, অভিযুক্ত ও সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে ২৩ ফেব্রুয়ারি দিনভর পর্যালোচনায় বসেন তারা।

গত ১২ ফেব্রুয়ারি ইবির দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে রাত সাড়ে ১১টা থেকে রাত প্রায় ৩টা পর্যন্ত শারীরিক নির্যাতনের শিকার হন প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ফুলপরী খাতুন। তিনি ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী। অভিযোগ ওঠে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীর অভিযোগ, তারা ওই শিক্ষার্থীকে মারধর করে তার বিবস্ত্র ভিডিও ধারণ করে রাখেন।

এ ঘটনায় ১৩ ফেব্রুয়ারি সকালে ভয়ে হল ছেড়ে বাসায় চলে যান ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। র্যাগিংয়ের নামে শারীরিক ও মানসিকভাবে হেনস্তার বিচার ও নিরাপত্তা চেয়ে মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) হল প্রভোস্ট, প্রক্টর ও ছাত্র-উপদেষ্টা দপ্তর বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে হল প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং শাখা ছাত্রলীগ পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করে।

এর মধ্যে বিষয়টি নিয়ে জনস্বার্থে হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী গাজী মো. মহসীন। হাইকোর্ট প্রশাসন ক্যাডার, বিচার বিভাগ ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সমন্বয়ে একটি কমিটি করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেন। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের গঠিত কমিটির প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশও দেন।

এদিকে ফুলপরী খাতুন নামের ওই ছাত্রীকে নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত পাঁচ ছাত্রীর আবাসিক হলের সিট বাতিল করেছে দেশরত্ন শেখ হাসিনা হল কর্তৃপক্ষ। তাদের সবাইকে আগামী ১ মার্চের মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বহিষ্কৃত ছাত্রীরা হলেন- ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, তাবাসসুম ইসলাম, হালিমা আক্তার ঊর্মি, ইশরাত জাহান মীম এবং মোয়াবিয়া জাহান।

সূত্র : জাগো নিউজ

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles