5.6 C
Toronto
মঙ্গলবার, এপ্রিল ১৬, ২০২৪

পাক-ভারতের প্রেমের গল্প শেষ হলো কারাগারে

পাক-ভারতের প্রেমের গল্প শেষ হলো কারাগারে
ছবি সংগৃহীত

গত জানুয়ারিতে এক দম্পতিকে প্রেপ্তার করে ভারত। তাদের অপরাধ, একজন ভারতীয় পুরুষ একজন পাকিস্তানি নারীকে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ এবং নকল আইডি কার্ড পেতে সহায়তা করা। সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী হলেও জাতীয়তা ভিন্ন। এ যেন ঠিক ভারতের বিখ্যাত সিনেমা ‘বীর-জারা’-এর গল্প।

ভারতের নাগরিক মুলায়াম সিং যাদব (২১) এবং ১৯ বছর বয়সী ইকরা জিওয়ানি পাকিস্তানের নাগরিক। তাদের দেখা হয়েছে তিন বছর আগে। অনলাইনে ‘বোর্ড গেম লুডু’ খেলতে গিয়ে তারা প্রেমে পড়েন। তবে তারা জানত না এই প্রেম এগিয়ে নিতে, কত কঠিন পথ পাড়ি দিতে হবে।

- Advertisement -

তাদের প্রেমের গল্পটি শুরু ২০২০ সালে। যখন কোভিড লকডাউন শুরু হয়েছিল। যাদব ভারতের বেঙ্গালুরুতে একটি আইটি সংস্থার নিরাপত্তা প্রহরীর কাজ করতেন এবং জিওয়ানি পাকিস্তানের হায়দরাবাদে পড়াশুনা করতেন। জিওয়ানিকে তার পরিবারের বিয়ে করার জন্য চাপ দিচ্ছিল। তখন যাদবের পরামর্শেই তিনি পাকিস্তান ছেড়ে দুবাই হয়ে নেপাল আসেন। তাদের প্রথম দেখা হয়। পুলিশ বলছে, দুইজন নেপালের একটি মন্দিরে হিন্দু রীতি অনুসারে বিয়ে করে ভারতে আসেন।

ভারতে ভালোই চলছিল তাদের সংসার। কিন্তু জানুয়ারিতে তাদের সুখী জীবনে নেমে আসে অন্ধকার। অবৈধভাবে স্ত্রী ইকরা জিওয়ানিকে ভারতে প্রবেশ করানোর জন্য প্রেপ্তার করা হয় স্বামী যাদবকে। সঠিক কাগজপত্র ছাড়াই কোনো বিদেশি নাগরিককে আশ্রয় দেওয়া ও জালিয়াতির অভিযোগে অভিযুক্ত করা যাদবকে।

পুলিশ জানায়, যাদব প্রতিদিন কাজে বেরিয়ে পড়ত এবং স্ত্রী জিওয়ানি বাড়িতেই থাকতেন। তবে প্রায়শই পাকিস্তানে থাকা তার মার সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ কলে কথা বলতেন। সেখান থেকেই পুলিশ প্রথমে টের পায়।

তখন ব্যাঙ্গালোরের পুলিশ কর্মকর্তারা খুব সতর্ক অবস্থায় ছিল। কারণ ভারতে দুটি বড় আন্তর্জাতিক ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তাই তাদের কাছে এই বিষয়টি ধরা পড়ে যায়। অনেক তদন্ত শেষে পুলিশ তাদের আটক করে। তদন্ত এখনো চলছে বলে জানা গেছে।

বর্তমানে তাদের প্রেমের পরিণতি জেল। স্ত্রী ইকরা জিওয়ানিকে পাকিস্তানে ফেরত পাঠানো হয় আর যাদবকে পাঠানো হয় জেলে। জিওয়ানি পাকিস্তানে তার পরিবারের কাছে ফিরেছেন বলে তার বাবা নিশ্চিত করেছেন। পাকিস্তানের সংবাদ মাধ্যম পিটিআই এর বরাত দিয়ে বিবিসি এই তথ্য জানিয়েছে।

যাদবের পরিবারের সদস্যরা বর্তমানে বিধ্বস্ত অবস্থায় আছেন। তারা বলছেন, এটি শুধুই একটি দম্পতির প্রেমের গল্প। এটা কোনো অপরাধ নয়।

যাদবের ভাই জেটলাল বলেন, ‘আমরা তাদের বাড়িতে চাই। আমরা ভারত ও পাকিস্তানের সম্পর্কের পরিস্থিতি বুঝতে পারি। তবে তারা শুধুই প্রেমে পড়েছিল।’

তবে পুলিশও এই ব্যাপারে একমত। নাম প্রকাশ না করে একজন পুলিশ জানিয়েছেন, ‘অবৈধ প্রবেশ ও জালিয়াতি বাইরে, এটি একটি প্রেমের গল্প বলেই মনে হচ্ছে।’

যাদবের মা শান্তি দেবী বলেছেন, তিনি আশা করছেন উভয় দেশের সরকার তাদের পুনরায় একত্রিত করতে সহায়তা করবেন। তিনি বলেন, ‘যদিও সে মুসলিম বা পাকিস্তানি, সে আমাদের পুত্রবধূ। আমরা তার ভাল যত্ন নেব।’

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles