8.1 C
Toronto
বৃহস্পতিবার, মার্চ ২৮, ২০২৪

তালার চাবি খুলে দিল হত্যাকাণ্ডের জট!

তালার চাবি খুলে দিল হত্যাকাণ্ডের জট!

হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে একটি চাবিতেই খুলে গেল মাদ্রাসাছাত্র আকরাম খান (৯) হত্যাকাণ্ডের জট। এ ঘটনায় অপর ৩ মাদ্রাসাছাত্রকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। নিহত আকরাম খান উপজেলার মক্রমপুর মরহুম সামায়ুন কবির হাফিজিয়া এতিমখানার ছাত্র এবং একই গ্রামের মৃত দৌলত খানের ছেলে। আজ শনিবার বিকেল ৪টায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন বানিয়াচং থানার (ওসি) অজয় চন্দ্র দেব।

- Advertisement -

ওসি অজয় জানান, গত ১৬ নভেম্বর মরহুম সামায়ুন কবির হাফিজিয়া এতিমখানার পার্শ্ববর্তী একটি পুকুরে ডুবানো নৌকার তল থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় আকরাম খানের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এরপর থেকেই বিষয়টি নিয়ে তদন্তের নামে পুলিশ। তদন্তের এক পর্যায়ে পুলিশ জানতে পারে নিহত আকরাম খানের কাছে একটি চাবি ছিল। যেই চাবি দিয়ে এতিমখানার অনেক ছাত্রদের ট্রাংক খোলা যেত। এছাড়াও মাদ্রাসার যে কারো কিছু চুরি হলেই সকলে আকরামকে সন্দেহ করতো।

সেই সূত্র ধরে এগিয়ে যেতে থাকে পুলিশ। তদন্তের এক পর্যায়ে একই মাদ্রাসার ছাত্র এবং একই গ্রামের বাসিন্দা মস্তু মিয়ার ছেলে ফখরুল মিয়া (১৬), জুলহাস মিয়ার ছেলে ফয়েজ উদ্দিন (১৩) ও মহিবুর রহমানের ছেলে জাহেদ মিয়াকে (১৫) আটক করে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের মুখে উল্লেখিতরা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।

হত্যাকাণ্ডে জড়িত মাদ্রাসা ছাত্রদের বরাত দিয়ে ওসি জানান, হত্যাকাণ্ডের কিছুদিন আগে ফখরুল মিয়ার ট্রাংক থেকে প্রথমে ৬০ টাকা ও পরে ৫০ টাকা চুরি হয়। সেই টাকা না পেয়ে ফখরুল মিয়া, জাহেদ মিয়া ও ফয়েজ উদ্দিন জানতে পারে আকরাম খানের কাছে একটি তালা খোলার চাবি রয়েছে যা দিয়ে অধিকাংশ ছাত্রের ট্রাংকের তালা খোলা যায়। এরপর থেকেই তাদের সন্দেহ হয় আকরাম খান তাদের টাকা চুরি করেছে। সন্দেহ থেকেই তাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। পরবর্তীকালে আকরামকে সুযোগ পেলে উপযুক্ত শিক্ষা দেওয়া হবে বলে তারা পরিকল্পনা করে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৬ নভেম্বর সকালে তারা কৌশলে সুযোগ বুঝে আকরাম খানকে মাদ্রাসার পেছনের একটি পুকুর পাড়ে নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে তারা হত্যার উদ্দেশে রশি দিয়ে তার হাত-পা বেঁধে ফেলে। এক পর্যায়ে আকরাম চিৎকার শুরু করলে তার মুখ চেপে ধরা হয়। এরপর ইট দিয়ে তার মাথায় একাধিক আঘাত করে। এতেও মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়ায় আকরামকে ধরাধরি করে পুকুরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে পানিতে চুবিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে তারা। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর মরদেহ পানিতে ফেলে মাদ্রাসায় এসে ঘুমিয়ে পড়ে তারা।

পরবর্তীকালে ওইদিন বিকেলে আকরামকে খুঁজে পাওয়া না গেলে উল্লেখিতরা ভিকটিমকে খুঁজে বের করার অজুহাতে নৌকা সেচ করার জন্য সেই স্থানে যায় এবং ভিকটিমের হাত-পা বাঁধা অবস্থায় লাশ তারা ৩ জন মিলেই উদ্ধার করে। ওই তিন মাদ্রাসাছাত্রের নামে মামলা করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

সূত্র: আমাদের সময়

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles