-0 C
Toronto
শুক্রবার, মার্চ ২৯, ২০২৪

আড়ালে যুবলীগের ফারুক ও হারুন

আড়ালে যুবলীগের ফারুক ও হারুন

বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে অভিযুক্ত ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অনেক নেতা এখনো রাজনীতির মাঠে সক্রিয়। জামিন পেয়ে মুক্ত জীবনে ফিরেছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাবেক সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদসহ বেশ কয়েকজন। ক্যাসিনো কর্মকাণ্ডে অভিযুক্ত অনেকেই রাজনীতি করার প্রত্যয়ে বিদেশে থেকে দেশে ফিরছেন। কিন্তু যুবলীগের সাবেক ‘প্রভাবশালী’ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মো. হারুনুর রশীদের দেখা নেই কোথাও। যাচ্ছেন না সভা-সমাবেশে বা সামাজিক আয়োজনেও। এ নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের কৌতূহলের শেষ নেই।

- Advertisement -

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের হাইকমান্ডের নির্দেশে তারা আছেন সবকিছুর আড়ালে। ডাক পড়লে আবারও রাজনীতির মাঠে ফিরে আসবেন। ফারুক-হারুনের অনুসারীরা বলছেন, অনেকটা অভিমানেই তারা সবকিছু থেকে দূরে রয়েছেন।

অন্যদিকে, বিতর্কের জের ধরে স্বেচ্ছাসেবক লীগের মোল্লা. মো. আবু কাওসারকে সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি এবং পঙ্কজ দেবনাথ এমপিকে সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তারপরও এই দুই নেতা এখনো রাজনীতিতে সক্রিয় আছেন।

২০১৯ সালে সরকার দেশে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করে ‘শুদ্ধি’ অভিযান চালায়। অভিযানের শুরুটা হয় ক্ষমতাসীন (নিজ) দল আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী সংগঠনের মধ্য দিয়ে। ওই বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর গ্রেপ্তার হন আরেক ‘যুবলীগ নেতা’ জিকে শামীম। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের জবানবন্দি নেয়। সেখান থেকে বেরিয়ে আসে অনেক তথ্য-উপাত্ত। এর কিছুদিন পর ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল হোসেন সম্রাট ও যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক কাজী আনিসুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। সম্রাট গ্রেপ্তার হওয়ার পর এমন অভিযানের সন্দেহ প্রকাশ করে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন যুবলীগের তৎকালীন চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী। এরপর তাকে যুবলীগের চেয়ারম্যানের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তার ব্যাংক হিসাবে তলব এবং বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। এর পর থেকে তিনি আর কোথাও বের হননি। তৎকালীন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হারুনুর রশীদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোনো অভিযোগ পাওয়া না গেলেও তিনিও আড়ালে চলে যান।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যুবলীগের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পাওয়ার পর ওমর ফারুক চৌধুরী ধানমন্ডিতে তার নিজ বাসায় ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে মনোযোগী আছেন। বর্তমান যুবলীগের কোনো অনুষ্ঠানে যাওয়া তো দূরের কথা, পারিবারিক বা সামাজিক আচার-অনুষ্ঠানেও তাকে দেখা যায় না। রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ, এমনকি পার্টি অফিসেও যাচ্ছেন না তিনি।

একই অবস্থা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. হারুনুর রশীদেরও। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে রাজনৈতিক ইস্যুতে সক্রিয় তিনি। গতকাল মঙ্গলবার দুুপুরে ফেসবুকে সর্বশেষ পোস্ট করেছেন যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান ও বর্তমান আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকের ছেলে সায়াম-উর-রহমান সায়ামের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে। এ পোস্টে তিনি লেখেন, ‘৬ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানকের একমাত্র পুত্র আমাদের প্রিয় সায়াম-উর-রহমান সায়ামের ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী। মহান আল্লাহ প্রিয় সায়ামকে জান্নাতুল ফেরদৌস নসিব করুন।’

নিজেকে আড়াল করে রাখার বিষয়ে জানতে চেয়ে তাদের দুজনের মুঠোফোনে চেষ্টা করা হলে যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী কথা বলতে রাজি হননি। অন্যদিকে সংগঠনটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. হারুনুর রশীদ কল ধরে ব্যস্ততা দেখিয়ে পরে কল ব্যাক করবেন বলে কেটে দেন।

‘শুদ্ধি’ অভিযানের পর যুবলীগে পরবর্তী সম্মেলনে কোনো ‘বিতর্কিত’ নেতার ঠাঁই হয়নি। যুবলীগের বর্তমান কমিটির সিনিয়র পর্যায়ের এক নেতা বলেন, যুবলীগের সাবেক অনেক নেতা বর্তমান কমিটির নানাবিধ বিষয়ে কথা বললেও সংগঠনের সাবেক নেতা ফারুক ও হারুন সংগঠনটির কোনো ইস্যুতেই কথা বলেন না। যতটুকু পারেন আড়ালে থাকার চেষ্টা করেন।

এ বিষয়ে বর্তমান যুবলীগের আরেক নেতা বলেন, যুবলীগ চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগের হাইকমান্ডের নির্দেশে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন। হাইকমান্ডের নির্দেশেই তিনি নীরব রয়েছেন। পরবর্তী নির্দেশনা ছাড়া তিনি রাজনীতিতে দৃশ্যমান হবেন না।

সূত্র : আমাদের সময়

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles