0.6 C
Toronto
বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২৫, ২০২৪

বিদ্যুৎ সাশ্রয় নীতি, কতটুকু বাস্তবায়িত হচ্ছে?

বিদ্যুৎ সাশ্রয় নীতি, কতটুকু বাস্তবায়িত হচ্ছে?

বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে দেশের জ্বালানি নির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলোতে বিদ্যুৎ উৎপাদন সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয়েছে। ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদনে কিছুটা ঘাটতি তৈরি হয়েছে এবং এই ঘাটতি ব্যালেন্স করতে সরকার এলাকাভিত্তিক লোডশেডিংয়ের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এখন এর বাস্তবায়ন চলছে। এমন পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে সরকারের পক্ষ থেকে একাধিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো রাত ৮টার পর দোকানপাট এবং শপিংমলগুলো বন্ধ থাকবে। এর ব্যতয় ঘটলে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে মন্ত্রিপরিষদ সদস্য সবাইকে এই সময়ে সাশ্রয়ী হতে সরকার প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বারবার তাগাদ দিয়ে যাচ্ছেন, সাশ্রয়ী হতে আহ্বান জানাচ্ছেন।

- Advertisement -

এদিকে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং চলছে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে। তবে সাশ্রয় করতে সরকারের ঘোষিত বিদ্যুৎ সাশ্রয় নীতি কতটুকু বাস্তবায়িত হচ্ছে সেটা নিয়ে বিশ্লেষকদের মহলে এক ধরনের প্রশ্ন উঠেছে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে যে, জরুরী প্রয়োজনীয় যেমন ফার্মেসী, খাবারের দোকান ছাড়াও অন্যান্য দোকান খোলা রাখা হচ্ছে। রাত ৮টার মধ্যে রাজধানীতে শপিংমলগুলো বন্ধ হচ্ছে ঠিকই কিন্তু পাড়া মহল্লাগুলো জমে উঠছে কোনো বাধা ছাড়াই। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার বহুতল ভবনগুলোর আলোক বাতি গুলোর ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন কোনো কোনো মহল। এছাড়া রেস্তোরাগুলো আলোক সজ্জাও এই প্রশ্নের বাইরে নয়। দেশের এমন সংকটময় পরিস্থিতিতে বহুতল ভবনগুলোতে রাতের বেলায় ঝলকানি সাইন বোর্ডগুলো জ্বলছে বাধাহীনভাবে। অথচ সেগুলো নিভিয়ে রাখলে খুব বড় সমস্যা হবে না।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকার শুধু নির্দেশনা দিয়েই ক্ষান্ত হয়েছে। এর বাস্তব প্রয়োগে সরকারের মহল থেকে কোনো ধরনের তৎপরতা নেই। যেটুকু করা হচ্ছে সেটা শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রী একাই করছেন। তিনি বিভিন্ন প্রোগ্রামে জনগণকে সাশ্রয়ী হতে আহ্বান জানাচ্ছেন, উৎসাহ দিচ্ছেন। কিন্তু সরকারের সংশ্লিষ্টরা এব্যাপারে উদাসীনভাবে কাজ করছেন। সংকটময় পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে কোনো কোনো মহল বলছে, আইন প্রয়োগ করে হলেও সরকারের নির্দেশনা যথার্থভাবে বাস্তবায়ন করা উচিত। আবার কোনো কোনো মহল বলছেন যে, আইন প্রয়োগ করে নয়, বরং জনগণকে সচেতন করতে হবে। এর জন্য ব্যাপক প্রচারণামূলক উদ্যোগের প্রয়োজন আছে। কিন্তু সরকারের সেধরনের কোনো কর্মসূচি নেই বললেই চলে।

সংকটময় এমন পরিস্থিতিতে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগও উদাসীন বলে দাবি করছেন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, মাঠ পর্যায় দলের কোনো কর্মসূচি ‍দৃশমান নেই। বিদ্যুৎ ব্যবহারের জনগণকে সচেতন করতে, পরিস্থিতির যথার্থতা বুঝাতে কেন্দ্রীয় নেতাদেরও কোনো ধরনের উদ্যোগ নেই। যা করা হচ্ছে সেটা শুধুমাত্র বিরোধী দলকে ঘায়েল করা। এতে করে জনগণের কাছে ভুল বার্তা যাচ্ছে বলেও মনে করেন বিশ্লেষকরা। বিশ্লেষকরা আরও বলছেন, দেশে করোনাকালীন সময়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের যেভাবে সক্রিয় দেখা গেছে, এখন সেভাবে মাঠে সক্রিয় নেই নেতাকর্মীরা। সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নে দলের কোনো মনিটরিং সেল নেই বলে দাবি বিশ্লেষকদের। ফলে এমন পরিস্থিতিতে সরকারের বিদ্যুৎ সাশ্রয় নীতি কতটুকু সাফল্য পাবে সেটা নিয়ে এক ধরনের সংশয় তৈরি হয়েছে।

সূত্র : বাংলা ইনসাইডার

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles