2.9 C
Toronto
বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২৫, ২০২৪

মহানবীকে নিয়ে কটুক্তি: ধর্ষণ ও হত্যার হুমকিতে নুপুরের নিরাপত্তা জোরদার

মহানবীকে নিয়ে কটুক্তি: ধর্ষণ ও হত্যার হুমকিতে নুপুরের নিরাপত্তা জোরদার
নুপুর শর্মা

মহানবী হযরত মুহাম্মদকে (সা.) নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করায় ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপির জ্যেষ্ঠ নেতা ও দলটির সাবেক মুখপাত্র নুপুর শর্মাকে ধর্ষণ ও হত্যার হুমকির অভিযোগ উঠেছে। এরপর তার নিজের ও তার পরিবারের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

সাম্প্রতিক মন্তব্যের কারণে তাকে ধর্ষণ ও খুনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন নুপুর। এরপরই তার নিরাপত্তা জোরদার করে দিল্লি পুলিশ।

- Advertisement -

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে হয়রানি ও হুমকির কথা উল্লেখ করে পুলিশকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলেন অভিযুক্ত বিজেপি নেত্রী নুপুর শর্মা। আর এরপরই তার নিরাপত্তা বাড়ানো হয়।

ভারতের এক কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে বলেছেন, ‘বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে হুমকি পাচ্ছেন এবং তাকে হয়রানি করা হচ্ছে বলে নুপুর শর্মা অভিযোগ করার পর শর্মা এবং তার পরিবারকে পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে’।

পুলিশ জানিয়েছে- বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে মৃত্যুর হুমকি এবং ঘৃণা ছড়াতে তাকে লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে বলে গত ২৮ মে প্রথম নুপুর শর্মার কাছ থেকে অভিযোগ পায় পুলিশের সাইবার সেল ইউনিট।

এই অভিযোগের ভিত্তিতে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির (আইপিসি) ধারা ৫০৬ (ভীতি প্রদর্শন), ৫০৭ (অজ্ঞাত যোগাযোগের মাধ্যমে অপরাধমূলক ভীতি প্রদর্শন) এবং ৫০৯ (শব্দ, অঙ্গভঙ্গি বা কাজের মাধ্যমে নারীর সম্মানহানি) এর অধীনে একটি এফআইআর নথিভুক্ত করা হয় বলেও জানিয়েছে পুলিশ।

বিজেপির মুখপাত্র নুপুর শর্মা গত মাসের শেষদিকে এক টেলিভিশন শোতে অংশ নিয়ে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন। আর দলটির নয়াদিল্লি শাখার গণমাধ্যম প্রধান নবীন জিন্দাল নুপুর শর্মার সেই মন্তব্যের সমর্থনে টুইট করেন।

তাদের এই মন্তব্য দেশটির সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়কে ক্ষুব্ধ করে তোলে। ভারতের কয়েকটি রাজ্যের মুসলিমরা বিক্ষিপ্তভাবে প্রতিবাদ বিক্ষোভ করেন। আর এর রেশ ভারতের গণ্ডি ছাড়িয়ে বাইরের বিশ্বেও ছড়িয়ে পড়ে; বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে।

দেশে-বিদেশে তীব্র প্রতিক্রিয়ার মুখে গত রবিবার অভিযুক্ত নুপুর শর্মাকে দল থেকে বরখাস্ত এবং জিন্দালকে বহিষ্কার করে বিজেপি। পরে বিজেপির এই দুই নেতা প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে বিবৃতিও দিয়েছেন। কিন্তু এরপরও বিজেপির জ্যেষ্ঠ দুই নেতার বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে মুসলিম বিশ্বের ক্রমবর্ধমান ক্ষোভ ও তোপের মুখে পড়েছে ভারত। কূটনৈতিক ক্ষোভও অব্যাহত রয়েছে।

ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার বিভিন্ন দেশে এসব ক্ষোভ প্রশমিত করার চেষ্টা করেই চলেছে। নয়াদিল্লির দাবি, ভারত ও ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার সকল ধর্মকেই সম্মান করে।

ইরান, ইরাক, কুয়েত, কাতার, সৌদি আরব, ওমান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জর্ডান, আফগানিস্তান, বাহরাইন, মালদ্বীপ, লিবিয়া এবং ইন্দোনেশিয়া-সহ অন্তত ১৫টি দেশ ভারতের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানিয়েছে।

একইসঙ্গে এই দেশগুলো নিন্দা জানানোর পাশাপাশি মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর অপমান প্রত্যাখ্যান করেছে এবং ভারত সরকারকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়েছে।

এরপরই অনেকটা নড়েচড়ে বসে বিজেপি। পরিস্থিতি বিবেচনায় বিজেপি গত রবিবার অভিযুক্ত নুপুর শর্মাকে বরখাস্ত এবং জিন্দালকে বহিষ্কার করা করে। এমনকি পরে বিজেপির এই দুই নেতা প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে বিবৃতিও দিয়েছেন।

বিজেপি সরকারও বিভিন্ন দেশে এসব ক্ষোভ প্রশমিত করার চেষ্টা করেই চলেছে। নয়াদিল্লির দাবি, ভারত ও ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার সকল ধর্মকেই সম্মান করে।

মুসলিম গোষ্ঠীগুলোর বিক্ষোভ এবং কুয়েত, কাতার ও ইরানের মতো দেশগুলোর তীব্র প্রতিক্রিয়ার মধ্যে গত রবিবার একটি বিবৃতি দিয়ে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করে বিজেপি। সেখানে ভারতের ক্ষমতাসীন এই দলটি দাবি করে, তারা সকল ধর্মকে সম্মান করে এবং যেকোনো ধর্মীয় ব্যক্তিত্বের অবমাননার তীব্র নিন্দা করছে।

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles