1.9 C
Toronto
শুক্রবার, মার্চ ২৯, ২০২৪

শিমু হত্যার আগে কী ঘটেছিল, জানালেন বোন

শিমু হত্যার আগে কী ঘটেছিল, জানালেন বোন - the Bengali Times
ছবি সংগৃহীত

রোববার ১৬ জানুয়ারি থেকে হঠাৎ করেই পাওয়া যাচ্ছিল না অভিনেত্রী রাইমা ইসলাম শিমুকে। খোঁজ না পেয়ে তার ছোট বোন ফাতেমাসহ পরিবারের সদস্যরা কলাবাগান থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এদিকে সোমবার ১৭ জানুয়ারি দুপুরে কেরানীগঞ্জ থেকে শিমুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

মরদেহটি প্রথমে অজ্ঞাতনামা হিসেবেই ধরা হচ্ছিল। পরে আঙুলের ছাপ ও পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে জানা যায় বস্তাবন্দি মরদেহটি অভিনেত্রী শিমুর।

- Advertisement -

নিখোঁজের আগে ঠিক কী হয়েছিল তা গণমাধ্যমে জানিয়েছেন শিমুর বোন ফাতেমা। বললেন, ‘আমরা জানতে পারি রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে, ওর (শিমু) খুব কাছের একজন বন্ধু কল করে আমাকে জানায়, শিমুকে অনেকক্ষণ ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না। সে আমার কাছে জানতে চেয়েছে, শিমুর সঙ্গে কোনো কথা হয়েছে কি না। আমি বলি, না আমার সঙ্গে কথা হয়নি। মেসেঞ্জারে কল করেছিলাম, কিন্তু ধরেনি।

‘এরপর আমি শিমুর মেয়েকে কল দিলাম। সে বলল, আম্মু (শিমু) সকালে বের হয়েছে। আমি বললাম, সকালে বের হওয়ার পরে তোমাদের সঙ্গে কি আর কোনো কথা হয়েছে। সে বলে, না কথা হয়নি। এরপর থেকে শিমুর ফোনে একাধিকবার কল করেও সাড়া পাওয়া যাচ্ছিল না।’

তিনি আরও বলেন, ‘এর মধ্যে আমি, আমার ভাই, তার স্ত্রীকে নিয়ে বের হয়ে গেছি। অনেক জায়গায় ফোন করেছি, কারও সঙ্গেই কথা হয়নি। ওর ক্লোজ একটা বান্ধবী আছে যার নাম আনমন, ওনাকে কল দিয়ে বিষয়টা জানিয়েছি।

তিনি আমাকে বলেন রোববার সকালে ১০টা ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যে শিমুকে কল করেছিলেন, কিন্তু রিসিভ করেননি।’

এর মধ্যে রাত ১১টার দিকে কলাবাগান থানায় চলে যান ফাতেমা। শিমু নিখোঁজ জানিয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এরপর ঢাকা মেডিকেল, মিটফোর্ড হাসাপাতালে খবর নেন তারা। কিন্তু কোনো হদিস মেলেনি।

সোমবার ঠিক কী ঘটেছিল এ নিয়ে শিমুর বোন ফাতেমা বলেন, ‘আমরা ভোর থেকেই আবার বোনকে খোঁজা শুরু করি। একসময় পুলিশের এসআই আমাদের জানান, শিমুর ফোন বন্ধ হয়েছে রোববার সকাল ১০টা ২৬ মিনিটে।’

ফাতেমার ধারণার সঙ্গে মিলে যায় ফোন বন্ধের হিসাবটা। তিনি জানান, রোববার শিমু বাসা থেকে বের হয়েছেন সাড়ে ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে। ফোনটাও অফ হয়েছে ওই টাইমে।

ফাতেমা বলেন, ‘পুলিশ শিমুর শেষ অবস্থান জানাতে পারেনি। এর মধ্যে আমি র‌্যাব, ডিবি ও সন্ধ্যায় সিআইডিতে কথা বলি। সন্ধ্যায় আমাদের একজন ফোন করে বলেন লাশ পাওয়া গেছে।’

ঠিক কোথায় যাচ্ছিলেন অভিনেত্রী শিমু? ‘ফাতেমা বলেন, ‘আমার বোনের জামাই (শিমুর স্বামী নোবেল) যেটা বলল, রোববার সকালে তাকে শিমু ডাক দিয়ে বলেছে, তুমি ওঠো বাজারে যাব। বুয়া আসলে তুমি বলবা যে আধাঘণ্টা পরে আসতে। কিন্তু শিমু আর বাজারে যায়নি। কিছুক্ষণ পরে তার স্বামীকে বলে, আমি একটু মাওয়া যাব, দেরি হতে পারে। এটা বলে বের হয়ে গেছে। কিন্তু তাদের পরিবারে কোনো দ্বন্দ্ব-কলহ আছে কি না সে ব্যাপারে কখনো কথা হয়নি।’

কখনো কিছু বলার চেষ্টা করেছিল শিমু? এই প্রশ্নের উত্তরে ফাতেমা বলেন, ‘আমাকে এভাবে কিছু বলেনি যে কারও সঙ্গে দ্বন্দ্ব আছে কি না। সে তো মিডিয়াকর্মী। আমার সঙ্গে প্রতিদিনই কথা হতো, কিন্তু দ্বন্দ্বের বিষয়ে কোনো কিছু কখনও বলেনি। কাজের ক্ষেত্রে অনেকের সঙ্গে দ্বন্দ্ব থাকতে পারে। সেটা অন্য ইস্যু, ওদের এফডিসিতে যেটা চলে, সেটা অন্যরকম। কিন্তু আমার বোনকে মার্ডার করে ফেলতে পারে, এ রকম কোনো দ্বন্দ্বের কথা আমার জানা নেই।’

এদিকে পুলিশ জানিয়েছে ঘটনার রাতেই শিমুর স্বামী খন্দকার শাখাওয়াত আলীম নোবেল ও তার বন্ধু এসএমওয়াই আব্দুল্লাহ ফরহাদকে আটক করে পুলিশ। তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বাহিনীটি জানতে পেরেছে, পারিবারিক ও দাম্পত্য কলহের কারণে জীবন দিতে হয়েছে শিমুকে। আর এই হত্যার কথা স্বীকার করেছেন নোবেল। বন্ধুকে নিয়ে মরদেহটি গুম করার চেষ্টা করেছিলেন তিনি।

এ বিষয়ে ব্রিফিংয়ে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে যে গাড়ি ব্যবহার করে লাশ গুমের চেষ্টা করা হয়েছে সেই গাড়িটি জব্দ করে থানায় নিয়েছি এবং অন্যান্য আলামত সংগ্রহ করেছি। মডেল শিমুর স্বামী নোবেল এবং তার বন্ধু ফরহাদ বর্তমানে থানা হেফাজতে আছেন। মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।’

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles