9.6 C
Toronto
সোমবার, এপ্রিল ২৯, ২০২৪

কানাডায় ভ্যাকসিন প্রাপ্যতা

কানাডায় ভ্যাকসিন প্রাপ্যতা
প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো ও অর্থমন্ত্রী ফ্রিল্যান্ডছবি ফাইল

কানাডায় ভ্যাকসিন প্রাপ্যতা নিয়ে কিছু ঝামেলার কারণে বন্টনেও সমস্যা দেখা দিয়েছিল। ফলে অনেকের সাথে আমি নিজেও খুব বিরক্ত ছিলাম। এখন ধীরে ধীরে সেই সংকটের অনেকখানি অবসান হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।

কিন্তু যে বিষয়টা নিয়ে লিখতে মন চাইলো সেটা হলো পরিমিতিবোধ। এখানে কেউ লিমিট ক্রস করে না। সমালোচনা, আলোচনা, প্রতিবাদ, বিক্ষোভ কোন কিছু নিয়েই লিমিট ক্রস করার সুযোগ এখানে নেই। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক কিছু বিষয় বিশেষ করে ফিলিস্তিন ইসরাইলের সংকট বা ইসরাইলের আগ্রাসন যাই বলি না কেন, কানাডার প্রধানমন্ত্রী থেকে বিক্ষোভকারীরা সকলেই যার যার মতামত স্বাধীনভাবে প্রকাশ করেছেন, পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ করেছেন, মন্ট্রিয়লে পুলিশকে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে, কিন্তু কেউই লিমিট ক্রস করে নাই।

- Advertisement -

লিমিট ক্রস না করার কারণে যেটা ঘটে সেটা হলো সমাজে সকলের প্রতিই সকলের একটা যোগাযোগ বা যোগসুত্র বা সামহাউ একটা বিশ্বাস বা বন্ধন থাকে। যখনি কোন জাতীয় সংকট তৈরী হয় তখন সেটা কাজে লাগে।

যেমন বর্তমানে সবচেয়ে বড় সংকট হলো কানাডার সকল নাগরিককে যত দ্রুত সম্ভব ভ্যাকসিনের আওতায় নিয়ে এসে ব্যবসা বাণিজ্য অফিস আদালত খুলে দেয়া তথা অর্থনীতিকে পুরোদমে চালু করা।

আর দ্রুত গতিতে সবাইকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনতে হলে কমিউনিটির সকলকে ইনভলব বা সংযুক্ত করতে হয়। সেটাই কানাডায় করা হয়েছে এবং হচ্ছে।

এখানে টেলিভিশন খুললেই দেখতে পাবেন, মসজিদ বা ইসলামিক সেন্টারগুলোকে টিকা দান কেন্দ্র করা হয়েছে। মন্দির বা হিন্দু সেন্টার বা চার্চকে টিকাদান কেন্দ্র করা হয়েছে। আজ দেখলাম, চাইনিজ কমিউনিটি সেন্টারও আজ সারাদিন টিকা প্রদান করবে।

অর্থাত নানা ধরনের হাসপাতাল, ক্লিনিক, স্কুল কলেজকেতো ব্যবহার করা হয়েছেই, এখন ধর্মীয় বা এথনিক সাংস্কৃতিক সেন্টারগুলোকেও কাজে লাগানো হচ্ছে। উদ্দেশ্য একটাই সেটা হলো, শতভাগ লোককে টিকার আওতায় নিয়ে এসে দ্রুত অর্থনীতিকে চালু করে দেয়া।

এখানেও কিছু লোক ভ্যাকসিনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। তারা ভ্যাকসিনের বিরুদ্ধে। বিক্ষোভের মাধ্যমে কারো মত প্রকাশ করাকে সরকার বাধা দেয় না। কিন্তু সরকার জানে এবং জনগনের অধিকাংশ লোক মনে করে টিকা ছাড়া কোন বিকল্প নেই এ মুহুর্তে। কিন্তু কিভাবে শতভাগ মানুষের কাছে পৌছানো যায়?

পপ আপ বা ভ্রাম্যমান টিকা কেন্দ্র চালু করা হয়েছে অনেক আগেই। অর্থাৎ যে কেউ ইচ্ছা করলেই রাস্তায় লাইনে দাড়িয়ে টিকা নিয়ে নিতে পারে। আছে পুর্ব নির্ধারিত বুকিং সিস্টেম। প্রাদেশিক বুকিং সিস্টেম, স্হানীয় সরকার বুকিং সিস্টেম, হাসপাতাল, পাবলিক হেলথ। তারপরো কেন ধর্মীয় ও জাতি ভিত্তিক টিকা কেন্দ্র খোলা হচ্ছে? কারণটা খুবই সহজ। সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলো যতই কেন্দ্র খুলুক না কেন, সকল মানুষকে তারপরো টিকার আওতায় আনা যাচ্ছে না। সে কারণেই সম্ভাব্য সকল উপায়ে, সমাজের সকল শ্রেণী পেশা, প্রতিষ্ঠানকে ইনভলব করে চেষ্টা করা হচ্ছে যাতে খুব শীঘ্রই কানাডার শতকরা একশতভাগ মানুষকে টিকা দেয়া সম্ভব হয়।

একজন মানুষও যদি টিকার বাইরে থাকে তাহলে সেই দেশের অনেকেই ঝুঁকির মধ্যে রয়ে যেতে পারে। বৈশ্বিক এই মহামারী মোকাবেলা করতে হলে দলমত, ধর্ম, বর্ণ, জাতি নির্বিশেষে সকলকেই এগিয়ে আসতে হবে। কিন্তু মুখে বললেইতো আর এগিয়ে আসা যায় না। একটি সমাজ বা দেশে যদি দীর্ঘদিন যাবৎ ঘৃণার রাজনীতি আর ঘৃণা, বিদ্বেষ চর্চা অব্যাহত রাখা হয় তাহলে হঠাৎ করে কোন দুর্যোগ শুরু হলেও সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করা কঠিন হয়ে পড়ে। আর সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে দুর্যোগ থেকে মুক্তি পাওয়া এক কথা, আর কথায় কথায়, সব প্রশংসা একজনকে করা, ব্যক্তি বন্দনা করা, অন্যদেরকে ডিসক্রেডিট করা হয় যেসব দেশে সেখানে মহামারী বা জাতীয় দুর্যোগ থেকে বের হয়ে আসাও মুশকিল হয়ে পড়ে বটে।

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles