16.4 C
Toronto
শনিবার, মে ৪, ২০২৪

কার্যালয়ে ঢুকে কাউন্সিলরসহ দুজনকে হত্যার ঘটনায় যা বলছেন স্থানীয়রা

কার্যালয়ে ঢুকে কাউন্সিলরসহ দুজনকে হত্যার ঘটনায় যা বলছেন স্থানীয়রা - the Bengali Times
কাউন্সিলর মো সোহেল ও তার সহযোগী হরিপদ সাহা

কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. সোহেল (৫২) ও তার সহযোগী হরিপদ সাহাকে (৫০) গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নগরীর পাথরিয়াপাড়ায় কাউন্সিলরের কার্যালয়ে তাদের হত্যা করা হয়। তাৎক্ষণিকভাবে এ ঘটনার নেপথ্যে কী রয়েছে, তা জানা যায়নি। তবে একাধিক সূত্র বলছে, বালু ব্যবসা, ঠিকাদারি ও আধিপত্য বিস্তারের জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড হতে পারে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অনেক আক্রোশ থেকে কাউন্সিলরকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। মুখোশধারীরা কাউন্সিলরের কার্যালয়ে ঢুকে এলোপাতাড়ি গুলি করে। এ ঘটনায় আরও অন্তত আটজন গুলিবিদ্ধ হন। তারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

- Advertisement -

এ হামলার বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ জানায়, বিকেল সাড়ে ৪টায় কুমিল্লার পাথরিয়াপাড়া থ্রি স্টার এন্টারপ্রাইজে কাউন্সিলর কার্যালয়ে বসা ছিলেন কাউন্সিলর সোহেল। এ সময় কালো কাপড়ে মুখ ঢাকা দুর্বৃত্তরা তার কার্যালয়ে প্রবেশ করে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকে। অনেক দূর থেকেও গুলির শব্দ শোনা গেছে। দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যাওয়ার পর গুলিবিদ্ধদের উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ৮টার দিকে সোহেল ও তার সহযোগী হরিপদ মারা যান। আহত অন্যরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আহতদের মধ্যে অ্যাডভোকেট সোহেল চৌধুরী, মো. রাসেল, মাজেদুল হক বাদল, রিজু মিয়া ও মো. জুয়েল রয়েছেন।

কাউন্সিলর সোহেলের ভাগ্নে মোহাম্মদ হানিফ জানান, সবাই আসরের নামাজ পড়ছিলেন। এ সময় প্রচণ্ড গোলাগুলির আওয়াজ কানে আসে। গিয়ে দেখি মামা রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন। আমি নিজে মামাকে কাঁধে করে বের করি।

১৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হানিফ মিয়া জানান, মোটরসাইকেলে এসে কয়েক সন্ত্রাসী অতর্কিত গুলি করতে থাকে। নেতাকর্মীদের নিয়ে কাউন্সিলর সোহেল তার কার্যালয়ে আলাপ-আলোচনা করছিলেন। হামলায় আহত জুয়েল বলেন, গুলির শব্দ শুনে রাস্তায় বের হই। এ সময় আমার পায়ে গুলি লাগে। তারপর কী হয়েছে বলতে পারছি না।

কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরফানুল হক রিফাত বলেন, ‘সোহেলের শরীরে অন্তত ১০টি গুলি করা হয়েছে। এলাকায় তিনি অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিলেন। আমরা হত্যার বিচার চাই।’

কুমিল্লা কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ারুল আজিম বলেন, ‘স্থানীয় আধিপত্যের বিরোধে এই হামলা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। হামলাকারীদের ধরতে পুলিশ মাঠে নেমেছে।’

মো. সোহেল কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য এবং ১৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। তিনি কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়রও ছিলেন। ২০১২ ও ২০১৭ সালে তিনি কাউন্সিলর পদে নির্বাচিত হন। দ্বিতীয় মেয়াদে প্যানেল মেয়র ছিলেন সোহেল। হরিপদ সাহা নগরীর ১৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য। কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক মো. মহিউদ্দিন জানান, দুজনেরই মৃত্যু হয়েছে গুলিতে।

পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘দুজনের মৃত্যুর পর ওই এলাকায় পুলিশ-র‌্যাব মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।’

সোহেলের নিহতের খবর ছড়িয়ে পড়লে বিকেলে কাউন্সিলর কার্যালয় ঘিরে শত শত মানুষ জড়ো হন। তারা পাথরিয়াপাড়া সড়কে বিক্ষোভ করে জড়িতদের গ্রেপ্তার দাবি করেন। বিক্ষুব্ধরা এলাকার কয়েকটি বাসাবাড়িতে হামলা করে। পরে পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

সূত্র : আমাদের সময়

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles