কোভিড-১৯ মহামারি থেকে বিশ্ব অর্থনীতি আস্তে আস্তে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করায় কানাডাসহ অনেক দেশেই উচ্চ মূল্যস্ফীতির সমস্যায় পড়েছে। মহামারির প্রথম দিকে চাহিদা হ্রাসের কারণে পণ্যমূল্য কম ছিল এবং সে সময় বিপুল সংখ্যক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। এখন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো আবার খুলতে শুরু করেছে এবং জনগণের মধ্যে সামাজিকীকরণ নতুন করে শুরু হচ্ছে। এ কারণে চাহিদাও ব্যাপক হারে বেড়েছে, যার সঙ্গে তাল মেলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে উৎপাদন ও কৃষি খাতকে।
কোভিড-১৯ মহামারি প্রলম্বিত হওয়ায় ঋণগ্রস্ত কানাডিয়ানদের জীবন যাত্রার মানে আরও অবনমন ঘটেছে বলে নতুন এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে। সোমবার প্রকাশিত ২০২১ বিডিও অ্যাফোরডেবিলিটি ইনডেক্স অনুযায়ী, মহামারির কারণে ৪৩ শতাংশ কানাডিয়ানের ঋণের পরিমাণ বেড়েছে। এক বছর আগের তুলনায় তা ৪ শতাংশের বেশি।
সমীক্ষার ফলাফল অনুযায়ী, ২৬ শতাংশ কানাডিয়ানের ন্যুনতম নতুন একটি ঋণ বেড়েছে। তাদের ৭০ শতাংশই নতুন ঋণ জীবনযাত্রার মানে আরও অবনমন ঘটিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন।
বিডিও ডেট সলিউশনের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক জেনিফার ম্যাকক্রাকেন গ্লোবাল নিউজকে বলেন, ঋণগ্রস্ত কানাডিয়ানদের সঞ্চয়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে মুল্যস্ফীতি। মহামারি ও ঋণের কারণে বহু কানাডিয়ানকে যে সমস্যার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে সেটা দৃশ্যমান।
অ্যাঙ্গাস রিডের সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে চতুর্থ বার্ষিক বিডিও অ্যাফোর্ডেবিলিটি ইনডেক্সটি তৈরি করা হয় সেপ্টেম্বরের গোড়ার দিকে ২ হাজার কানাডিয়ানের ওপর জরিপ চালিয়ে। সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ৬৪ শতাংশ কানাডিয়ান ঋণ ব্যবস্থাপনার জন্য অনাবশ্যক প্রয়োজন কমিয়ে আনার কথা জানিয়েছেন। ৪৭ শতাংশকে বাজেটে পরিবর্তন আনতে হয়েছে এবং ৩০ শতাংশ তাদের ব্যক্তিগত সম্পদ বিক্রি করেছেন। ঋণের বোঝা লাঘব করতে ২৪ শতাংশ কানাডিয়ান সরকারি সহায়তার জন্য আবেদন করেছেন। এছাড়া ১৮ শতাংশ নতুন চাকরি ও ১৭ শতাংশ দ্বিতীয় চাকরি শুরু করেছেন।
যারা কম বা আদৌ সঞ্চয় করছেন না তাদের মধ্যে আছেন নারী, ৩৫ থেকে ৫৪ বছর বয়সী কানাডিয়ান ও আটলান্টিক কানাডিয়ান। যদিও প্রতি ১০ জনের তিনজনই আগের চেয়ে বেশি সঞ্চয়ের কথা জানিয়েছেন এবং তারা ১ লাখ ডলারের মতো আয় করছেন।
সমীক্ষায় অংশ নেওয়া প্রতি ১০ জনের মধ্যে তিনজন কানাডিয়ান বা ২৯ শতাংশ সরকারি সহায়তা পেয়েছেন। জীবনযাত্রার মান ধরে রাখতে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে জানিয়েছেন তাদের ৭৬ শতাংশ।