রাজশাহী থেকে নাটোর শহরের হাফরাস্তা এলাকায় প্রেমিককে নিয়ে বিয়ে করতে এসে গণধর্ষনের শিকার হয়েছে প্রেমিকা এসএসসি পরীক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) থেকে তার এসএসসি পরীক্ষা শুরু হবে।
এ ঘটনায় ধর্ষণে সহযোগিতা করায় বুধবার ভোর রাতে কথিত স্বামী-স্ত্রী ছাড়াও তিন ধর্ষককে আটক করেছে পুলিশ। আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাসিম আহমেদ জানান, রাজশাহী জেলার মতিহার থানার বাসিন্দা ও শহরের একটি আদর্শ বালিকা বিদ্যালয়ের এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী রাজশাহী মহানগরীর হেতমখা ছোট মসজিদ এলাকার তার প্রেমিক রাজশাহী আর ডিএ মার্কেটের দোকান কর্মচারী আবিরকে বিয়ে করতে মঙ্গলবার বিকালে দুজন নাটোরে আসে। পরে আবির তাকে নিয়ে শহরের হাফরাস্তা এলাকায় পূর্ব পরিচিত নাটোর শহরের হাফরাস্তা এলাকার সাগর মিয়ার দোতালা বাড়ির ভাড়াটিয়া কথিত স্বামী-স্ত্রী মিথিলা ও মৃদুলের বাসায় আসে।
সেখানে রাত্রিযাপনের জন্য মিথিলা ও মৃদুলের সঙ্গে টাকা পয়সা নিয়ে বনিবনা না হওয়ায় রাত সাড়ে ১১টার দিকে মিথিলা নাটোর শহরের কানাইখালি এলাকার জনৈক রনি, রকি ও সোহানকে খবর দেয়। পরে মিথিলা ও তার স্বামীর সহযোগিতায় তারা তিনজন অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে আবিরকে মারপিট করে আটকে রেখে তারা তিনজন তরুণীকে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়। পরে তরুণী সেখান থেকে বের হয়ে আবিরকে সঙ্গে নিয়ে রাত দেড়টার দিকে শহরের বড় হরিশপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় রাস্তায় ঘুরতে থাকলে তারা টহল পুলিশের সামনে পড়ে।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ধর্ষণের শিকার হওয়া কথা জানান এই তরুণী। বিষয়টি জানার পর রাতেই পুলিশ ধর্ষণের স্বীকার তরুণীকে সঙ্গে নিয়ে অভিযান চালায় হাফরাস্তা এলাকার সাগরের বাসায়। সেখান থেকে ভাড়াটিয়া কথিত স্বামী-স্ত্রী মিথিলা ও মৃদুলকে আটক করা হয়।
নাটোর থানায় এনে তাদের জিজ্ঞাসাবাদে দেয়া তথ্যে মতে সদর উপজেলার তেলকুপি মদনহাট বিল (নূরানীপাড়া) থেকে বুধবার সকালে রনি, রকি ও সোহানকে আটক করে পুলিশ। আটক রনি, রকি ও সোহান এ সময় পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করে। প্রেমিক আবির ও প্রেমিকা তরুণীকে পুলিশ হেফাজতে সদর থানায় রাখা হয়েছে।
এ ঘটনায় আটককৃতরা হলেন, নাটোর শহরের কানাইখালী এলাকার পুলিশের তালিকাভুক্ত চিহ্নিত সন্ত্রাসী আফজাল হোসেনের ছেলে রনি, মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে রকি ও আব্দুল মজিদের ছেলে সোহান। ধর্ষণে তাদের সহযোগিতা করায় আটক মৃদুল আহম্মেদ জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর থানার আমতলি গ্রামের আব্দুল হাকিমের ছেলে। তার স্ত্রী পরিচয়দানকারী মিথিলা নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার খাজুরা গ্রামের নূরুল ইসলামের মেয়ে। মৃদুল ও মিথিলার বিরুদ্ধে তাদের ভাড়া বাসায় দীর্ঘদিন থেকে অন্য নারী পুরুষকে অসামাজিক কাজের সুবিধা করে দিয়ে অর্থ উপার্জনের অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ আটককৃতদের নিকট থেকে ধর্ষণের সময় ধারণ করা ভিডিও এবং ছবি উদ্ধার করেছে বলে জানা গেছে।
এদিকে ধর্ষণের শিকার মেয়েটিকে চিকিৎসার জন্য নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। প্রেমিক-প্রেমিকা দুজনের রাজশাহীর বাড়িতে পুলিশ খবর দিলে তাদের পরিবারের লোকজন নাটোর থানায় আসে।
সূত্র : যুগান্তর