13.4 C
Toronto
মঙ্গলবার, এপ্রিল ৩০, ২০২৪

রূপকথার গল্পকেও হার মানালেন জাপানের রাজকুমারী

রূপকথার গল্পকেও হার মানালেন জাপানের রাজকুমারী
ছবিঃ সংগৃহীত

ভালোবাসা মানে না কোনো ধনী গরিবের ব্যবধান, মানে না জাত ধর্মের পার্থক্য। তবে কজনইবা পেরেছেন ভালোবেসে রাজপ্রাসাদের জৌলুশ আর আভিজাত্য ছেড়ে পথে নামতে? এমন দৃষ্টান্ত হয়তো খুব বেশি পাওয়া যাবে না যেমনটি ঘটেছে জাপানের রাজকন্যা মাকোর জীবনে।

জন্ম-বেড়ে ওঠা রাজপ্রাসাদে, কিন্তু প্রেমে পড়েছেন খুব সাধারণ ঘরের এক ছেলের। জানা গেছে, ‘টোকিও ইন্টারন্যাশনাল খ্রিস্টান ইউনিভার্সিটি’তে কোমুরোর সঙ্গে পড়তেন রাজকুমারী মাকো। এরপরই একে অপরের প্রতি ভালোলাগা, ভালোবাসা। ২০১৭ সালেই তারা বিয়ে করতে চাইলেও তা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে নানা কাঠখড় পুড়িয়ে তাদের দীর্ঘদিনের সম্পর্কের শুভ পরিণয় ঘটে।

- Advertisement -

রাজকুমারী মাকো তার দাদা সম্রাট আকিহিতোর মতোই দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। সম্রাট আকিহিতো এক সময় মনস্থির করে ফেলেছিলেন রাজদণ্ড রক্ষার গুরুদায়িত্ব তিনি আর পালন করবেন না। তখন তার বয়স ছিল ৮৩ বছর। দাদার মতোই রাজকুমারী মাকোও নিজের জীবনের কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে পিছপা হননি।

মাকোর জীবন ছিল যেমন বৈভবে ভরপুর, ঠিক তার উল্টো ছিল কোমুরোর জীবন। একা মায়ের কাছেই বড় হয়েছেন তিনি। আর্থিক অবস্থা তেমন ভালো ছিল না। জানা গেছে, কোমুরোর পড়াশোনার খরচ অনেকাংশে বহন করেছিলেন মায়ের প্রাক্তন প্রেমিক।

এদিকে রাজপরিবারের কোনও কন্যা সাধারণ কাউকে বিয়ে করলে হারাতে হয় রাজ পরিবারের পদবি ও মর্যাদা। কিন্ত তার বিনিময়ে দিতে হয় বিপুল পরিমাণ অর্থ। সেই দিক থেকে নিজের পরিবার থেকে রাজকুমারী মাকো পেয়েছিলেন ১.২৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। কিন্ত তিনি সেই অর্থ নিতে অস্বীকার করেছেন। এ ছাড়া অনেকেরই দাবি, কোমুরো রাজকুমারীর যোগ্য নয়। তবে কারও কোনো প্রকারের সমালোচনাকে তোয়াক্কা না করে নিজের স্বপ্নের পুরুষকেই বিয়ে করেছেন তিনি।

রাজকুমারীর বিয়ে বলে কথা, তাই তাদের বিয়ের অনুষ্ঠানটিও হতে পারতো জাঁকজমকপূর্ণ। কিন্তু মাকোর বিয়ের আয়োজন ছিল একেবারেই বিপরীত, খুবই সাধারণ ও ছিমছাম। স্থানীয় অফিসে বিয়ের কাগজপত্র জমা দিয়ে এরপর রাজপরিবারের কিছু আচার অনুষ্ঠান পালনের মধ্য দিয়ে বিয়ের কার্যক্রম সম্পন্ন করেন এ দম্পতি।

এদিকে মেয়েকে বিদায় জানাতে রাজপ্রাসাদের দরজা পর্যন্ত এসেছিলেন মাকোর বাবা, যুবরাজ ফুমিহিতো, ছিলেন মাকোর মা এবং বোনও। জাপান ত্যাগ করে বর্তমানে এ দম্পতি বাস করছেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে।

রাজপ্রাসাদের জৌলুশময় জীবন থেকে নেমে এসে সাধারণভাবে জীবন যাপন, এ যেন এক রূপকথার গল্প। ঠিক ‘সিন্ড্রেলা’ গল্পের একেবারে বিপরীত। আর এমন চমৎকার পরিণয়ের ঘটনাটি রূপকথার গল্পের শেষের মতোই অনেকটা… ‘অতঃপর তারা সুখে শান্তিতে বসবাস করতে লাগলো’।

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles