17.5 C
Toronto
মঙ্গলবার, মে ৬, ২০২৫

উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ ১৯ জেলার ৩৮ তরুণ : র‌্যাব

উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ ১৯ জেলার ৩৮ তরুণ : র‌্যাব - the Bengali Times

উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে স্বেচ্ছায় বাড়ি থেকে নিরুদ্দেশ/নিখোঁজ হওয়া কুমিল্লাসহ ১৯ জেলার ৩৮ তরুণের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। তবে এই নিখোঁজদের কেউ কেউ বিদেশে রয়েছেন বলে জানিয়েছে তাদের পরিবার-স্বজনরা।

- Advertisement -

নিখোঁজদের পরিবার জানায়, তারা বিভিন্ন সময় বাড়িতে টাকাও পাঠাতো।

র‌্যাব বলছে, উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে দুই দফায় নিরুদ্দেশ/নিখোঁজ হওয়া ৬ তরুণসহ মোট ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্তত ৫৫ জন কথিত হিজরতের নামে বাড়ি থেকে নিরুদ্দেশ/নিখোঁজ হয়েছেন। যাদের মধ্যে ৩৮ জনের পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। তারা পার্বত্য চট্টগ্রামের দুর্গম এলাকায় অবস্থান করছেন। তাদের অনেকে সশস্ত্র ও বোমা তৈরি-বিষ্ফোরণের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।

সোমবার (১০ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বাহিনীর লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি বলেন, নিরুদ্দেশ/নিখোঁজ হওয়া তরুণরা ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’ (পূর্বাঞ্চলীয় হিন্দের জামাতুল আনসার) সংগঠনে যুক্ত হয়েছিল। এই সংগঠনের দাওয়াতি ও অন্যতম অর্থ সরবরাহকারী হাবিবুল্লাহ ও বাড়ি ছেড়ে যাওয়া ৩ জনসহ মোট ৫ জনকে রোববার (০৯ অক্টোবর) রাতে রাজধানী যাত্রাবাড়ী ও কেরানীগঞ্জ এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য জানায় আসামিরা।

খন্দকার আল মঈন বলেন, নিখোঁজ হওয়া তরুণদের সশস্ত্র হামলার প্রস্তুতির জন্য প্রশিক্ষণ নিতে পটুয়াখালী ও ভোলাসহ বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো হয়। নিরুদ্দেশ/নিখোঁজ হওয়া তরুণদেরকে বিভিন্ন সেইফ হাউজে পটুয়াখালী এলাকার বিভিন্ন ব্যক্তির তত্ত্বাবধানে রেখে পটুয়াখালী ও ভোলার বিভিন্ন চর এলাকায় শারীরিক কসরত ও জঙ্গিবাদ বিষয়ক বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো। এছাড়াও আত্মগোপনে থাকার কৌশল হিসেবে তাদেরকে রাজমিস্ত্রী, রঙ মিস্ত্রী, ইলেক্ট্রিশিয়ানসহ বিভিন্ন পেশার কারিগরী প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, প্রাথমিকভাবে সংগঠনের গ্রেফতার সদস্যদের মাধ্যমে আমরা ৩৮ জনের তথ্য পেয়েছি। তাদের নাম ও ঠিকানা পাওয়া গেছে; ক্ষেত্র বিশেষে নাম ও ঠিকানায় কিছুটা তারতম্য থাকতে পারে। তাদের অবস্থান পার্বত্য চট্টগ্রামের দুর্গম অঞ্চলে।

তিনি বলেন, সেখানে নিখোঁজ তরুণরা বিভিন্ন সংগঠনের ছত্রছায়ায় আত্মগোপনে থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছে এবং সংগঠনটির বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। প্রাথমিকভাবে প্রাপ্ত এই তথ্যসমূহ দেশের সব গোয়েন্দা সংস্থাসহ বিভিন্ন বাহিনীকে জানানো হয়েছে। বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় সম্মিলিত অভিযান চলমান রয়েছে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে কমান্ডার মঈন বলেন, গ্রেফতার হাবিবুল্লাহ বিভিন্ন নামে বেনামে মাদরাসা-মসজিদের জন্য চাঁদা সংগ্রহ করে ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার’ (পূর্বাঞ্চলীয় হিন্দের জামাতুল আনসার) জন্য অর্থায়ন করতেন। আমরা এখনো প্রাথমিক স্তরে কাজ করছি। সংগঠনের কে বা কারা নেতৃস্থানীয় পর্যায়ে রয়েছে তা এখনো জানা সম্ভব হয়নি। তবে জেএমবি ও আনসার আল ইসলাম থেকে বেরিয়ে আসারা জড়াচ্ছে এই সংগঠনে।

নিখোঁজদের কেউ দেশ ছেড়েছে কিনা, র্কিংবা তারা কীভাবে পরিবারের কাছে টাকা পাঠাতেন- জানতে চাইলে র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, এখন পর্যন্ত নিখোঁজ ৩৮ জনের কাউকে গ্রেফতার করতে পারিনি। দুই দফায় ৬ তরুণসহ গ্রেফতার ১২ জন এই তালিকার বাইরে। তাদের ৩৮ জনের কাউকে গ্রেফতার করা গেলে বোঝা যাবে কেউ দেশ ত্যাগ করেছে কিনা। নিখোঁজদের কেউ কেউ পরিবারে টাকা দিচ্ছেন, পরিবার জানতো তারা বিদেশে গেছে। তবে তারা দেশে থেকেই অল্প কিছু টাকা পরিবারে পাঠাচ্ছেন, ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, এটা অবশ্যই এলার্মিং যে নিরুদ্দেশ/নিখোঁজ হয়ে ঘর ছাড়া। আমরা চেষ্টা করছি জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে রাখতে। এটা চলমান প্রক্রিয়া। বাংলাদেশের জনগণ কখনোই জঙ্গিবাদকে প্রশ্রয় দেয় না। আমরাও কাজ করে যাচ্ছি।

সূত্র : বাংলানিউজ

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles