4.8 C
Toronto
বুধবার, এপ্রিল ২৪, ২০২৪

সময়-অসময়

সময়-অসময়
ছবিপিবিএস

“ভিপি সিং জ্যোতি বসুদের পতাকাই আজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে। ১৯৮৭ সালের এপ্রিলে সুইডিশ রেডিও ফাঁস করে বোফোর্স কাণ্ড। তোলপার হয়ে যায় গোটা দেশ। এই ঘটনার চার মাস পর রাজীব গান্ধীর মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন অর্থমন্ত্রী ভিপি সিং। ছেড়ে দেন সাংসদ পদও। বোফোর্সে নাম জড়ায় এলাহাবাদের সাংসদ রাজীব গান্ধীর বন্ধু অমিতাভ বচ্চনের নাম। সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেন অমিতাভ। ১৯৮৮-র জুনে সেই উপনির্বাচনে প্রার্থী হয়ে ভিপি সিং বিপুল ভোটে জয়ী হলেন। কলকাতার শহিদ মিনারে সম্বর্ধনা দেওয়া হল ভিপিকে। সঙ্গে অটল বিহারী বাজপেয়ী, জ্যোতি বসু। সেই ছবি এখনও মনে রেখেছে কলকাতা। সেদিন সেই মঞ্চ থেকেই শুরু হয়েছিল ক্ষমতাশীন কংগ্রেস সরকারের পতনের কাউন্ট ডাউন। ভিপি সিং-এর নেতৃত্বে অরুণ নেহরু, আরিফ মহম্মদ খান, অশোক সেনরা তৈরি করেন জন মোর্চা। পরে যার নাম হয় জনতা দল। ভ্রষ্টাচার বিরোধী আন্দোলনের জেরে ১৯৮৯-এর লোকসভা ভোটে বিজেপি এবং বামপন্থীদের সমর্থনে ক্ষমতাশীন কংগ্রেসকে পরাজিত করে দিল্লিতে তৈরি হল জনতা দলের সরকার।

এর পর প্রায় তিন দশক কেটে গিয়েছে। ফের কলকাতা দেখছে বিরোধী শক্তির সমাবেশ। জ্যোতি বসু, অটল বিহারী বাজপেয়ী, ভিপি সিংয়ের মতো বিরোধী নেতারা আজ প্রয়াত। কিন্তু তাঁদের সেই বিরোধী শক্তির পতাকাই আজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে। এর মধ্যে গঙ্গা দিয়ে বহু জল বয়ে গিয়েছে। সেদিনের কংগ্রেসের অবস্থানে আজ মোদীর নেতৃত্বে বিজেপি। আজ কংগ্রেস বিরোধী শক্তির সঙ্গী।” কোলকাতা টিভি নামে একটি পত্রিকায় উপরের লেখাগুলোর শেষে আশা প্রকাশ করা হয়েছে এবার গনতন্ত্র বাঁচাতে তখনকার চেয়ে বড় আকারে মোদী ও বিজেপি বিরোধী মোর্চা হতে যাচ্ছে!

- Advertisement -

আশি নব্বই দশকে যাদেরকে দেখে অনুপ্রাণিত হতাম তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিশ্বনাথ প্রতাপ সিং যিনি ভিপি সিং নামে পরিচিত ছিলেন, এরপর এলেন চন্দ্রশেখর। তারা কেউই এক বছরের বেশী টিকতে পারেন নাই। উপমহাদেশে এখন যাদের দেখলে রাজনীতি করতে আবারও ইচ্ছে করে, যাদের মত হতে ইচ্ছে করে, জীবন যাপন করতে ইচ্ছে করে তারা হলেন দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল আর পশ্চিম বাংলার মমতা ব্যানার্জি। আগে অবশ্য খুবই প্রিয় ছিলেন প্রয়াত জ্যোতি বসু। তবে কেউ চাইলেই একজন জ্যোতি বসু হওয়া সম্ভব নয়, যদিও কেজরিওয়াল বা মমতা ব্যানার্জির মত হবার চেষ্টা করা অসম্ভব কল্পনা নয়। আহা কি সাধারণ তাদের জীবন যাপন! পোষাক পরিচ্ছদ, আবাসস্হল এমনকি তাদের সরকারী অফিসের চেহারা দেখলে বুঝা যায় একটি দেশের সিংহভাগ অতি সাধারণ মানুষেরই তারা প্রতিনিধিত্ব করেন। ভীড়ের মধ্যে একজন কেজরিওয়াল কিংবা মমতাকে হঠাৎ দেখলে বুঝা মুশকিল হবে কে ভিআইপি, কে মুখ্যমন্ত্রী, আর কে সাধারণ জনতা!

কিন্তু এসব কল্পনার বাস্তবায়ন শুধুমাত্র একটি গনতান্ত্রিক দেশেই সম্ভব।

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles