6.9 C
Toronto
বৃহস্পতিবার, মে ২২, ২০২৫

বিএনপি নেতার মোবাইলে আ. লীগের সাবেক মেয়রের ‘কল’, কৌতূহল

বিএনপি নেতার মোবাইলে আ. লীগের সাবেক মেয়রের ‘কল’, কৌতূহল - the Bengali Times
সংগৃহীত ছবি

সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. ইমদাদ হোসেন চৌধুরী মঙ্গলবার (২০ মে) বিকেলে নগরীর বারুতখানা এলাকার একটি রেস্টুরেন্টে বিএনপির ও ব্যবসায়ী সমিতির নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করছিলেন। সন্ধ্যায় যখন মাগরিবের নামাজের বিরতি হয় তখন ইমদাদ হোসেন চৌধুরী তার ব্যক্তিগত মুঠোফোনটি টেবিলে রেখে নামাজে চলে যান। নামাজে থাকাকালে তার মুঠোফোনে রিং বেজে উঠলে ডিসপ্লে­তে দেখা যায় ‘আনোয়ারুজ্জামান ইউকে’। এসময় মিটিংয়ে থাকা কয়েকজন দৃশ্যটি মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় ধারণ করে ফেলেন। সেটি ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্নজনের মোবাইল ফোনের হোয়াটসাঅ্যাপে।

এ খবর জানাজানি হওয়ার পর বিএনপি রাজনীতিতে নানা কানাঘুষা ও কৌতূহল দেখা দেয়। রাজনৈতিক অঙ্গনে ছড়িয়ে পড়া কৌতূহল থেকে বিএনপির নেতাকর্মীরা বলছেন, আনোয়ারুজ্জামনের সঙ্গে বিএনপি নেতার যোগসাজশ রয়েছে। এ জন্য যুক্তরাজ্য সময় অনুযায়ী সকালবেলা বিএনপি নেতা ইমদাদকে ফোন করে দিনের খবর নিচ্ছিলেন। সামাজিক যোগযোগমাধ্যম ফেসবুকেও ছড়িয়েছে ‘আনোয়ারুজ্জামান ইউকে’ কল করার ছবি ও মেয়র থাকাকালে আনোয়ারুজ্জামানের সঙ্গে ঘনিষ্টতার বিভিন্ন ছবি। মোবাইল স্ক্রিনে কল আসার দৃশ্যের ছবি ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

- Advertisement -

তবে বিষয়টি তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র দাবি করেন মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী। রাতেই গণমাধ্যমকর্মীদের প্রেস ব্রিফিং করেন তিনি। সেখানে বলেন, ‘সভা শেষে নাশতা করে সভাস্থল ত্যাগ করি। এসময় একজন কল দিয়ে বলেন, আমার মোবাইলে নাকি আনোয়ারুজ্জামানের কল এসেছে।

এটা শোনার পর আমি কললিস্ট ঘেঁটে দেখি সন্ধ্যা ৬টা ৫১ মিনিটে ‘আনোয়ারুজ্জামান ইউকে’ লেখা নম্বর থেকে কল এসেছিল।’

ইমদাদ হোসেন প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘কল এসেছে দেখতে পেয়ে আমি আখতারের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাই। তখন আখতার জানান, তাঁর (আখতার) কাছে ফোন থাকাকালে মহানগর বিএনপির সিলেট বিমানবন্দর থানা শাখার সদস্যসচিব সৈয়দ সারোয়ার রেজা ও মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদীর ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) ইমনের সঙ্গে কিছুক্ষণের জন্য এক টেবিলে বসেছিলেন। ওই সময় ইমদাদের ফোনের ডিসপ্লের ছবি সরোয়ার-ইমন তুলেছেন। এর বেশি কিছু তিনি (আখতার) জানেন না।’

তবে বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর বিএনপির নেতাকর্মীদের তোলপাড় শুরু হয়। ইমদাদ ষড়যন্ত্রের শিকার দাবি করে কেউ কেউ পোস্ট করছেন। আবার কেউ কেউ বলছেন, আনোয়ারুজ্জামনের সঙ্গে বিএনপি নেতা ইমদাদের যোগসাজশ রয়েছে। এজন্য যুক্তরাজ্যের স্থানীয় সময় সকাল বেলা বিএনপি নেতা ইমদাদকে ফোন করে দিনের খবর নেন আনোয়ারুজ্জামান।

এসব বিষয়ে যোগাযোগ করলে মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘অনুষ্ঠানে আমার একজন সহকারী থাকেন ছবি-টবি তোলার জন্য। মোবাইলটি সে কারণে তার কাছেই ছিল। সেখানে বিএনপির বিমানবন্দর থানা শাখার সদস্যসচিব ও রেজাউল হাসান কয়েস লোদীর পিএস ইমন ছিল। তারা তাকে ডেকে নিয়ে যায়। তার পকেটে যেহেতু দুটি মোবাইল ফোন, পাওয়ার ব্যাংক ছিল-ওজন ভারী। সে পকেট থেকে সেগুলো বের করে টেবিলের ওপর রাখে। এর মধ্যে সরোয়ার ও ইমন সুকৌশলে আমার মোবাইলটি হাতে নিয়ে নেয়।’

এটা তাঁর বিরুদ্ধে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র দাবি করে তিনি বলেন, ‘ঘটনাস্থলের সিসি টিভি ফুটেজে দেখা গেছে-ইমন মোবাইলটি নিয়ে তার মধ্যে যেভাবেই হোক, কোনো ডিভাইসের মাধ্যমে হোক বা যে কোনো প্রযুক্তি ব্যবহার করেই হোক এটা করেছে। এরপর তার নিজের পকেট থেকে মোবাইল বের করে সেই মোবাইল দিয়ে ছবি উঠিয়েছে। যা ফুটেজে স্পষ্ট দেখা গেছে। এটা একটা পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র।’

এ ঘটনার জন্য সরাসরি মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদীকে দায়ি করে তিনি বলেন, ‘আমার ওয়ার্ডভিত্তিক, তৃণমূল পর্যায়ে, এমনকি সাধারণ মানুষের কাছে আমার যে গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হয়েছে তাতে ঈর্ষান্বিত হয়ে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি (রেজাউল হাসান কয়েস লোদী) এটা করেছেন।’

এ বিষয়ে জানতে মহানগর বিএনপি সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদীর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে তিনি অন্যান্য গণমাধ্যমে এ অভিযাগ অস্বীকার করে বলেছেন, ‘আমার কোনো পিএসই নাই। তাছাড়া এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না।’

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles