
শিগগিরই শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে ভারতে সফরে আসছেন জয়। যদিও নির্দিষ্ট তারিখ জানানো হয়নি, তবে সম্ভাব্য এই সাক্ষাৎ হতে যাচ্ছে নয়াদিল্লিতে। শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর এটি হবে মা-ছেলের প্রথম সরাসরি সাক্ষাৎ। সম্প্রতি ভারতের সংবাদমাধ্যম নিউজ এইটিন এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে দেশ ছাড়েন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাজনৈতিক চাপের মুখে তিনি আশ্রয় নেন প্রতিবেশী দেশ ভারতে এবং সেখানেই গত নয় মাস ধরে অবস্থান করছেন। এই দীর্ঘ সময়ে তিনি সরাসরি দেখা করতে পারেননি তার একমাত্র ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের সঙ্গে, যিনি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন।
তথ্য অনুযায়ী, সজীব ওয়াজেদ জয় ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন। বাংলাদেশি পাসপোর্ট বাতিলের পর তিনি মার্কিন পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন এবং তা অনুমোদিত হয়েছে।
কলকাতায় বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের প্রেস সচিব তারিক চয়নও তার একটি ফেসবুক পোস্টে জয়ের এই সফরের বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি উল্লেখ করেন, নয়াদিল্লিতে মায়ের সঙ্গে সাক্ষাতের পাশাপাশি কলকাতাও যেতে পারেন জয়।
এই সফরের সময়কালটি রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার সম্প্রতি আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। সরকারের দাবি, দলটির বিরুদ্ধে বিচারাধীন মামলার রায় না হওয়া পর্যন্ত তারা কোনো ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাতে পারবে না। ১০ মে সরকারের এক প্রজ্ঞাপনে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের সব অনলাইন ও অফলাইন কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রীদের একজন বলেন, “আমরা আশা করছি জয় শুধু মায়ের সঙ্গে দেখা করবেন না, নির্বাসিত নেতাদের সঙ্গেও আলোচনা করবেন। সরকার যেভাবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করেছে, তা সম্পূর্ণ অনৈতিক। এটি আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে দলটিকে প্রতিযোগিতার বাইরে রাখার কৌশল।”
প্রসঙ্গত, সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের গোপন দেশত্যাগের পর থেকেই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি জোরালো হয়। জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক জোটের লাগাতার আন্দোলনের মুখে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়।
এতদিন ভার্চুয়াল মাধ্যমে দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখলেও, সরকারের সর্বশেষ নিষেধাজ্ঞার পর শেখ হাসিনার রাজনৈতিক যোগাযোগ কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে। ঠিক এমন সময় জয়-এর সম্ভাব্য ভারত সফরের খবরে দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে নতুন করে আশা ও উৎসাহের সঞ্চার হয়েছে।