14.2 C
Toronto
শনিবার, মে ১৭, ২০২৫

সকল মায়েদের জন্যে

সকল মায়েদের জন্যে - the Bengali Times
শুভ মা দিবস পৃথিবীর সকল মায়েদের জন্য যারা তাদের সীমাহীন ধৈর্য ভালোবাসা এবং যত্ন দিয়ে আমাদেরকে বড়ো করেছেন এবং অব্যাহত রেখেছেন তাদের অবদান

শুভ মা দিবস, পৃথিবীর সকল মায়েদের জন্য যারা তাদের সীমাহীন ধৈর্য, ভালোবাসা এবং যত্ন দিয়ে আমাদেরকে বড়ো করেছেন এবং অব্যাহত রেখেছেন তাদের অবদান। এই মা-দিবস প্রথমে কে চালু করলেন, কেন করলেন এবং তার শেষ জীবনে কিভাবে কাটলো সে নিয়ে কিছু কথা।

আপনি আমার যত কাছের বা যত আপনই হন না কেন, আপনি যদি আপনার মায়ের প্রতি দায়িত্ব, কর্তব্য আন্তরিকভাবে না করে লোক দেখানো বা দায়সারা গোছের করেন তাহলে আপনার প্রতি আমার শ্রদ্ধাও দায়সারা গোছের হবে !!!

- Advertisement -

এই মা-দিবসের উদ্যোক্তা আমেরিকা প্রবাসী প্রয়াত Anna Maria Jarvis . ১৮৭৬ সালে তার মা Anna Reeves Jarvis একদিন তাকে মায়েদের অবদান স্মরণ করার জন্য একটি বিশেষ দিনের কথা ব্যাক্ত করেন। ঠিক তার মায়ের মৃত্যুর ৩ বছর পরে ১৯০৮ সালে Anna Maria Jarvis এর উদ্যোগে মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার আন্তর্জাতিক মাদিবস প্রথম উদযাপিত হয়। এর পর তৎকালীন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন ১৯১০ সালে  এই দিনটিকে পালনের জন্য একটি বিল পাশ করেন। সেই ১৯০৮ সন থেকে চলে আসছে এই মা-দিবস।

কিন্তু এই মা-দিবসের অতিমাত্রায় বাণিজিকরণের জন্য এক সময় প্রয়াত Anna Maria Jarvis এই দিবস বন্ধের জন্য আবেদন করনে কিন্তু সেটা আর হয়নি।  সেই থেকে আজ অবধি এই মা-দিবসকে ঘিরে অসংখ বেবসা হয়ে আসছে এবং এটি থেকে বেবসায়ীরা মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার বানিয়েছেন এবং বানাচ্ছেন, কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো যে এই দিনের উদ্যোক্তা প্রয়াত Anna Maria Jarvis এর শেষ জীবন কিন্তু অনেক কষ্টে কেটেছে। শোনা যায় তার মৃত্যুর আগে তাকে একটি Sanatoriumএ ভর্তি করা হয় যেখানে ক্রনিক অসুস্থ মানুষদের সেবা করা হয়, এবং সেখানকার বিল দেওয়ার মতো তার অর্থনৈতিক অবস্থা ছিল না, সে জন্য কিছু ফুলের দোনাকদার তার সেই বিল পরিশোধ করেছিলেন। এই হলো সংক্ষেপে মা-দিবসের ইতিহাস।

যাহোক, এই দিবস উপলক্ষে পৃথিবীর সব সন্তানদের প্রতি আমার অনুরোধ আপনারা আপনাদের মায়ের প্রতি লোক দেখানো বা দায়সারা গোছের দায়িত্ব/কর্তব্য না করে আন্তরিকভাবে তাদের যত্ন নিন। এবং শুধুমাত্র এই দিনটি না, মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা, যত্ন, দায়িত্ব, কর্তব্য হতে হবে প্রতি মুহূর্তের কর্মকান্ড।

আর যাদের মা আর বেঁচে নেই তারা তাদের জন্য তার ধর্ম/রীতি অনুযায়ী দোয়া তো করবেনই, কিন্তু এই দোয়া যথেষ্ট নয়, প্রতি মুহূর্ত চেষ্টা করবেন তাদের আদর্শ এবং তাদের শিক্ষাকে কাজে লাগানোর তাহলেই তবে তাদের জন্য সঠিক কিছু করা।

সবশেষে আমি গভীর শ্রদ্ধা এবং কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করছি আমার প্রয়াত মাকে যিনি সীমাহীন কষ্ট করে তার ৬ ছেলেমেয়েকে মানুষ করেছেন। তার কাছ থেকে অনেক শিক্ষার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ দুটি জিনিস আমার জীবনের গেম-চেঞ্জার  এবং যেগুলি আমি এখনো বহন করে চলছি।  এক হলো তার কাছ থেকে শেখা সর্বোচ Organizational Skills বা সাংগঠনিক দক্ষতা, দ্বিতীয় হলো স্বার্থহীন ভাবে অন্যের জন্য কিছু করা, যেমন উনি প্রতি শুক্রবারে ৫ জন ভিখারিকে দুপুরে লাঞ্চ খাওয়াতেন। কেন জানিনা, তবে ছোটবেলা থেকে দেখে এসেছি এবং উনি এটি জীবনে শেষ পর্যন্ত করে এসেছেন। বৰ্তমান আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতির কারণে উনার মতো প্রতি শুক্রবার ৫ জনকে লাঞ্চ করানোর সামর্থ না থাকলেও চেষ্টাকরে যাচ্ছি স্বার্থহীনভাবে অন্যের জন্য কিছু করা। আর যারা আমার কাছ থেকে কোনোভাবে কোনো উপকার পেয়ে থাকনে তাদেরকে আমি কখনো আমার জন্য দোয়া বা appreciate করতে বলি না, বলি আমার বাবা-মায়ের জন্য দোয়া করতে কারণ তাদের জন্যই ওলি আমি করছে।

এগুলি শুধুমাত্র আমার ব্যাক্তিগত জীবনেই না, বরং আমার প্রফেশনাল কাজেও প্রচন্ডপরিমানে সাহায্য করে যাচ্ছে।

আমার অফিসিয়াল কাজে আমার Organizational Skills বা সাংগঠনিক দক্ষতা অত্তান্ত সমাদৃত এবং এর শতভাগ কৃতিত্ব আমার “মা” .

যারা আমাকে কাছের থেকে দেখেছেন বা জানেন তারাও বিষয়টি লক্ষ্য করে থাকবেন।

আপনি চাইলে এক কথায় কমেন্টে লিখতে পারেন আপনি আপনার মায়ের কোন বিশেষ শিক্ষাটি এখনো বহন করে চলেছেন, আমরাও তাতে উপকৃত হতে পারি।

আল্লার কাছে সবার মায়ের আত্মার মাগফেরাত কেমন করে শেষ করছি।

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles