
বরগুনার আমতলীতে বিয়ের দাবিতে অনশনে বসা তরুণীর বিরুদ্ধে আত্মহত্যার হুমকির অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। রবিবার (৪ মে) কুয়েতপ্রবাসী প্রেমিক মহিউদ্দিন বিশ্বাসের বড় ভাই আল আমিন বিশ্বাস বাদী হয়ে আমতলী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি করেন। আদালতের বিচারক মো. ইমরান হাসান ইপ্তি মামলাটি আমলে নিয়ে আমতলী থানার ওসিকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।
জানা গেছে, আমতলী পৌর শহরের একে স্কুল সড়কের এমএ (ইসলামি ইতিহাস) পড়ুয়া ওই ছাত্রীর সঙ্গে স্কুলে পড়ার সময়েই মহিউদ্দিনের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মহিউদ্দিন দশম শ্রেণি এবং প্রেমিকা একই বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকে তাদের প্রেমের সম্পর্ক। গত ১৬ বছর ধরে তারা প্রেম করে আসছেন। এর জেরে মহিউদ্দিন ওই ছাত্রীর সঙ্গে বেশ কয়েকবার শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন ওই ছাত্রী।
এরই মধ্যে ২০১৭ সালে কুয়েত চলে যান মহিউদ্দিন। কুয়েত যাওয়ার পর বেশ কয়েকবার ওই ছাত্রীর পরিবার তাকে বিয়ে দিতে উদ্যোগ নেয়। কিন্তু মহিউদ্দিন সেইসব বিয়ে পণ্ড করে দেন। ৮ বছর পর গত ৪ মার্চ কুয়েত থেকে বাড়িতে আসেন মহিউদ্দিন। এরপর দুজনের মধ্যে বেশ ভালো সম্পর্ক চলে আসছিল। তাদের প্রেমের সম্পর্ক দুই পরিবারও বেশ ভালোভাবেই জানেন।
এরই মধ্যে গত শুক্রবার সকালে মহিউদ্দিন তার প্রেমিকাকে মোবাইলে জানিয়ে দেন যে, তাকে বিয়ে করা তার পক্ষে সম্ভব না। এমন কথায় ওই দিন রাত ৯টা থেকে ওই কলেজছাত্রী মহিউদ্দিনের বাড়িতে এসে বিয়ের দাবিতে অনশনে বসেন।
শনিবার রাতে মহিউদ্দিনের মা নাসিমা বেগম ওই কলেজছাত্রীকে তার ছেলের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ঘরে তোলেন। এর একদিন পরই (রোববার) মহিউদ্দিনের বড় ভাই আল আমিন বিশ্বাস বাদী হয়ে ওই ছাত্রীকে আসামি করে আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মহত্যার হুমকির অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেছেন।
ওই ছাত্রী বলেন, আমার জীবন থেকে মহিউদ্দিন ১৬টি বছর নষ্ট করে দিয়েছে। আমার পরিবার বেশ কয়েকবার বিয়ের উদ্যোগ নিয়েছে কিন্তু মহিউদ্দিন তা ভেঙে দিয়েছে। আমার সঙ্গে মহিউদ্দিন শারীরিক সম্পর্ক করেছে। এত কিছুর পর জানতে পারলাম আমার বিরুদ্ধে মহিউদ্দিনের বড় ভাই আল আমিন বাদী হয়ে মামলা করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে প্রবাসী মহিউদ্দিন বিশ্বাসের মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।
মামলার বাদী আল আমিন বিশ্বাস বলেন, আমার ভাই মহিউদ্দিনের সঙ্গে ওই মেয়ের বিয়ে দেওয়ার কথাবার্তা চলছে। আমি কেন তার বিরুদ্ধে মামলা দেবো?
তবে আমতলী আদালতে আপনার স্বাক্ষর দিয়ে কে মামলা করেছে? এমন প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে তিনি মোবাইলের কল কেটে দেন।
আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বাদী পক্ষের আইনজীবী মো. রেজাউল করিম (রেজা) বলেন, ওই ছাত্রীকে আসামি করে কুয়েত প্রবাসী মহিউদ্দিন বিশ্বাসের বড় ভাই আল আমিন বিশ্বাস বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।
আমতলী থানার ওসি মো. আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, এ বিষয়ে আদালতের কোনো নথিপত্র পাইনি। আদালতের আদেশ মতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।