
উইং কমান্ডার পৃথ্বী সিংহ চৌহান। বিপিন রাওয়াতের দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানের চালক ছিলেন তিনি। রাওয়াতের মৃত্যুর তদন্তে নেমে দুর্ঘটনার কারণ জানতে চলছে তদন্ত। জানা গিয়েছে দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানের চালক পৃথ্বী ছিলেন ভারতীয় বিমানবাহিনীর সেরা যুদ্ধবিমান চালকদের অন্যতম। এ ব্যাপারে বহুবার পৃথ্বীর প্রশংসা করেছেন তার ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তারা। বুধবারের বিমান দুর্ঘটনায় রাওয়াতসহ সেনাবাহিনীর ১২ জনের সঙ্গে মৃত্যু হয়েছে পৃথ্বীরও।
আগরার বাসিন্দা পৃথ্বী ভারতীয় বিমানবাহিনীতে যোগ দেন ২০০০ সালে। উইং কমান্ডার হিসেবে তার পদোন্নতি হয় ২০১৫ সালে।
চার বোনের একমাত্র ভাই পৃথ্বী। পরিবারের আদরের সন্তান ছিলেন তিনি। পৃথ্বীকে বাড়ির কেউ কারও সঙ্গে চেঁচিয়ে কথা বলতে শোনেননি কখনও। তবে যুদ্ধক্ষেত্রে এই পৃথ্বীই ছিলেন আগ্রাসী। সাহসী যোদ্ধা।
সুদান থেকে বিশেষ প্রশিক্ষণ নিয়ে আসার পর তার দক্ষতা আরও বেড়েছিল বলে জানিয়েছিলেন পৃথ্বীর ঊর্ধ্বতনরাই। সেই পৃথ্বী চালকের আসনে থাকা সত্ত্বেও দুর্ঘটনা কীভাবে ঘটল, তা ভেবে বিস্মিত হচ্ছেন তার সহকর্মীরা।
বুধবার তামিলনাড়ুর কুন্নুরে যখন কপ্টারটি ভেঙে পড়ে, তার ১০ মিনিটের মধ্যেই রাওয়াতদের গন্তব্যে পৌঁছনোর কথা ছিল। সুলুরের বিমানঘাঁটি থেকে ওয়েলিংটনে নিজের কলেজের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন সস্ত্রীক রাওয়াত। ঠিক ১০ কিলোমিটার আগে ঘটে দুর্ঘটনা।
তখন দুপুর ১২টা ২০ মিনিট। পৃথ্বীর মা সুশীলা চৌহান জানিয়েছেন, এর প্রায় এক ঘণ্টা পর দুপুরের খাওয়া সেরে ঘুমতে যান তিনি। তার আগে টিভিতে খবরও দেখেন। কিন্তু তখনও কোথাও দুর্ঘটনার খবর দেখানো হয়নি।
টিভি চালিয়ে রেখেই ঘুমিয়ে পড়েছিলেন সুশীলা। ছেলের মৃত্যু সংবাদ যখন টিভিতে দেখানো হয় তখনও তিনি ঘুমোচ্ছেন। পৃথ্বীর বাবা ফোন করে দুর্ঘটনার কথা জানান তাকে। তারপর থেকেই পৃথ্বীর সঙ্গে বলা শেষ কথাগুলো বার বার মনে করছেন সুশীলা।
বুধবারের দুর্ঘটনার আগে মঙ্গলবার রাতে বাড়িতে শেষ ফোনটি মা সুশীলাকেই করেছিলেন পৃথ্বী। এ সময় মায়ের সাথে পারিবারিক অনেক কথাই হয় তার।বারবার সেই কথাগুলোই মনে করছেন মা।
পৃথ্বীর বয়স চল্লিশের কোঠায়। বিয়ে করেন ২০০৭ সালে। ১২ বছরের একটি মেয়েও রয়েছে তার। পৃথ্বীর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে তার পরিবারে।
বুধবার ভারতের তামিলনাড়ুতে সামরিক হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে বিপিন রাওয়াত সস্ত্রীক নিহত হন।
সূত্র: আনন্দবাজার