7 C
Toronto
রবিবার, মে ১১, ২০২৫

সমন্বয়কদের গোপন আস্তানায় নিতে চেয়েছিলেন হারুন

সমন্বয়কদের গোপন আস্তানায় নিতে চেয়েছিলেন হারুন - the Bengali Times
মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ ফাইল ছবি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের গ্রেপ্তার করে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ। ডিবি হেফাজতে না রেখে গোপন আস্তানায় (সেফ হাউস) জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ভিপি নূর ও জামায়াতের সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক রয়েছে বলে প্রচার করতে চেয়েছিলেন। সম্প্রতি ফাঁস হওয়া গোয়েন্দা সংস্থার একটি নথি থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন সমন্বয়ককে তুলে এনে ডিবি কার্যালয়ে ঢোকানোর পর থেকে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া নিয়ে সরকারসংশ্লিষ্ট একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গে আলোচনা করেন ডিএমপির তৎকালীন ডিবির প্রধান হারুন অর রশীদ। গত ২৭ জুলাই এ নিয়ে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ারের সঙ্গে কথা হয় তাঁর। হারুন তাঁকে বলেন, তিন সমন্বয়কের নিরাপত্তা দেওয়া ও তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে বলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তাঁদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে পাঁচ দিনের রিমান্ডে রাখতে পারলে ভালো হয়। এ বিষয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে সচিবকে কথা বলতে অনুরোধ করেন হারুন।

- Advertisement -

আইন ও বিচার বিভাগের সচিব তখন গ্রেপ্তার ও রিমান্ডে আনা নিয়ে হারুনের ব্যক্তিগত মতামত জানতে চান। হারুন তখন সরকারের গুরুত্বপূর্ণ এক মন্ত্রীর কথা বলে জানান, ডিবি অফিসে না রেখে কোনো এক বাসায় তাঁদের আটকে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ভালো হয়।

হারুনের এমন বক্তব্যের সঙ্গে একমত হয়েছিলেন আইনসচিব গোলাম সারওয়ার। হারুন তাঁকে আশ্বস্ত করে বলেন, এসবির একটা সেফ হাউস আছে। আপনাদের সবার অনুমতি মিললে গ্রেপ্তার না দেখিয়ে সেখানে ডিবি নিয়ন্ত্রণে তাঁদের রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা যেতে পারে। সচিব অবশ্য গ্রেপ্তার না দেখালে রিমান্ড মিলবে না বলে মতামত দেন। এসব কথার এক দিন পর থেকেই পরিস্থিতি পাল্টে যেতে থাকে।

জুলাইয়ের প্রথম থেকে শুরু কোটা আন্দোলন ধাপে ধাপে প্রাণঘাতী সহিংসতায় রূপ নিলে কারফিউ জারি এবং সেনা নামিয়ে নিয়ন্ত্রণ করার পর ২৬ জুলাই ঢাকার গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন সমন্বয়ক মো. নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ ও আবু বাকের মজুমদারকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

পরদিন আরও দুই সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহকেও ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়। এরপর ২৮ জুলাই সমন্বয়ক নুসরাত তাবাসসুমকে ভোররাতে জোর করে ডিবি অফিসে নিয়ে আসা হয় বলে অভিযোগ করা হয়।

তবে তখন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ বলেছিলেন, নিরাপত্তার স্বার্থে ও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁদের হেফাজতে নিয়েছে ডিবি।

নুসরাতকে যেদিন নিয়ে যাওয়া হয়, ওই দিনই ডিবি কার্যালয় থেকে এক ভিডিও বার্তায় সব কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছিলেন ছয় সমন্বয়ক। ওই দিন রাতে ডিবি কর্মকর্তা হারুন তাঁর ফেসবুকে ছয় সমন্বয়ককে নিয়ে টেবিলে খাবার খাওয়ার ভিডিও প্রকাশ করেন। পরে বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হলে হারুন দাবি করেন, ছয় সমন্বয়কের কাছ থেকে জোর করে বিবৃতি নেওয়া হয়নি।

সমালোচনার মুখে ৩১ জুলাই ডিএমপি সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক আদেশে হারুনকে ডিবি থেকে সরিয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম) হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles