11.1 C
Toronto
শুক্রবার, মে ৩, ২০২৪

বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে কলকাতার বস্তিতে থাকতেন আরাভ খান

 

বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে কলকাতার বস্তিতে থাকতেন আরাভ খান
কলকাতার পাশে নরেন্দ্রপুরের বস্তি এলাকায় এই বাড়িটিতে থাকতেন দুবাইয়ের স্বর্ণ ব্যবসায়ী আরাভ খান

দুবাইয়ের বুর্জ খলিফায় কোটি টাকার ফ্ল্যাট কেনার আগে কলকাতায় বস্তিতে থাকতেন রবিউল ইসলাম ওরফে আপন ওরফে সোহাগ ওরফে হৃদয় ওরফে আলোচিত দুবাইয়ের স্বর্ণ ব্যবসায়ী আরাভ খান। বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) পরিদর্শক মো. মামুন এমরান খান হত্যা মামলার অন্যতম অভিযুক্ত আরাভ খান। মামলায় আসামি হওয়ার পরেই ভারতে আত্মগোপনে চলে যান তিনি। থাকতেন কলকাতার পাশে নরেন্দ্রপুরের বস্তি এলাকায়।

- Advertisement -

অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে গা ঢাকা দিয়েছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার অধীন রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার ফরতাবাদ এলাকায়। আসল পরিচয় গোপন করে ফরতাবাদ এলাকার উদয় সংঘ ক্লাবের পাশেই স্থানীয় বাসিন্দা জাকির খানের বাসার দোতলায় ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতেন আরাভ ও তার স্ত্রী সাজেমা নাসরিন। এরপর জাকির খান ও তার স্ত্রী রেহানা বিবি খানে সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলেন তারা। আর সেই সম্পর্ককে কাজে লাগিয়েই জাকির ও রেহানার ভারতীয় আধার কার্ড সংগ্রহ করে তাদের উভয়কেই কথিত বাবা-মার পরিচয় দিয়ে আরাভ ভুয়া ভারতীয় পাসপোর্ট তৈরি করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। একইভাবে আরাভারে স্ত্রীরও পাসপোর্ট তৈরি করা হয়।

পাসপোর্টে তাদের উভয়ের ঠিকানা হিসেবে উল্লেখ রয়েছে কন্দর্পপুর, উদয় সংঘ ক্লাব, রাজপুর-সোনারপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, কলকাতা-৭০০০৮৪।

পাসপোর্টের ঠিকানা ধরে কলকাতার ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাস (ইএম বাইপাস) ধরে সোজা ফরতাবাদ মোড় থেকে বাম দিকে ৮০০ মিটার ভেতরে ঢুকলেই কন্দর্পপুর উদয় সংঘ ক্লাব। ওই এলাকায় পৌঁছতেই সেখানে জাকির খানের নাম বলতেই এক নারী এসে তার বাড়ি দেখিয়ে দেন। বোঝাই গেল, ওই এলাকায় যথেষ্ট পরিচিত নাম জাকির খান। এলাকায় পরোপকারী এবং ভদ্রলোক হিসেবেই পরিচিত। যদিও বছর দুয়েক আগে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান জাকির। তার বাড়িতে ঢুকতেই দেখা হয় তার স্ত্রী রেহানা বিবি খানের সঙ্গে। প্রথম দিকে মুখ খোলার ব্যাপারে কিছুটা ইতস্তত বোধ করলেও সাংবাদিক পরিচয় দিলে কিছুটা স্বাভাবিক হন রেহানা। মোবাইলে আরাভের ছবি দেখতেই রেহানা বলেন, আজকেই আমি ইউটিউবে আরাভ খানের বিষয়টি জানলাম।

রেহানার দাবি, পাঁচ বছর আগে আমাদের বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে এসেছিলেন আরাভ। আমাদের বাসায় এক বছর ভাড়া ছিল, এরপর চলে যান।

রেহানার আরও বলেন, আমাদের আধার কার্ড নিয়ে আরাভ কী একটা ডকুমেন্ট তৈরি করবে বলেছিলেন। সেই কারণে আমি ও আমার স্বামী উভয়ই আরাভকে আমাদের আধার কার্ড দিয়ে দেই।

ওই আধার কার্ড দিয়েই নিজের স্ত্রীর ভারতীয় পাসপোর্ট তৈরি করেছিল আরাভ খান। যদিও তাকে কোনোদিনই সন্দেহ হয়নি বলেও জানান রেহানা।

আরাভের কথিত মা হিসেবে পরিচয় দেওয়া রেহানা বলেন, মালিকের সঙ্গে একজন ভাড়াটিয়ার যে সম্পর্ক থাকে আরাভ খানের সঙ্গে আমাদেরও সেই সম্পর্ক ছিল। তবে এলাকার লোকের সঙ্গে খুব একটা মেলামেশা করতেন না আরাভ। বাইরেও খুব একটা বের হতো না।

এদিকে, এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রত্যেকেই ব্যক্তিগতভাবে আরাভকে চিনতেন। বিএমডব্লিউ বাইকে এলাকায় স্টান্ট করতেই দেখা যেত তাকে। আরাভ নিজেকে একজন ফিল্ম আর্টিস্ট বলে পরিচয় দিতেন।

জানা গেছে, ২০১৮ সালে পুলিশ কর্মকর্তা মামুন ইমরান খানকে হত্যার পর পেট্রল ঢেলে লাশ পুড়িয়ে গাজীপুরে এক জঙ্গলের ভেতর ফেলে দেয় দুর্বৃত্তরা। ওই মামলার মূল অভিযুক্ত ছিলেন আরাভ খান। ওই সময় থেকেই পলাতক ছিলেন আরাভ। গা ঢাকা দিয়েছিলেন ভারতে। পরে ভুয়া পাসপোর্ট বানিয়ে দুবাইয়ে পালিয়ে যান আরাভ। এরপর থেকে গত কয়েক বছর ধরে দুবাইতেই অবস্থান করছেন আরাভ খান। দেশটির গোল্ড বাজারে আরাভ জুয়েলারি শোরুমের মালিক তিনি।

সূত্র : সমকাল

- Advertisement -

Related Articles

Latest Articles