
ছবির পোস্টার নায়ক-নায়িকা ফেসবুকে শেয়ার না করায় তাদের ছাড়াই ‘মিট দ্য প্রেস’ এর আয়োজন করেছিলেন ‘আশীর্বাদ’ ছবির সহ-প্রযোজক জেনিফার ফেরদৌস। ওই মিট দ্য প্রেসে নায়ক-নায়িকার শুটিংকালীন অপেশাদার আচরণ নিয়েও মুখ খুলেন তিনি। এরপরই পাল্টা পাল্টি অভিযোগ শুরু হয় নায়ক-নায়িকা ও প্রযোজকের মধ্যে।
এর মধ্যেই গতকাল সহ-প্রযোজক জেনিফারের সকল অভিযোগ খণ্ডন করতে ‘আশীর্বাদ’ এর নায়ক জিয়াউল রোশান ও চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে মাহিয়া অভিযোগ করেন, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৬০ লাখ টাকা সরকারি অনুদান পাওয়া ছবিটির নির্মাণে ২৫ লাখের বেশি খরচ করেনি, প্রযোজক নিজের বাসা থেকে শাড়ি এনে তাকে পরিয়েছেন। শুটিংয়ে শিল্পী ও কলাকুশলীদের খাবারও ঠিক মতো খেতে দেননি। পারিশ্রমিক কমিয়ে ছবিটি করলেও নূন্যতম সম্মান দেননি প্রযোজক। অনেকটা গোজামিল দিয়েই ছবিটির শুটিং শেষ করে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে। মাহির এসব অভিযোগের পক্ষে সহমত পোষণ করেন ছবিটির নির্মাতা মোস্তাফিজুর রহমান মানিক। একসঙ্গে নানা অভিযোগের কথা জানান নায়ক রোশানও।
সংবাদ সম্মেলনে তাদের সেইসব অভিযোগ নিয়ে কথা বলা হয সহ-প্রযোজক জেনিফার ফেরদৌসের সঙ্গে। প্রথমেই সিনেমায় ২৫ লাখ টাকার বেশি খরচ না করার অভিযোগ নিয়ে জানতে চাইলে সমকালকে তিনি বলেন, মাহিয়া মাহিরা এই ছবিতে পারিশ্রমিক নিয়ে কাজ করেছে। আমি সিনেমায় ২৫ লাখ না ৬০ লাখ না ৮০ লাখ টাকা ছবিতে খরচ করেছি সেটা জানতে চাইবে তথ্য মন্ত্রণালয়। যে মন্ত্রণালয় আমাকে অনুদানটা দিয়েছে। আমি ছবিতে কত টাকা খরচ করেছি ,কোথায় কিভাবে খরচ হয়েছে তার সবই মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। সবাই জানেন একটা অনুদানের ছবির টাকা কিস্তিতে দেওয়া হয়। আমার হিসেব নিকেশ যদি ঠিক না থাকত তাহলে মন্ত্রণালয় আমাকে টাকাটা দিত না।
অনুদানের টাকা ঠিকঠক খাতে ব্যয় হচ্ছে কিনা তা দেখতে তিন সদস্যের একটা কমিটিও আছে উল্লেখ করে জেনিফার বলেন,আমরা যে বছর থেকে অনুদান পাই সে বছর থেকেই এর টাকা ঠিকঠাক খাতে ব্যয় হচ্ছে কিনা তা দেখার জন্য তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটিই বিষয়টি দেখে। আমি আমার ছবিতে যতটা টাকা খরচ করেছি তার একটা পুরো লিস্ট ওই কমিটিতে জমা আছে। তারাই সেটা দেখছে।
গতকালের সংবাদ সম্মেলনে নায়ক-নায়িকা ও প্রযোজক টাকা খরচ না করার যে অভিযোগ আনছেন জেনিফার সেটাকে প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে অভিযোগ করছেন বলে মন্তব্য করেন।
নিজের ছবিকে তারা হিংসে করবে কেনো? এমন প্রশ্ন রাখলে এই সহ-প্রযোজক জানান, ‘পরিচালক মানিক ও নায়িকা মাহিয়া মাহির মধ্যে কোনো ইন্টিমিসি আছে। শুটিংয়ে সময়ে তাদের মধ্যে অনেক কিছুই আমার চোখে পড়েছে। তারা এখন চাচ্ছেন আশীর্বাদ ছবি আগে না এসে তাদের আরেকটি ছবি সেটি মুক্তি পাক। সম্প্রতি তাদের ফাঁস হওয়া একটি চ্যাটিংয়ে তো সেটা ক্লিয়ার।’
সংবাদ সম্মেলেন মোস্তাফিজু রহমান মানিকও জানিয়েছেন তিনি ছবিটি ভালোভাবে বানাতে পারেননি। সেটা নানা কারণে। অন্যান্য ছবির বেলায় পারিশ্রমিক যা নেন তার অর্ধেকের কম নিয়েছেন। অথচ ছবিটি ভালো হয়নি। এই ছবি যারা দেখবেন তারা পরিাচলককে বকা দেবেন।
মাহিয়া মাহি ও পরিচালক মানিকের আরও অনেক অজানা বিষয় জানাতে ও অভিযোগের বিষয়গুলো ক্লিয়ার করতে আবার সংবাদ সম্মেলন করবেন বলে জানালেন প্রযোজক জেনিফার। ওই সংবাদ সম্মেলনে মাহিয়া মাহি ও পরিচালকের কাপড় (সব বলে দেবেন ) খুলে যাবে বলেও মন্তব্য করেন।