
অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পরেও জোর করে দেশে নিয়ে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টায় থানায় নিজের পরিবারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন স্পেনের বার্সেলোনায় বসবাসকারী এক বাংলাদেশি কিশোরী। স্থানীয় সময় গত বৃহস্পতিবার রাতে কিশোরী থানায় গিয়ে পুলিশের কাছে সহযোগিতা চায় এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগপত্রে কিশোরী জানায়, পরিবার জোরপূর্বক বাংলাদেশে নিয়ে এমন এক পুরুষের সঙ্গে তার বিয়ে দিতে চায়, যাকে সে চেনে না। বর্তমানে ওই কিশোরী দেশটির জেনেরিলাদ দে কাতালোনিয়ার একটি সুরক্ষা ফ্ল্যাটে পুলিশের তদারকিতে আছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
তবে থানা থেকে কিশোরী ও তার পরিবারের পরিচয় গোপন রাখা হয়েছে। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করতে এরই মধ্যে মাঠে নেমেছে এবং কিশোরীর মা-বাবাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে বলে জানা গেছে।
পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুসারে, ২০০৯ সাল থেকে প্রায় ২০০ জন বিদেশি মেয়ে থানায় যোগাযোগ করছে তাদের জোরপূর্বক বিয়ে দেওয়ার ঘটনা নিয়ে।
পুলিশ জানায়, এটি একটি জটিল পরিস্থিতি। কারণ বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ভুক্তভোগীরা অপ্রাপ্তবয়স্ক এবং তারা অভিযোগ করার সাহস পান না। স্পেনের মধ্যে কাতালোনিয়া এমন জোরপূর্বক বিয়ে দেওয়ার ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটছে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ।
গত ২০১৫ সাল থেকে স্পেন জুড়ে এমন ২৭টি অভিযোগ নথিভুক্ত করেছে স্পেনের পুলিশ, যার মধ্যে ১৪টি ঘটেছে কাতালোনিয়ায়। স্পেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, এমন ঘটনা প্রতিরোধ করার জন্যে ২০২০ সাল থেকে জেনেরিদাদের একটি নির্দিষ্ট প্রটোকল রয়েছে।
স্পেনের দণ্ডবিধি অনুসারে, এমন জোরপূর্বক বিয়ে দিতে বাধ্য করা ব্যক্তির বিরুদ্ধে অপরাদের ধরন অনুসারে ৬ মাস থেকে ৩ বছরের জেল অথবা জরিমানাসহ ছয় মাস থেকে ২৪ মাসসহ জেল হতে পারে। আর এই ক্ষেত্রে বাদী যদি অপ্রাপ্তবয়স্ক হয় সে ক্ষেত্রে দণ্ডবিধিতে অন্তর্ভুক্ত ব্যক্তির সাজা আরও বাড়তে পারে।
উল্লেখ্য, স্পেনে সাধারণত মরক্কো, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, নাইজেরিয়া, সেনেগাল ও রোমানিয়ান দেশের পরিবারগুলোর মধ্যে এই জোরপূর্বক বিয়ে দেওয়ার ঘটনাগুলো বেশি ঘটে।