সম্প্রতি অত্যন্ত গোপনে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে গত ৮ই মে দিবাগত রাত ৩ টা ৫ মিনিটে দেশ ছাড়েন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।
তার দেশ ছাড়ার পর বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। মামলা থাকার পরও কীভাবে কাদের সহায়তায় আবদুল হামিদ দেশ ছেড়েছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয়।
এবার বিষয়টি নিয়ে মুখ খুললেন আবদুল হামিদের ছোট ছেলে রিয়াদ আহমেদ তুষার। দেশ ছাড়ার সময় সাথে ছিলেন তার শ্যালক ডা. নওশাদ খান এবং ছোট ছেলে রিয়াদ আহমেদ।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সকাল ১০টা ১৮ মিনিটে তুষার তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি থেকে এক পোস্টে আবদুল হামিদ কোন পরিস্থিতিতে দেশ ছেড়েছেন তা পরিষ্কার করেন। পোস্টে আবদুল হামিদ হুইলচেয়ারে বসে রয়েছেন এমন একটি ছবিও জুড়ে দিয়েছেন তিনি।
ফেসবুক পোস্টে তুষার লিখেছেন, ‘এরকম একটা পোস্ট দিবার জন্য দুঃখিত। ৮২-৮৩ বৎসরের একজন বয়স্ক লোক যিনি কি না অসুস্থতার কারণে এখন ২ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকতে পারছেন না। ২ ঘণ্টা বসে থাকতে পারছেন না, বাধ্য হয়ে বিছানায় শুয়ে পড়েন। ওজন কমতে কমতে ৫৪ কেজিতে দাঁড়িয়েছে। যে কারণে নিজের কোনো প্যান্ট পরতে পারছেন না। বাধ্য হয়েই লুঙ্গি পরে থাকতে হচ্ছে। যাকে বেটার চিকিৎসার জন্য ডাক্তারগণ বোর্ড করে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন বিদেশে চিকিৎসা করানোর জন্য। যিনি রাষ্ট্রপতি হিসেবে মেয়াদ শেষ হবার পর প্রকাশ্যে বলেছেন যে, উনি আর পলিটিকসের সঙ্গে জড়িত হবেন না। তারপর পলিটিকসের সঙ্গে কোনোভাবে জড়িত হননি। আবার, যেখানে শত শত লোক বাংলাদেশ থেকে চিকিৎসা করাতে নিয়মিত থাইল্যান্ড যাচ্ছে, সেখানে একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে থাইল্যান্ডে চিকিৎসার জন্য তিনি আসতেই পারেন।’
তিনি আরও লেখেন, ‘অথচ এ ঘটনাটাকেই এত বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে যা কল্পনাতীত। বানিয়ে মিথ্যা বলতে পারাটাকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছে কিছু লোক। সকলেই দোয়া করবেন যেন তিনি সুস্থ হয়ে তাড়াতাড়ি দেশে ফিরে আসতে পারেন, ইনশাআল্লাহ।’
‘আমি যদি মিথ্যা বলে থাকি তবে আল্লাহর লানত আমার ওপর পড়ুক। আর যারা মিথ্যা প্রচার করছে, তারা যদি তাদের কৃতকর্মের জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে তওবা না করে, তবে তাদের সবার ওপর আল্লাহর লানত পড়ুক। আমিন ইয়া রাব্বুল আলামিন’, ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করেন রিয়াদ আহমেদ তুষার।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পোস্টটিতে ২ হাজার ৬শ’য়েরও বেশি মানুষ মন্তব্য করেছেন। পোস্টটি শেয়ার করেছেন ১ হাজার ৪শ’য়েরও বেশি মানুষ। এছাড়া লেখাটি কপি করে নিজেদের ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করেছেন বহু মানুষ।
উল্লেখ্য, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ছাত্র-জনতার উপর হামলা ও বিস্ফোরক আইনে গত ১৪ জানুয়ারি কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় বিএনপি কর্মীর দায়ের করা একটি মামলায় আসামীর তালিকায় নাম রয়েছে সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের। বর্তমানে মামলাটি তদন্ত করছে পুলিশ। আবদুল হামিদ ৮ মে দেশ ছাড়ার পর ওই মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে বরখাস্ত এবং জেলার পুলিশ সুপারকে প্রত্যাহার করা হয়।
সূত্র : বিডি২৪লাইভ