
২০২৪ সালের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় কুমিল্লা জুড়ে ছাত্র ও সাধারণ মানুষের ওপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্বিচার গুলি চালানোর ঘটনায় যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল, তাদের অন্যতম ছিলেন কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র তাহসিন বাহার সূচনা। ঘটনার পর থেকেই তিনি নিখোঁজ ছিলেন। এতদিন ধারণা করা হচ্ছিল, সূচনা ও তার বাবা কুমিল্লার সাবেক প্রভাবশালী সংসদ সদস্য বাহাউদ্দিন বাহার ভারতে পালিয়ে রয়েছেন। তবে সম্প্রতি দেশের একটি গণমাধ্যম জানিয়েছে, বর্তমানে তাহসিন বাহার সূচনা অবস্থান করছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই শহরে।
গণমাধ্যমটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, কুমিল্লায় আন্দোলনের প্রেক্ষিতে সরকারবিরোধী ছাত্র-জনতার ওপর দমন-পীড়ন শুরু হলে সূচনা ২০২৪ সালের ২৯ আগস্ট রাতে কুমিল্লার সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে পালিয়ে যান। কলকাতায় এক রাজনৈতিক নেতার আশ্রয়ে কিছুদিন অবস্থান করার পর তিনি দুবাইয়ে পাড়ি জমান।
বিদেশে অবস্থান করলেও সূচনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় ছিলেন। ফেসবুকে তাকে বেশ কয়েকবার সরকারপন্থী পোস্ট দিতে দেখা গেছে, যেখানে তিনি ফ্যাসিস্ট শাসনব্যবস্থাকে সমর্থন জানিয়ে বিরোধীদের উদ্দেশে আক্রমণাত্মক ও আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
একাধিক সূত্র জানিয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম নেত্রী জান্নাতুল জান্নাতের সঙ্গে সূচনার ঘনিষ্ঠ এক বান্ধবীর বাকবিতণ্ডার জেরে সূচনা ওই নেত্রীকে সামাজিক মাধ্যমে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং হুমকি দেন।
জান্নাতুল জান্নাতের ভাষ্য মতে, সূচনার একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ রয়েছে, যেখানে তিনি ও তার কয়েকজন ঘনিষ্ঠ বান্ধবী মিলে সরকারের পক্ষে প্রচারণা চালান এবং বিরোধী মতাবলম্বীদের বিরুদ্ধে নানা কার্যকলাপে জড়িত থাকেন।
উল্লেখ্য, সাবেক সংসদ সদস্য বাহাউদ্দিন বাহার কুমিল্লায় প্রভাবশালী এক রাজনৈতিক চরিত্র হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তার প্রভাবেই তাহসিন বাহার সূচনা কুমিল্লা সিটি আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ পদ পান এবং পরে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন অর্জন করেন। নির্বাচনে ভোট কারচুপির অভিযোগে তিনি মেয়র নির্বাচিত হন বলে বিরোধীরা অভিযোগ করেন। এরপর বাবা-মেয়ে মিলে কুমিল্লায় একটি ভয়ভীতির পরিবেশ তৈরি করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।